পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে গতকাল রোববার ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে গেছে অন্তত ৫শ’ বসতঘর। এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত তিন শিশু নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাদের পরিবার।
আহত হয়েছে এক নারীসহ কয়েকজন। সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছে সহস্ত্রাধিক মানুষ। সহায়-সম্বল হারানো মানুষদের আর্তচিৎকারে সেখানের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। ভয়াবহ এ অগ্নিকা-ে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রাথমিকভাবে তা জানা যায়নি। স্থানীয় একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত। ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সর্বশেষ সন্ধ্যা ৭টায় ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানিয়েছে, তাদের কাছে ওই ঘটনায় হতাহতের কোনো তথ্য নেই।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, গতকাল বেলা ২টা ৪৯ মিনিটে বস্তির বউবাজার এলাকার একটি দোকান থেকে হঠাৎ আগুন লাগে। অল্প সময়ের মধ্যেই আগুনে পার্শ্ববর্তী কাঁচাবাজারের অর্ধেক পুড়ে পশ্চিম-দক্ষিণ দিকে মাছবাজার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্টেশন থেকে মোট ১৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে অগ্নি নির্বাপণের কাজ শুরু করে। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর বেলা ৪টা ২০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
সেখানের বাসিন্দা শেফালী বেগম বলেন, অগ্নিকা-ের পর থেকে তার ছেলে মোশাররফ (১২) ও মোহাম্মদকে (৮) খুঁজে পাচ্ছেন না। সাদিয়া বেগম নামে আরেক গৃহবধূ বলেন, আমি আমার নাতনিকেও পাচ্ছি না। তিনি ও তার পুত্রবধূর ঘরের আসবাবপত্রসহ নগদ ১ লাখ টাকাও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে তার দাবি। বউবাজারের ইয়াসিন স্টোরের লুৎফুর মোল্লা বলেন, আমার চারটি দোকানের চারটি ফ্রিজ এবং নগদ ১ লাখ টাকা পুড়ে গেছে। দোকানের মালামালসহ প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। একই ধরনের ক্ষয়ক্ষতির কথা উল্লেখ করেছেন সর্বস্ব হারানো খেটে খাওয়া পরিবারের সদস্যরা।
দুপুরের দিকে অধিকাংশ পুরুষই ছিলেন পেশাগত কাজে বস্তির বাইরে। যে কারণে ঘটনার সময় বস্তিতে বেশিরভাগই ছিলেন নারী ও শিশু। স্থানীয়দের কেউ কেউ বলছেন, লেপ-তোশক তৈরির একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত। আবার কেউ বলছেন, একটি হোটেল থেকে আগুনের সূত্রপাত। রাজধানীর সবচেয়ে বড় এই বস্তিতে এর আগে গত ১৪ মার্চ আগুন লেগে অর্ধশত ঘর পুড়ে যায়, আহত হন দুইজন।
এদিকে গতকাল বস্তিতে অগ্নিকা-ের খবর পেয়ে সেখানে ছুটে আসেন ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তরের মেয়র আনিসুল হক। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে খাবারের ব্যবস্থা করতে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মফিজুর রহমান মফিজ বলছেন, এ ঘটনায় পাঁচশর বেশি ঘর পুড়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সহস্রাধিক মানুষ গৃহহীন হয়েছে। বস্তির একটি দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে স্থানীয়দের কাছে শুনেছেন তিনি। মেয়রের নির্দেশ অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
গুলশান লেকের দুই তীরে দেড়শ’ একরের বেশি জমির ওপর বিশাল এলাকা নিয়ে এই বস্তিতে কয়েক হাজার হাজার মানুষ বসবাস করেন। ওই জমির মূল মালিক বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেড (বিটিসিএল)। আদালতের আদেশ নিয়ে বিটিসিএল ২০১২ সালে কড়াইলে জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে। প্রথম দিনের অভিযানে চার শতাধিক ঘর উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু পরের দিন হাজার হাজার বস্তিবাসী গুলশান-মহাখালী এলাকার সড়কে নেমে ওই এলাকা অবরোধ করে রাখে। এতে বন্ধ হয়ে যায় উচ্ছেদ অভিযান। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ওই বস্তি মাদক বিকিকিনি ও অপরাধীদের আখড়া হিসেবেও পরিচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।