Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

তিন মাস বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবন

| প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগকৃত ২৫ সিকিউরিটি গার্ড ও ক্লিনার ৩ মাস যাবত বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এদের কেউ কেউ স্ত্রীর কানের দুল বা গহনা বিক্রি করে ও চড়া সুদে টাকা নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। এসব সিকিউরিটি গার্ড ও ক্লিনাররা ঠিকাদারের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে প্রকাশ, সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রপার্টি লংজিবিটার সার্ভিসেসের পার্টনার মো. মোদাচ্ছের রহমান পরাগ সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগের কাজ পান। এ কাজ পাওয়ার পর তিনি গত ১ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও ৫ জন ক্লিনার এবং ২২ সেপ্টেম্বর আরও ১০ জন ক্লিনার নিয়োগ দেন। এ নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকার সিকিউরিটি গার্ড ও ক্লিনারের জন্য মাসে ১৪,৪৫০ টাকা বেতন নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু ঠিকাদার নিয়োগকৃত ২৫ জন কর্মচারীকে ৬ হাজার টাকা করে বেতন দেয়া হবে বলে লিখিত চুক্তির ভিত্তিতে চাকরি দেন। বেকারত্বের হাত থেকে রেহাই পেতে ওইসব প্রার্থীরা তাতেই রাজি হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু ঠিকাদার গত ৩ মাস অতিবাহিত হলেও তাদের কোনো প্রকার বেতন-ভাতা দিচ্ছেন না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরকার নির্ধারিত ১৪,৪৫০ টাকা বেতনের স্থলে ৬ হাজার টাকা করে দিবেন বলে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের সাথে লিখিত ওই চুক্তি করেন। যা সস্পূর্ণ অনৈতিক ও বেআইনি। গত প্রায় তিন বছর যাবৎ এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১ বছর মেয়াদে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিয়োগ দিয়ে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে গরিব কর্মচারীদের ঠকিয়ে আসছেন। কিন্তু ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তার এমন কর্মকা-ের প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে হরিজন সম্প্রদায়ের একজন ক্লিনার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, স্বামী সারা দিনে একশ থেকে দেড়শ টাকা রোজগার করেন। তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই বাধ্য হয়ে এখানে চাকরি নিয়েছি। কিন্তু ঠিকাদার স্যার নিয়মিত বেতন না দেয়ায় চরম কষ্টে আছি। বেতন চাইতে গেলে যদি চাকরি চলে যায় সেই ভয়ে বেতনের কথা বলি না। অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিকিউরিটি গার্ড বলেন, অর্থকষ্টের কারণে এ কোম্পানিতে চাকরি নিয়েছি। ৩ মাস বেতন না পেয়ে চরম কষ্টে দিনাতিপাত করছি। বেতন না পেয়ে স্ত্রীর কানের দুল বিক্রি করে ও চড়া সুদে গ্রামের কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংসার চালাচ্ছি। এ মাসে বকেয়া বেতনসহ ৩ মাসের বেতন না পেলে কাজ বন্ধ করে দিয়ে হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান ধর্মঘট এবং অনশন পালন করবে বলে জানায়। এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রপার্টি লংজিবিটার সার্ভিসের ঠিকাদার মোদাচ্ছের রহমান পরাগের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়টি এড়িয়ে যান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেতন-ভাতা

২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ