বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সিলেট নগরীর শাহপরাণ থানাধীন বালুচর এলাকা থেকে এক গৃহবধূর পচন ধরা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত মঙ্গলবার দিবাগত (২৪ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে বালুচর এলাকার সেকান্দর মহলের নিচতলার একটি ইউনিটের তালাবদ্ধ দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় আফিয়া বেগম (৩১) নামের ওই গৃহবধূর লাশ।
এসময় মৃতদেহের পাশেই অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় আফিয়ার ১৪ মাস বয়েসি শিশুকন্যাকে। আফিয়া বেগম সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার জাঙ্গাইল তুয়াকুল গ্রামের আজির উদ্দিনের কন্যা। আফিয়ার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ- এটি একটি হত্যাকান্ড। আর এতে আফিয়ার স্বামী জড়িত। আফিয়ার স্বামীর নাম নিয়াজ উদ্দিন। ওমানে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি দেশে ফেরেন এবং আফিয়ার দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতারের পর জেলও খাটেন তিনি।
৮দিন আগে তিনি জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হন। এরপর থেকে আফিয়ার স্বামীর কোনো খোঁজ মিলছে না। নিজাম সম্পর্কে আফিয়ার বাবার পরিবারের সদস্যরা আর কোনো তথ্য দিতে পারছে না। এমনকি তার পূর্ণ ঠিকানাও বলতে পারছে না।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বালুচরের সোনার বাংলা আবাসিক এলাকার সেকান্দর মহল নামক (৩৬৪ নং) পাঁচতলা বাসার নিচতলার একটি ইউনিটে ভাড়াটে হিসেবে থাকতেন আফিয়া বেগম। প্রায় দুই বছর আগে ওই বাসা ভাড়া নেন তিনি। তার শিশুকন্যা নিয়ে একাই ওখানে থাকতেন তিনি। গত দু-তিন দিন থেকে প্রতিবেশিরা আফিয়াকে দেখতে পাননি। মঙ্গলবার রাতে তার ঘরের ভেতর থেকে বের হচ্ছিল দুর্গন্ধ। এতে পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের সন্দেহ হয় এবং দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে তারা দেখতে পান- আফিয়ার ইউনিটের দরজা বাইরে থেকে তালা দেওয়া। এরপর পুলিশে খবর দেন তারা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তালা ভেঙে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে আফিয়ার মরদেহ খাটের পড়ে থাকতে দেখে। মরদেহ থেকে উৎকট দুর্গন্ধ বের হচ্ছিলো। মৃতদেহের পাশেই অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় আফিয়ার শিশুকন্যাকে। তখন পুলিশ শিশুটির শ্বাস-প্রশ্বাস চলতে দেখে দ্রুত তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। শিশুটি এখন সুস্থ আছে।
এদিকে, আফিয়ার মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রহস্যজট। তার বাবা, ভাই ও বড় বোন জানান, তাদের পরিবার হতদরিদ্র। আফিয়াকে বেশ কয়েক বছর আগে সিলেট নগরীতে এক নারী চিকিৎসকের বাসায় কাজ করার জন্য দেন। ওই নারী চিকিৎসক প্রায় ১০ বছর আগে আফিয়াকে নিয়াজের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের কয়েক বছর পর নিয়াজ প্রবাসে চলে যান। গত দুবছর আগে দেশে ফিরলে পরিবাারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আফিয়ার সঙ্গে কলহের সৃষ্টি হয় তিনি। এসময় আফিয়ার বাবার বাড়িতে এ বিষয়ে বিচার সালিশও হয়। পরে বিষয়টি আর সমাধানের পথে যায়নি এবং ফের ওমানে চলে যান নিয়াজ।
আফিয়ার বাবার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ- নিয়াজ কয়েক বছর ধরে আফিয়া ও তার সন্তানের ভরণ-পোষণ করছেন না। বিষয়টি নিয়ে আফিয়া স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। কিছুদিন আগে নিয়াজ দেশে ফিরলে এ মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। পরে আদালত কারাগারে প্রেরণ করেন তাকে। ৮ দিন আগে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হন নিয়াজ। এরপর থেকে লিাপাত্তা তিনি। নিয়াজের বাড়ি কোথায় বা তার অন্যান্য বিষয়ে আর কোনো তথ্য দিতে পারছে না আফিয়ার পরিবার। আফিয়ার বড় বোন বলেন- ‘ওদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিলো না আমাদের। আমার বোন (আফিয়া) তার সন্তানকে নিয়ে ওই বাসায় একাই থাকতেন। ৪ দিন আগে সর্বশেষ আমাদের সঙ্গে আফিয়ার ফোনে কথা হয়। এরপর আর কোনো কথা হয়নি। এরই মাঝে গতকাল (মঙ্গলবার দিবাগত) রাত দেড়টার দিকে পুলিশ ফোন করে তার মৃত্যুর খবর দেন আমাদের।’
এবিষয়ে শাহপরাণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বুধবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে বলেন, প্রাথমিক ধারণা এটি হত্যাকান্ড। তবে ঘটনাটি রহস্যজনক। বিভিন্ন দিক সামনে নিয়ে তদন্ত চলছে আমাদের। বেশ কিছু ক্লু (সূত্র) পেয়েছি। তদন্তের স্বার্থে এ মুহুর্তে বলা যাচ্ছে না এসব।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।