মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
তুরস্কের এরদোগান সরকার ইসলামের মতো একটি সার্বজনীনতাবাদী সংস্কৃতির মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে দেশটির কোমল-শক্তি তথা আবেদনকে কাজে লাগাচ্ছে। এর একটি ভালো উদাহরণ হতে পারে ইমাম হাতিপ মাধ্যমিক স্কুল।
এই স্কুলের শাখাগুলো শুধু ইমামই তৈরি করছে না, তারা দেশকে আরও ইসলামীপন্থী করে তোলার কাজ করছে। এবং দিরিলিস:এর্তুগ্রুল (পুনরুত্থান : এরতুগ্রুল) এর মতো তুর্কি নাটকগুলো কোরিয়ান বা হিন্দি নাটকগুলোকে টেক্কা দিয়ে এখন বিদেশী ভাষার বিনোদন তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে। এগুলো মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশীয়া বা এমনকি বলকানদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছে। এর্তুগ্রুলের কোমল শক্তির প্রভাব এমনই গভীর যে, এই একটি ধারাবাহিক নাটক দৃশ্যত পাকিস্তানের মতো একটি সমগ্র জাতিকে সউদী আরবের সাথে তার পরিচয় এবং ঐতিহ্যগত সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে উদ্বুদ্ধ করেছে, যাতে তারা তাদের সঙ্কট-কবলিত জাতীয় চরিত্রকে পুনর্র্নির্মাণ করতে পারে। গড়পরতার পাকিস্তানি, যারা প্রায় ২০১০ সাল পর্যন্ত আরব হিসেবে পরিচিত ছিলেন, তারা এখন নিজেকে তুর্কি বলে পরিচয় দিচ্ছেন। ভারতের তুলনামূলকভাবে সিদ্ধান্তহীন মুসলিমদের মধ্যেও এসব অনুষ্ঠানের প্রতিক্রিয়া অভূতপূর্ব। তুর্কি নাটকগুলো এমনকি সাংস্কিৃতকভাবে বিভ্রান্ত শহুরেদের একটি বড় অংশকেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে।
আঙ্কারার কাছে টিভি এবং ওয়েব সিরিজ দিয়ে উপমহাদেশকে ছেয়ে ফেলা খুব বেশি ব্যয়বহুল নয় এবং এটি একটি অসাধারণ ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব ফেলে। এটি একটি স্বল্প বিনিয়োগ উচ্চ মুনাফার উদ্যোগ। ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সউদি আরবকে আধুনিকীকরণের চেষ্টা করার সাথে সাথে সহিংস ওয়াহাবিবাদ সুন্নি বিশ্বে একটি ফাঁক রেখে গেছে। এটিকে পুঁজি করা তুরস্কের একটি অব্যর্থ রাজনৈতিক পদক্ষেপ হতে পারে। দেশটির আঞ্চলিক অগ্রাধিকারগুলোতে ইসলামপন্থী কয়েকটি ওয়েব সিরিজ সেই শূন্যতা পুনরুদ্ধার করতে পারে, যা দূরবর্তী ভৌগলিক অঞ্চলে (ভারত বা মায়ানমারের মতো দেশগুলোতে) ওয়াহাবিবাদের প্রসার ঘটলে এর বিরুদ্ধে বিশ^ব্যাপী লাখ লাখ সুন্নিদের মনে বিশ্বস্ত নেতা হিসাবে তুরস্ককে যাওয়ার সৌভাগ্য এনে দিতে পারে।
বেশিরভাগ মুসলিম দেশের কাছেই তুরস্কের নেতৃত্ব গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। ভারতীয় মুসলিমদের দুটি পুরানো সাম্রাজ্যের সাথে আবেগপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে : মুঘল (উপমহাদেশীয়) এবং অটোমান (এম কে গান্ধী, খিলাফত, এবং কল্পিত ইউরেশীয় ইসলামিক পরাশক্তি)। তাই অনমনীয় এবং সহিংস মরুভূমি সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বকারী ওয়াহাবিবাদকে হটিয়ে দিয়ে একটি যত্ন সহকারে সাজানো জমকালো রাজকীয় আবেদন আধুনিক জনমনে গ্রহণযোগ্যতা পেতে বাধ্য। আঙ্কারা এটি ব্যবহার করে কাশ্মীর, রোহিঙ্গা ইস্যু বা এঅঞ্চলের স্থানীয় নির্বাচনকেও প্রভাবিত করতে পারে।
তারপর রয়েছে আর্থিক দিক। ওয়াহাবিবাদের বিশ্বব্যাপী পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে অনেকে যেখানেই উপযুক্ত সেখানে ভৌগলিক অস্থিতিশীলতা তৈরির দিকে মনোনিবেশ করেছিল। সউদী আরব দৃশ্যপট থেকে সরে আসায় ভবিষ্যতে এরদোগানের জন্য সেই নেতৃত্বের সুযোগ ঘটতে পারে, যেখানে তুরস্ক সেইসব বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে শুরু করবে এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি-কেন্দ্রে পরিণত হবে, যা অর্থায়নের পাশাপাশি ইসলামের কোমল এবং কঠোর আবেদনের প্রসার ঘটাবে। এবং তুরস্ক একটি ইসলামী সাম্রাজ্যের পুনরুত্থানের উদ্দেশ্যে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে। সূত্র : ফার্স্ট পোস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।