নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : আগামী ১৩ থেকে ২৪ ডিসেম্বর শ্রীলংকায় অনুষ্ঠেয় এশিয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে অংশ নিতে বাংলাদেশ যুবারা যখন অনুশীলনে ঘাম ঝরাচ্ছেন বিকেএসপিতে,তখন দলের সঙ্গে আবাসিক ক্যাম্পে থাকা হচ্ছে না সহ-অধিনায়ক আফিফ হোসেনের। রনি তালুকদার ইনজুরিতে পড়ায় তার শূণ্যস্থান পূরনে বিকেএসপি’র ক্যাম্প থেকে রাজশাহী কিংস কোচ সারোয়ার ইমরান ধরে এনেছেন এক বাঁ হাতি টপ অর্ডার কাম ডান হাতি অফ স্পিনারকে ! এসেই দেখা মিলেছে পুরোনো বন্ধু মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে। দলের সঙ্গে গেছেন চট্টগ্রামে,নেটে করেছেন বোলিং-ব্যাটিং। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরেও ড্যারেন স্যামী, মোহাম্মদ সামী, সামিট প্যাটেল, সাব্বির, মুমিনুলদের সঙ্গ পাচ্ছেনÑথাকছেন টিম হোটেলে। ১৭ বছর বয়সী এই ছেলেটির হাতে ইনিংসে ৫ম ওভারে যখন ড্যারেন স্যামী তুলে দিলেন বল, তখন প্রেস বক্সে উঠল প্রশ্ন ‘এই পুচকে করবে গেইলের বিপক্ষে বল?’ অথচ বিপিএল এবং টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে অভিষেকেই হয়ে গেলেন ইতিহাস! আফিফ নামে যতোটা না চেনেন টিমমেট, কোচÑচেনেন তাকে ডাক নাম ধ্রæব নামে। সেই ধ্রæবই রাজশাহী কিংসের ধ্রæবতারা হয়ে জ্বললেন মিরপুরের আকাশে। টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে অভিষেক ইনিংসে ৫ উইকেটে (৫/২১) প্রথম বাংলাদেশি তিনিই। বিপিএলে ৫ উইকেটের ইনিংস আছে আরো ৬ জনের, তবে বিপিএলের অভিষেকে এমন কৃতিতে প্রথম ধ্রæব !
যে ছেলেটির নেই অতীতে ঘরোয়া ক্রিকেটে শীর্ষস্থানীয় কোন ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা, ২০১৫ সালে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লীগে বিকেএসপি’র হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা আছে সর্বসাকূল্যে ৬টি ম্যাচ, তাও আবার ব্যাটসম্যান পরিচয়ে। পারটেক্সের বিপক্ষে ৪২ রানের সর্বোচ্চ ইনিংসের পাশে ৬ ম্যাচে উইকেটের সমষ্টি মাত্র ২টি। সেই ছেলেটি কিভাবে করবে টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেনসেশন গেইলের বিপক্ষে বল? অভিষেকেই প্রতিপক্ষ টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে ২৭৬ ম্যাচের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ক্রিস গেইল! যার ছক্কা দেখতে স্টেডিয়ামে সমবেত দর্শক, সেই চিটাগাং কিংস ওপেনার আফিফ হোসেনের বোলিংয়ে পড়লেন গোলক ধাধায়! প্রথম ২ টি বল কোনমতে ডিফেন্স করে বাঁচলেন, তৃতীয় ডেলিভারিতে আর পারেননি বাঁচতে! আফিফের মিডল এন্ড লেগ স্ট্যাম্পে পিচিং ডেলিভারি না বুঝে খেলতে যেয়ে বোল্ড গেইল !
ইনিংসের ৫ম ওভারে স্যামী তুলে দিয়েছিলেন তার হাতে বলÑঅভিষেক ডেলিভারিতে জহুরুল ইসলাম অমি’র স্বাগত জানিয়েছেন তাকে বাউন্ডারিতে,পরের বলটিও যথারীতি বাউন্ডারি ! তৃতীয় বলে জহুরুল লেট কাট করতে যেয়ে এলবিডাবø! টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেট ক্যারিয়ারে অভিষেক ওভারে অভিষেক উইকেট। তাতেই যেনো হয়ে উঠলেন খুলনার ছেলেটি আরো ভয়ংকর। পরের ওভারে গেইল তার শিকার, তৃতীয় ওভারে লং অনে জাকিরকে অবিশ্বাস্য ক্যাচে সাব্বির দিলেন ফিরিয়ে। আফিফের প্রথম স্পেলটাই (৯-০-২১-৩) ব্যাকফুটে নামিয়ে আনল চিটাগাং ভাইকিংসকে। ১ ওভারের শেষ স্পেলটি (১-১-০-২) এক কথায় বর্ণনাতীত ! এই স্পেলের প্রথম বলে ফ্লিক করতে যেয়ে সাকলায়েন সজীব এলবিডাবøু, ৫ম বলে ফ্রন্টফুটে ডিফেন্স করতে যেয়ে ইমরান খান জুনিয়র কট বিহাইন্ড! মেডেন ওভারে ২ উইকেট ! ২৪ টি ডেলিভারির মধ্যে ১৫টিই ডট ! সব কিছুই যেনো অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে।
তবে কি জানেন, টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে তাসমানিয়ার হয়ে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ডিগনটের ৬ উইকেট (৬/২৬) অভিষেক সেরা বোলিং হয়েও কিংবা অভিষেকে ৫ উইকেটের ইনিংসে ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগোর হয়ে সেন্ট লুসিয়ার বিপক্ষে ২০০৮ সালে সবচেয়ে মিতব্যয়ী বোলিং করেও (৩-০-৮-৫) ক্যারিবিয়ান ডেভ মোহাম্মদের বোলিং কৃতিত্বকে গেছেন ছাড়িয়ে আফিফ হোসেন। টুয়েন্টি-২০ ক্রিকেটে অন্য যে ১৬ বোলারের আছে অভিষেকে ৫ উইকেটের কৃতিত্ব, তাদের কেউ অভিষেক ইনিংসে মেডেন ওভারের মুখ দেখেননিÑএখানেই অন্যদের সঙ্গে ব্যবধান তার। মোহাম্মদ সামী (৫/৬), কেভন কুপারের (৫/১৫) পর বিপিএলে আফিফের বোলিং স্বীকৃতি পেলো তৃতীয় সেরার। রাজশাহীর আকাশে ধ্রæবতারা হয়ে জ্বলে ওঠা আফিফের পারফরমেন্সে তামীম, গেইল, শোয়েব মালিকের চিটাগাং ভাইকিংসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্লে অফের স্বপ্ন রাখলো বাঁচিয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।