Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৬০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে সুব্রতকে হত্যা

সংবাদ সম্মেলনে পরিবার ও বন্ধুদের দাবি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

রাজধানীর পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল’র সংস্কার প্রকল্পের কাজের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬০০ কোটি টাকা। কিন্তু এ কাজে পুরো অর্থ খরচ হয়নি। কিছু টাকা বেঁচে যাওয়ায় তা অতিরিক্ত খরচ দেখিয়ে ‘লোপাট করতে’ চেয়েছিলেন কয়েকজন কর্মকর্তা। কিন্তু প্রকল্পের প্রকৌশলী সুব্রত সাহা ছিলেন তাদের বিপরীতে। প্রতিনিয়ত চাপ সহ্য করেও অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না তিনি। ফলে পরিকল্পিত হত্যার শিকার হন তিনি।
গতকাল সোমবার সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবী করেন প্রকৌশলী সুব্রত সাহার পরিবার ও বন্ধুরা। চলতি বছর ২৫ মে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল চত্বর থেকে সংস্কার প্রকল্পের প্রকৌশলী সুব্রতর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর হোটেল কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করে।
সংবাদ সম্মেলনে নিহত সুব্রত সাহার বন্ধু প্রকৌশলী রিয়াসাত সুমন বলেন, ঘটনার দুই মাস অতিবাহিত হতে চলছে। এখনও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। হোটেল কর্তৃপক্ষ একেক সময় একেক ধরনের মনগড়া বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তারা বলছেন, হোটেলের ১১ তলার ছাদ থেকে পড়ে প্রকৌশলী সুব্রত আত্মহত্যা করেছেন। কখনও তারা বলছেন, সুব্রত মানসিক রোগী ছিলেন, নিয়মিত মানসিক চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কখনও বলছে, শেয়ার বাজারের লোকসানের কারণে মানসিক বিপর্যস্ত ছিলেন। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে হোটেল কর্তৃপক্ষের এসব দাবির কোনো সত্যতা আমরা পাইনি।
রিয়াসাত সুমন আরও বলেন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল একটি আন্তর্জাতিক চেইন হোটেল। এই হোটেলের সংস্কারের জন্য ৬০০ কোটি টাকা বাজেট এসেছিল। সুব্রত সাহা বিভিন্ন সময় আমাদের বলেছেন, হোটেলের প্লানিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুর রহিম ও বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আজিজার রহমান মিলে এ অর্থ আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছিলেন। এজন্য তারা বাজেটের অতিরিক্ত বিল তৈরি করে সেই বিলে সুব্রত সাহাকে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু এতে সুব্রত রাজি ছিলেন না। এর জের ধরে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে ওই দুই কর্মকর্তার সঙ্গে সুব্রত সাহা কাজ নিয়ে বিরোধ ছিল। হত্যা মামলা দায়েরের পর ওই দুই কর্মকর্তা কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তারা আবার অফিস করছেন। এদিকে মামলাটি এখন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত করছে।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত সুব্রত সাহার স্ত্রী নূপুর সাহা সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার পর মামলা হয়েছে। শুরুতে তদন্ত কর্মকর্তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে কাজ করলেও এখন আর এই ঘটনা নিয়ে কোনো তদন্ত হচ্ছে না। এক মাস আগে ডিবির তদন্ত কর্মকর্তা আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর একমাত্র মেয়ে নিয়ে আর্থিক কষ্টে আছি। হোটেল কর্তৃপক্ষও তাদের পাওনা টাকা এখনও বুঝিয়ে দেয়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মামলার অগ্রগতি প্রসঙ্গে ডিবির রমনা বিভাগের ডিসি আজিমুল হক সাংবাদিকদের বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে সুব্রত সাহা আত্মহত্যা করেছেন।



 

Show all comments
  • শহিদুল ১৯ জুলাই, ২০২২, ১০:৩৭ এএম says : 0
    এই হচ্ছ এদেশে সততার পুরস্কার। হোটেল কর্মকর্তারা যদি নির্দোষ হতো তাহলে আত্মগোপনে কেন ছিল? এখন নিশ্চয়ই যথাযথ কর্তৃপক্ষকে খুশি করেই দায়িত্বে বহাল হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ১৯ জুলাই, ২০২২, ১:৩৩ পিএম says : 0
    যে দেশের সরকার হয় দেশের সম্পদ লুটপাট কারি, খুনি, গুম কারি >>মিথ্যা নাটক সাজানো পৃথিবীর মধ্যে বিশ্ব বিখ্যাত সেই দেশের মানুষ তো খারাপ হবেই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ