যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন অর্নৈতিক দিক দিয়ে কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার এক ইঙ্গিত এসেছে দেশটির ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেনেস্কার মন্তব্যে। তার মতে, অন্য দেশ যেমন পয়সা গণনা করে, ইউক্রেনীয়রা তেমনি হত্যার সংখ্যা গণনা করে। রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
ওলেনা বলেন, ইউক্রেনের পক্ষে সমর্থন শক্তিশালী হলে সংকট আরও কম হবে। তবে যুদ্ধের মানবিক ক্ষতির কথা তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ। পরিস্থিতি যে খুব কঠিন, তা আমি বুঝি। যখন মহামারি চলছে, দ্রব্যমূল্য বাড়ছে, তখন আমরা আক্রান্তও হলাম। দেশে সবকিছুর দামই বাড়ছে, এর সঙ্গে ঘটছে হত্যার ঘটনা।
তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের মানুষের ওপর কী প্রভাব পড়ছে তা বাইরে থেকে বোঝাটা খুব কঠিন। তবে গল্পগুলো সবারই জানা দরকার। সেই কারণে আমাদের এই গল্পগুলো বলতে হবে। আসলে তোমরা যখন ব্যাংকে বা পকেটে তোমাদের পয়সা গুনছ, আমরা তখন গুনছি মরদেহ। এদিকে শুধু বোমা ফেলার সংখ্যা নয়, অর্থ ব্যয়ের পরিমাণ নয়। চারপাশে এ রকম হাজার হাজার গল্প রয়েছে।
২০০৩ সালে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ওলেনা জেলেনেস্কা। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর আগপর্যন্ত অতটা পরিচিত মুখ ছিলেন না তিনি। তবে হামলা শুরুর পরপরই প্রেসিডেন্ট গোপন আশ্রয়ে গেলে দায়িত্ব নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন ফার্স্ট লেডি। যুদ্ধ কীভাবে তাদের সংসার জীবন পাল্টে দিয়েছে তা নিয়েও কথা বলেন ওলেনা। বলেন, ‘ওর সঙ্গে দেখা হয় খুব কম। তবে কথা হয় প্রতিদিন।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ সেনাদের সামরিক অভিযান। ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের রুশ ভাষাভাষী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। আর ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। এ যুদ্ধে বহু মানুষ হয়েছে বাস্তুচ্যুত। হতাহতের সংখ্যাও অনেক। এরই মধ্যে কয়েক দফা যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে চুক্তি হলেও কার্যত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি এখনও। সূত্র : বিবিসি বাংলা