Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৩৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে ‘বিদ্বেষমূলক প্রচারণা’ চালিয়েছে পাকিস্তান

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৩:৫৬ পিএম

১৯৪৭ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের বহিরাগত পশতুন উপজাতিরা কাশ্মীর অঞ্চলে আক্রমণ করে হাজারো মানুষ হত্যা করেছিল। গোটা উপত্যকায় সেসময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। এমনই এক ধারাবাহিক গণহত্যায় বারামুল্লায় ১১ হাজার মানুষ নিহত হয়। জম্মু ও কাশ্মীরের তৎকালীন ডোগরা শাসক হরি সিং ভারত সরকারের কাছে কাশ্মীরকে বর্বর আক্রমণকারীদের হাত রক্ষার আবেদন করেছিলেন।

তিনি ১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর একটি দলিলে স্বাক্ষর করেন যাতে জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করেন। পরদিনই ভারতীয় সেনাবাহিনী তার সৈন্যদের বিমানযোগে সেখানে পৌঁছে দুই সপ্তাহের মধ্যে উপত্যকায় আক্রমণকারীদের থামিয়ে দেয়।

সেই থেকে জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ভারত সরকার বহিরাগত ও নৈরাজ্যবাদী শক্তির হাত থেকে সেখানকার নাগরিকদের রক্ষার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেয়। যাহোক, অতীতে জম্মু ও কাশ্মীরের ভূখণ্ড দখলের জন্য পাকিস্তানের অনেক চেষ্টা হয়েছে। এই অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখতে ভারতের সামনে এটি একটি বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তারা।

এর মধ্যে একাধিক যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন এবং অনেক সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়নের কারণে পাকিস্তান এখনও ফাইনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের ধূসর তালিকায় রয়েছে।

২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশটির সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদকে বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে। কাশ্মীর ইস্যুতে পাক ও ভারতের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন গতি পেয়েছে এই ধারা বাতিলের পর। এই অনুচ্ছেদ বাতিলের তিন বছর পরেও পাকিস্তান এ ইস্যুতে প্রতারণামূলক তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচুর বিদ্বেষপূর্ণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

ডিজিটাল ফরেনসিক রিসার্চ সেন্টার বা ডিএফআরএসির এক প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, কীভাবে পাকিস্তান এ-৩৭০ ধারা বাতিলের বিষয়ে ভারতের বিরুদ্ধে জাল এবং বিদ্বেষপূর্ণ ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সেই ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট সারা বিশ্বে পাকিস্তান দূতাবাসগুলো ‘ইয়ুম-ই-ইস্তেহসাল’ (শোষণ দিবস) পালনের অনুষ্ঠান সম্পর্কে টুইট করেছে।

পাকিস্তানি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা ভারতকে লক্ষ্য করে বিদ্বেষমূলক পোস্ট এবং ভুল তথ্য দিয়ে একটি প্রচারণা শুরু করেছে বলে সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
‘কাশ্মীরে হিন্দুদের ৬০ লাখ আবাসন’

টুইটারে এক পোস্টে মুশাল মল্লিক নামের একজন বলেছেন, “ভারত সরকার তাদের জনগণকে ৬০ লাখ আবাসনের ব্যবস্থা করেছে।”
একই দাবি দৈনিক নওয়া-ই-ওয়াক্তের পোস্টেও দেখা যায়। টুইটে বলা হয়েছে, “কাশ্মীরিদের নিজেদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত করে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে, কাশ্মীরের হিন্দুদের ৬০ লাখ বাসস্থান দেওয়া হয়েছে।”

বাস্তবতা: প্রতিবেদন অনুসারে জম্মু ও কাশ্মীরে আবাসনের সুবিধা পাচ্ছে পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ। ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের বাস্তুচ্যুত ৪১ হাজার ৮৮৪ জনের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। ১৯৬৫/৭১ সময়ে ছাম্বের যুদ্ধের ৫ হাজার ৭৬৪ শরণার্থী পরিবার, সীমান্ত এলাকার সাড়ে ৩ লাখ এবং কাশ্মীরি অভিবাসী ৪৪ হাজার পরিবারের আবাসন হয়েছে।

পাকিস্তানের অভিযোগ, জম্মু-কাশ্মীরে মুসলিমদের সংখ্যালঘু বানাতে চায় মোদী সরকার। বাস্তবে দেখা গেছে, সেখানে কাশ্মীরে জনসংখ্যাগত কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। ৯০ সদস্যের পরিষদে কাশ্মীরের আসন ৪৭টি আর জম্মুর আসন ৪৩টি। কাশ্মীরে ৯৭ দশমিক ১৬ শতাংশ মুসলিম রয়েছে।
এ ছাড়া সংবিধানের এ-৭০ ধারা বাতিলের পর থেকে কাশ্মীরে সংঘাত ও হত্যা বেড়েছে এমন অভিযোগও রয়েছে; তবে পরিসংখ্যান তুলে ধরে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে ডিজিটাল ফরেনসিক রিসার্চ সেন্টারের ওই প্রতিবেদনে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ