Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হত্যাকান্ডকে ইহুদী গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করায় মাহমুদ আব্বাসের সমালোচনা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০২২, ১২:৪৩ পিএম

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তার জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইল ৫০টি 'হলোকস্ট' বা গণহত্যা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করার পর ইসরাইলি এবং জার্মান নেতারা এর তীব্র নিন্দা করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানি ইউরোপে গণহারে যে ইহুদী নিধন চালিয়েছিল, সেটিকে 'হলোকস্ট' বলে বর্ণনা করা হয়।

মাহমুদ আব্বাস মঙ্গলবার বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনের সময় এই মন্তব্য করেন। মিস্টার শোলৎজ সেসময় এ নিয়ে কিছু বলেননি, তবে পরে তিনি প্রেসিডেন্ট আব্বাসের মন্তব্যকে 'অসহনীয় এবং অগ্রহণযোগ্য' বলে মন্তব্য করেন। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ইয়াইর লাপিড বলেছেন, মিস্টার আব্বাসের এ অভিযোগ কেবল একটি নৈতিক অবমাননা নয়, এটি 'ডাহা মিথ্যা'।

এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, "হলোকস্টে হত্যা করা হয়েছিল ৬০ লাখ ইহুদীকে, আর এর মধ্যে পনের লাখ ছিল ইহুদী শিশু। ইতিহাস তাদের কখনো ক্ষমা করবে না।" এই সমালোচনার পর ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক বিবৃতিতে, "হলোকস্টকে আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ" বলে বর্ণনা করেন।

প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বার্লিন সফরে গিয়েছিলেন জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের চেষ্টায় জার্মানির সমর্থন আদায়ের জন্য। সেই সঙ্গে ইসরাইলের সঙ্গে যে শান্তি আলোচনা থমকে আছে সেটি পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে জার্মানির সাহায্য চাওয়ার জন্য। শোলৎজের সঙ্গে ফেডারেল চ্যান্সেলরিতে সাক্ষাতের পর প্রেসিডেন্ট আব্বাসের কাছে সাংবাদিকরা জানতে চান, মিউনিখ অলিম্পিকসের সময় ফিলিস্তিনি চরমপন্থীরা ইসরাইলি অ্যাথলিটদের ওপর যে হামলা চালিয়েছিল, সেই ঘটনার ৫০তম বার্ষিকীর আগে তিনি ইসরাইল এবং জার্মানির কাছে ক্ষমা চাওয়ার কোন পরিকল্পনা করছেন কিনা।

এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে মিস্টার আব্বাস বলেন, "যদি অতীত নিয়ে কথা বলতে চান, বলা যাক। ১৯৪৭ সাল হতে আজ পর্যন্ত, ইসরাইল, ফিলিস্তিনি গ্রাম এবং শহরগুলোতে ৫০টি হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে- ডিয়ের ইয়াসিন, টানটুরা, কাফর কাসিম এবং আরও বহু জায়গায়- ৫০টি গণহত্যা, ৫০টি হলোকাস্ট। এবং আজকে পর্যন্ত, প্রতিদিন ইসরাইলি বাহিনীর হাতে মানুষ নিহত হচ্ছে।"

আব্বাস যখন কথা বলছিলেন, তখন ওলাফ শোলৎজকে ভুরু কোঁচকাতে দেখা যায়। তবে সংবাদ সম্মেলনটি শেষ হওয়ার আগে মিস্টার শোলৎজকে এই কথার কোন নিন্দা করতে দেখা যায়নি। সংবাদ সম্মেলন শেষে বিদায় নেয়ার আগে তারা দুজন করমর্দনও করেন।

জার্মানির প্রধান বিরোধী দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) নেতা ফ্রিডরিখ মার্জ এক টুইটে এই সংবাদ সম্মেলনকে 'অবিশ্বাস্য' বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, শোলৎজের উচিৎ ছিল সাথে সাথে মাহমুদ আব্বাসের কথার প্রতিবাদ জানানো এবং তাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলা।

তবে ওলাফ শোলৎজ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে জার্মানির বিল্ড সংবাদপত্রে এক বিবৃতি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের বক্তব্যের নিন্দা করেন। তিনি বলেন, "প্রেসিডেন্ট আব্বাস যে মন্তব্য করেছেন, তাতে আমি খুবই বীতশ্রদ্ধ। আমাদের জার্মানদের কাছে হলোকস্টের মতো একটি ঘটনার সঙ্গে অন্য কোন কিছুর তুলনা একেবারেই অসহ্য এবং অগ্রহনযোগ্য। হলোকস্টের অপরাধকে অস্বীকার করার যে কোন চেষ্টার আমি নিন্দা করি।" সূত্র: বিবিসি।



 

Show all comments
  • jack ali ১৮ আগস্ট, ২০২২, ১২:৫৫ পিএম says : 0
    জোর যার মুল্লুক তার তেলা মাথায় তেল দেয় ইজরাইলি শয়তানরা বর্বর প্যালেস্টাইন মুসলিমদের উপর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন আর সেটা বললে কাফেররা অসন্তুষ্ট হয় আমাদের 57 টি তথাকথিত মুসলিম অধ্যুষিত দেশ আমরা যদি একসাথে হই আবার এক খলিফার আন্ডারে তাহলে আমরা আবার বিশ্বের পরাশক্তি হব এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে ফেলব কোন যুদ্ধ-বিগ্রহ হবেনা কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিলিস্তিন-ইসরায়েল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ