Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাকিবের অনন্য সেঞ্চুরি

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে। সময়টা ২৮ নভেম্বর ২০০৬। সেদিন বাংলাদেশের অভিষেক টি-২০ সংস্করণে। একইসাথে ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট সংস্করণে অভিষেক হয় সাকিব আল হাসানে। তখনও তিনি হয়ে উঠেননি বিশ্বসেরা। আন্তর্জাতিকেই ক্রিকেটে মাগুরার এই অল-রাউন্ডারের শুরু ঠিক তার দুই মাস আগে। গতকাল এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে মোহাম্মদ নবীর সাথে যখন টস করতে নামলেন তখন তিনি ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। এইদিন তিনি বিশ্বের ১৫ তম ক্রিকেটার হিসেবে ছুঁয়ে ফেললেন টি-টোয়েন্টির ম্যাচ খেলার শতক। তার আগে বাংলাদেশের জার্সিতে এই গৌরব অর্জন করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় বাংলাদেশী হয়ে এই গৌরব অর্জনের দিনটা ব্যাট হাতে স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না এই অলরাউন্ডার। মুজিবের বলে ১১ রান করেই ফিরতে হয়েছে সাজঘরে। তাতে অবশ্য এই বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডারের গোটা ক্যারিয়ারের কৃর্তী ছোট করে দেখার উপাই নেই। টি-টোয়েন্টিতে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোতে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় কোন বাংলাদেশী তার কাছাকাছি উচ্চতায়ও পৌঁছাতে পারেন নি।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কুড়ি ওভারের সংস্করণে ২০১৮ সালে ২ জুলাই পাকিস্তানের শোয়েব মালিক সর্বপ্রথম ১০০টি ম্যাচ খেলার মেইলফলক স্পর্ষ করেন। আর সর্বশেষ ক্রিকেটার হিসেবেএশিয়া কাপে পাক-ভারত ম্যাচ দিয়েই মাস্টার ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি এই ‘শত ম্যাচ’ ক্লাবের মালিক হন। তবে এক জায়গায় সাকিব অনন্য। এই সংস্করণে ২০০ রান ও ১০০ উইকেট আর কোন ক্রিকেটার এখনো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছুঁতে পারেননি। সাকিবের এখন পর্যন্ত রান ২০২১। স্ট্রাইকরেট প্রায় ১২১। টাইগার অধিনায়ক সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকের তালিকার ১৫ তম। ঝুড়িতে আছে ১০ টি হাফ সেঞ্চুরি। শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সঙ্গে ৮৪ রানের ইনিংসটি তার সর্বোচ্চ। সেদিনের ব্যাটিং দেখে কিংবদন্তী ওয়াসিম আকরাম বলেছিলেন সেটা তার দেখা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তখন পর্যন্ত অন্যতম সেরা একটা ইনিংস।
একজন ব্যাটসম্যান হিসেবেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে থাকার জন্য যা যথেষ্ট। কিন্তু সাকিবের মহিমাতো কেবল ব্যাট হাতেই শেষ নয়। টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর নামটি কার জানেন? সাকিব আল হাসান। ১২১উইকেট নিয়ে তিনি চ‚ড়ায় এই অলরাউন্ডার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৮ সালে ২০ রানের বিনিময়ে নিয়েছিলেন ক্যারিয়ার সেরা ৫ উইকেট। এই বাঁহাতি স্পিনারের বোলিং ইকোনমি ৭ এর নিচে। যা এই সংস্করণের জন্য রীতিমত ঈর্ষনীয়। বোলিংয়ে টার্ন খুব বেশি তিনি কখনোই পেতেন না। যখন ব্যাটিংয় সহায়ক পিচ থাকে সাকিব তখন মনোযোগ দেন বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে তার মাথার খেলার কাছেই প্রতিনিয়ত হার মানেন বাঘা বাঘা সব ব্যাটাররা।
বিশ্বের নানা প্রান্তের ঘোরোয়া টি-২০ আসর গুলোতে তিনিই বাংলাদেশের ঝান্ডা উড়ান। সীমান্তের ওপারের আইপিএল থেকে তাসমেনিয়া পাড়ের বিগ ব্যাশ। কিংবা মরুর বুকের পিএসএল থেকে ক্যারিবিয়ান সিপিএল। সর্বত্র বিরাজমান এই মহাতারকা। সব ধরণের টি-টয়েন্টিতে তার রান ৫৯৭৪ আর উইকেট ৪১৮টি। মাগুরার এই অলরাউন্ডার সালের ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ক্যারিয়ারের ৫০ তম ম্যাচ খেলার রেকর্ড। সেই ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেছিল বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের পল স্টার্লিং, কেভিন ও’ব্রায়েন ও জর্জ ডকরেলের ছিল ১০০ ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা । যা কোন নির্দিষ্ট দেশের জন্য সর্বোচ্চ। গতকাল বাংলাদেশও ভাগ বসাল সেই ক্লাবে। এই সাকিবের কাঁধেই এশিয়া কাপের আগে উঠেছে এই সংস্করণের অধিনায়কত্বের ভার। তার অভিজ্ঞতা ও চতপতে সিধান্ত গুণে তিনি সামনের দিন গুলোতে বাংলাদেশকে কতদূর নেন সেটাই দেখার অপেক্ষা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাকিব

২৯ অক্টোবর, ২০২২
১৩ অক্টোবর, ২০২২
৯ অক্টোবর, ২০২২
৮ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ