মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ফের পালাবদল ভারতের বিহার রাজ্যের রাজনীতিতে। আবারো নীতীশ কুমারের হাত ধরে। দেশের অন্যান্য প্রান্তে যখন নেতানেত্রীরা প্রবলভাবে বিজেপিমুখী, ঠিক তখন পুরোদস্তুর ঝুঁকি নিয়ে বিজেপির হাত ছাড়লেন নীতীশ কুমার। বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে আরজেডি- কংগ্রেসসহ সাত দলের সমর্থনে সরকার গড়ার দাবি রাজ্যপালের কাছে জানিয়ে এসেছেন তিনি। আজ বুধবার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় ইউপিএর মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন তিনি। এমনিতে বিহারের রাজনীতিতে নীতীশ ‘পল্টুরাম’ হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু এবার যেভাবে সম্পূর্ণ স্রোতের বিপরীতে হেঁটে তিনি বিজেপির হাত ছেড়ে আরজেডির হাত ধরলেন, সেটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এর নেপথ্যে কারণ কী কী? শুরু হয়ে গিয়েছে কাঁটাছেঁড়া।
নীতীশের এনডিএ ছাড়ার অন্যতম কারণ রাজনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা। এমনিতেই জোটে তিনি ছিলেন ছোট শরিক। তার উপর আবার কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরসিপি সিংয়ের মাধ্যমে জেডিইউতে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছে বিজেপি। সদ্যই শনিবার সরকারিভাবে জেডিইউ ছেড়েছেন আরসিপি। তাতেই দলে ভাঙনের আশঙ্কা বেড়ে যায় নীতীশের। সে কারণেই তিনি তড়িঘড়ি বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেন।
শোনা যাচ্ছে, নীতীশের এনডিএ ছাড়ার অন্যতম কারণ অমিত শাহর অতিসক্রিয়তা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পরোক্ষভাবে বিহার বিজেপির যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছেন। এমনকি নীতীশের মন্ত্রিসভায় বিজেপি থেকে কারা কারা মন্ত্রী হবেন, সেটাও ঠিক করে দিচ্ছিলেন শাহ। যা একেবারেই নাপসন্দ ছিল নীতীশের। তার ভয় ছিল, বিহারে জমি শক্ত করতে যেকোনো দিন তার সরকার ফেলে দিতে পারে বিজেপি।
বিজেপির সাথে জেডিইউ-এর জোট শুরু থেকেই তেমন মসৃণ ছিল না। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় মাত্র জেডিইউয়ের মাত্র একজনকে জায়গা দেন মোদি । যা নিয়ে শুরু থেকেই অসন্তোষ ছিল। তাছাড়া বিহার বিধানসভায় বিজেপি যাকে স্পিকার করেছে সেই বিজয়কুমার সিনহা লাগাতার নীতীশ সরকারকেই আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন। যা নিয়ে মারাত্মক অসন্তোষ ছিল নীতীশের মনে। এমনকী স্পিকারকে সরানোরও প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিজেপি তা মানেনি।
বিজেপির নীতি এবং নীতীশের রাজনীতি। দু’টি একে অপরের বিরুদ্ধে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে নীতি আয়োগের রিপোর্টে বিহারকে দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলোর মধ্যে দেখানো হয়েছে। যা একেবারেই নাপছন্দ নীতীশের। এমনকী বিজেপির একের পর এক প্রকল্প যা কিনা সংখ্যালঘুদের ভাবাবেগকে আঘাত করে, সেটাও মুখ বুজে হজম করতে হয়েছে নীতীশকে। কিন্তু লাগাতার বিজেপিকে এভাবে সমর্থন করায় সংখ্যালঘুদের মধ্যে নীতীশের গ্রহণযোগ্যতা কমছিল। তাছাড়া, সদ্যই কেন্দ্রের আনা অগ্নিপথ প্রকল্পেরও তীব্র বিরোধী নীতীশ। জোটে থাকার দরুন তার দায়ও এসে পড়ছিল তারই উপর। যা মানতে পারেননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
নীতীশের বিজেপির হাত ছাড়ার আরো একটি কারণ হতে পারে জাতীয় রাজনীতিতে পা রাখার হাতছানি। এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে বিরোধী শিবির মোদির সমকক্ষ স্বচ্ছ ভাবমূর্তির খোঁজ করছে। সেক্ষেত্রে ২০২৪ লোকসভার কথা দিকে নজর রেখে বিরোধী জোটের নেতা হিসেবেও নীতীশ নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করতেই পারেন। কারণ নতুন জোটে পা রেখেই বিহারের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে দিয়েছেন, শুধু বিহার থেকে নয়, অন্যান্য রাজ্যেও কিভাবে বিজেপিকে হারানো যায়, সেদিকে তিনি নজর দেবেন।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।