Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পি কে হালদারকে মার্চের মধ্যে ফেরত দেবে ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:২৬ পিএম | আপডেট : ৯:০০ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আগামী বছর মার্চের মধ্যে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থ পাচারকারী এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ডিরেক্টর পি কে হালদার ও তার ৫ সহযোগীকে বাংলাদেশে ফেরত দেবে ভারত। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) নবমবারের মতো কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতের সিবিআই স্পেশাল কোর্টে অভিযুক্তদের তোলা হয় এসময় ইডির গোপন সূত্র চ্যানেল ২৪-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।


এদিন স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে কলকাতার নগর দায়রা আদালতে (ব্যাঙ্কশাল) তোলা হয় বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশ ভিত্তিক এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকে। উভয়পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে সিবিআই স্পেশাল কোর্ট-৪ এর বিচারক বিদ্যুৎ কুমার রায় ৫৬ দিন পর আগামী ১৭ নভেম্বর অভিযুক্তদের ফের আদালতে হাজিরা দেয়ার নির্দেশ দেন।


ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, অভিযুক্ত প্রত্যেককেই আগামী ১৭ নভেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে এবং ততদিন পর্যন্ত তারা কারাগারেই থাকবেন এবং প্রয়োজনে ইডির কর্মকর্তারা কারাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন। তবে কারাগারে থাকা অবস্থায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বা নতুন কোনো সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়নি বলেও এদিন জানান ইডির আইনজীবী। এই মুহূর্তে অভিযুক্ত পিকে হালদারসহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে। অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে।


এর আগে গত ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। ১০০ পাতার ওই চার্জশিটে পিকে হালদারসহ ছয় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রয়েছে। এক্ষেত্রে কেবল ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-২০০২’ মামলায় ওই ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়েছে। চার্জশিটে নাম রয়েছে তাদের দুটি সংস্থার নামও। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর তরফে এদিন সাড়ে ৪ হাজার পাতার যে রিলাইড আপন ডকুমেন্টস (আরইউডি)-এর কপি জমা দেয়া হয়েছিল, সেই কপি অভিযুক্তদের হাতে তুলে দেয়া হয় এবং অভিযুক্তরা তাতে স্বাক্ষরও করেন। সেক্ষেত্রে আগামী ১৭ নভেম্বর এই আরইউডি-এর কপি যাচাই করে অভিযুক্তরা আদালতে জানাবেন।


ইডির একটি সূত্র এদিন নিশ্চিত করেছে চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে পি কে হালদারকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরানোর ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে নতুন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা দায়ের হবে না বলেও এদিন নিশ্চিত করা হয়েছে। মামলার গতিপ্রকৃতি হিসাব করে এই মামলা আর দীর্ঘায়িত করতে চাইছে না ইডি। এমনকি এই মামলায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেয়ারও পক্ষপাতী নয় তারা। আগামী বছর ফেব্রুয়ারি বা মার্চের মধ্যেই এই মামলায় রায় দান সম্পন্ন হবে বলেই আশাবাদী ইডি। তারা বলছে, এই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে কমপক্ষে ৭ বছর জেল হেফাজত হতে পারে অভিযুক্তদের। এরপরই ভারতের আদালতের ঘোষিত সাজার মেয়াদ বাংলাদেশে অতিবাহিত করবে এমন শর্তে ভারত-বাংলাদেশ বন্দী প্রত্যাপন চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেয়া হবে পি কে হালদারসহ ৬ অভিযুক্তকে।


বৃহস্পতিবার ইডি বলেছে, আগামী বছরের মার্চের মধ্যে পি কে হালদারকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।


ইডি বলেছে, পি কে হালদার ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার সহায়তায় পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে বিপুল সম্পদ করেছেন। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থপাচারের মাধ্যমে সেখানে একাধিক অভিজাত বাড়িসহ বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলেও খোঁজ পেয়েছে ইডি।
দুর্নীতি দমন কমিশন ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, পলাতক পি কে হালদার তার নামে অবৈধ উপায়ে এবং ভুয়া কোম্পানি ও ব্যক্তির নামে প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন।


অবৈধ সম্পদের অবস্থান গোপন করতে ১৭৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করেন পি কে হালদার। তিনি এসব অ্যাকাউন্টে ৬ হাজার ৮০ কোটি টাকা জমা রাখেন। পাশাপাশি এসব অ্যাকাউন্ট থেকে তার নামে ও বেনামে আরও ৬ হাজার ৭৬ কোটি টাকা উত্তোলন করেন। দুদকের তথ্য বলছে, পি কে হালদার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ