Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বোয়ালমারীতে বেতন-ভাতা বঞ্চিত ৮ শিক্ষক-কর্মচারীর মানবেতর জীবন

প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ নিয়ে জটিলতায়

| প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম



বোয়ালমারী (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জটিলতাকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ শিক্ষক-কর্মচারী (প্রধান শিক্ষকসহ) ৮ মাস যাবত এমপিওভুক্ত হতে পারছে না। এর মধ্যে ‘বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)’ কর্তৃক নিয়োগকৃত ৪ জন এবং স্থানীয়ভাবে এসএমসি কর্তৃক নিয়োগকৃত ৪ জন। দীর্ঘদিন যাবত বেতন-ভাতা না পেয়ে এসব শিক্ষক কর্মচারীদের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। ঈদ আনন্দ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে এসব শিক্ষক পরিবার। হতাশ হয়ে এনটিএআরসি কর্তৃক নিয়োগকৃত তিন শিক্ষক এমপিও পাওয়ার জন্য ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের  (মাউশি)’ মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন দিয়েছেন।
জানা গেছে, এনটিআরসিএ স্মারক নং বেশিনিক/শিশি/বেশি প্রতিষ্ঠান শি. নিয়োগ/৫৭৪/২০১৬/১৭৭, তারিখ ৯ অক্টোবর ২০১৬ অনুযায়ী বিউটি রানী কুন্ডু (ইংরেজী), মো. মিজানুর রহমান (সমাজ বিজ্ঞান), অপর্ণা বিশ^াস (বিজ্ঞান) ও আব্দুর রাজ্জাক মোল্যা (ইসলাম ধর্ম) পদে সহকারী শিক্ষক হিসেবে সাতৈর উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ পান। ৫ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে তারা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলীর নিয়োগ যোগদানপত্র দিয়ে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ৯ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সহকারী গ্রন্থগারিক ও দপ্তরী পদে মোট ৪জনকে এসএমসি নিয়োগ দান করে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী চৌধুরীর নিয়োগ বৈধ নয় বলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ আহমেদ জামশেদ নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেননি। এ নিয়ে এসএমসি ও শিক্ষা অফিসারের মধ্যে দ্ব›দ্ব শুরু হয়। এ নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন ইয়াকুব আলী চৌধুরী। শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিও’র জন্য ইয়াকুব আলী কাগজপত্র প্রস্তুত করে শিক্ষা অফিসে পাঠালেও শিক্ষা অফিসার তা ফরোয়ার্ড করে পাঠাননি।
সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান, বিউটি রানী কুন্ডু ও অপর্ণা বিশ^াস বলেন, ৫ নভেম্বর নিয়োগের পর থেকে আমরা নিয়মিত ক্লাস, কোচিং নিয়ে আসলেও আমাদের স্কুল থেকে কোন প্রকার কোন অর্থ দেওয়া হয় না। এ অবস্থায় আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে কাগজপত্র পাঠালে আমাদের এমপিও হয়ে যেত কিন্তু এসএমসি তা পাঠাতে দিচ্ছে না। যত দ্রæত সম্ভব আমাদের এমপিওভূক্তির জন্য উর্ধতন কতৃপক্ষের নিকট আবেদন জানাচ্ছি। তখনকার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আইউব আলী বলেন, আমার সময়ে ওই ৪ শিক্ষক যোগদান করলেও তারা এমপিও’র জন্য সকল কাগজপত্র দিতে পারেনি। ৪ দিন পরেই আমি দায়িত্ব ছেড়ে দেই। আমার স্বাক্ষর জাল করে ৪ জনের কাগজপত্র পাঠানো হয়েছিল যা জেলা শিক্ষা অফিস থেকে ফেরত আসে। প্রধান শিক্ষক ইয়াকুব আলী চৌধুরী বলেন, শিক্ষা অফিসার ৫লাখ টাকা চেয়েছিল না দেওয়ার কারণে আমার নিয়োগে তিনি স্বাক্ষর করেননি। আমার নিজেরসহ ৮জনের কাগজপত্র পাঠালেও তিনি তা এমপিওর জন্য পাঠাননি। আমার নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর না করার জন্য উচ্চ আদালতে রিট করেছি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কোন অনৈতিক লেনদেনও হয়নি। সকল শিক্ষক কর্মচারীর এমপিও’র জন্য প্রধান শিক্ষক কাগজপত্র প্রস্তুত করে পাঠালেও শিক্ষা অফিসার সে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করছেন না। এ জন্য শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও আদালতে মামলা করা হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দ আহমেদ জামশেদ বলেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে অযোগ্য একজনকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে কমিটি। যে কারণে আমি প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ মানিনা। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দিয়ে এমপিও’র কাগজপত্র পাঠালে এক ঘন্টার মধ্যে তা আমি পাঠিয়ে দিব। মামলার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। ন্যায়গতভাবেই আমি সকল মামলা লড়ে যাব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বেতন-ভাতা

২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ