পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নাজমুল হোসেন। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগে ভর্তি হয়ে পরে বিভাগ পরিবর্তন করে ভর্তি হন একই অনুষদের ফিন্যান্স বিভাগে। কিন্তু ভর্তির ৮ বছরেও প্রথম বর্ষ পার করতে পারেনি নাজমুল। ছাত্রত্ব না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে থাকছেন হলের ৪১৯ নাম্বার কক্ষে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। ইনকিলাবকে তিনি বলেন, দুই দিন তথ্য ঘেঁটে আমি জানতে পেরেছি এই ছাত্র আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেনি। প্রথম বর্ষে রিঅ্যাডমিশন নেয়ার পর আর পড়াশোনা কন্টিনিউ করেনি। তবে আমি দু›টি সূত্রে জানতে পেরেছি এই ছাত্র এখন আর নিয়মিত হলে থাকে না। যদিও তার দখলে রয়েছে ৪১৯ নাম্বার রুমের একটি সিট। যেখানে দীর্ঘদিন ধরে সে অবৈধভাবে অবস্থান করছিল। আমি যেহেতু বিষয়টা জানতে পেরেছি, এখন থেকে সে আর হলে থাকতে পারবে না। সেই ব্যবস্থাই আমরা নিচ্ছি।
ফিন্যান্স বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নাজমুল ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে এই বিভাগে ভর্তি হয়। প্রথম বর্ষে অকৃতকার্য হয়ে ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে পুনরায় ভর্তি হন। কিন্তু এরপর থেকে নাজমুলের আর কোনো একাডেমিক রেকর্ড দিতে পারেনি বিভাগীয় কতৃপক্ষ। কারণ হিসেবে বলা হয়, তারপর থেকে বিভাগের সঙ্গে আর কোনো ধরণের যোগাযোগ রাখেনি নাজমুল। বিভাগীয় চেয়ারম্যানের দাবি, আমাদের কাজ শুধু ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া। ক্লাস-পরীক্ষায় বসার অনুমতিও আমরা দিতে পারিনা। এসব রেজিস্ট্রার ভবনের এখতিয়ার। তাই কে ক্লাস করছে না, পরীক্ষা দিচ্ছে কিনাÑ এসব জানা আমাদের দায়িত্ব না। কত বছরে গ্রাজুয়েশন শেষ করতে হবে এসব জানাও আমাদেও দায়িত্ব না।
বিশ^বিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার ৮ বছরের মধ্যে একজন শিক্ষার্থীকে অনার্স, মাস্টার্স শেষ করতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী এই সময়ের মধ্যে গ্রাজুয়েশন শেষ করতে না পারলে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব হারাবে। তাই ২০১৩-১৪ থেকে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ৮ বছরেও প্রথম বর্ষ শেষ করতে না পারায় নাজমুল বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব হারায়। বিশ^বিদ্যালয়ের সঙ্গে তাঁর আর কোন সম্পকৃও নেই।
এদিকে ছাত্র না হয়েও ৮ বছর ধরে হলে অবস্থান করায় শিক্ষার্থীদের মাঝে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানায়, ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় অবৈধভাবে হলে থাকছেন নাজমুল।
এবিষয়ে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত ইনকিলাবকে বলেন, তার ছাত্রত্বের বিষয়টি আমার জানা নেই। তিনি আমাদের গত কমিটির পোস্টেড ছিলেন, সেই সুবাদে তাকে চিনি। যদি তিনি বেআইনী ভাবে হলে থেকে থাকেন, তাহলে আমরা হল প্রভোস্টের সাথে কথা বলে একটা ব্যবস্থা নেব।
হলে থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত নাজমুল বলেন, আমি ২০১৮ সাল থেকে হলে থাকছি না। মাঝে মাঝে ঢাকায় গেলে হল ছাত্রলীগের সভাপতি আজহারের সাথে তার রুমে থাকি। আমার আগের রুমে তারা কাকে রেখেছে তা আমি বলতে পারি না। ৮ বছরেও গ্রাজুয়েশন শেষ করতে না পারার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের বিভাগে রেজাল্ট দিতে বিলম্ব হওয়ায় আমাদের ইমিডিয়েট পরের ব্যাচের সাথে ভর্তি হতে পারিনি। এভাবে তিনবার রিঅ্যাড নেয়ার পর ২০১৮ সালে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের সাথে ৩০/৪০ হাজার টাকা জরিমানা সাপেক্ষে আমাদের কয়েকজনকে আবারো ভর্তির অনুমতি দেয় বিশ^বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। কিন্তু পারিবারিক নানা ঝামেলার কারণে আমি আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারিনি। পরে ২০১৮ সাল থেকেই রাজনীতি ছেড়ে দিয়ে এখন এলাকায় থাকি। মাঝে মাঝে বিশ^বিদ্যালয়ে যাই।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে একাধিক ফোন ও মেসেজ দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।