মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
একজন কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং গান্ধী পরিবারের আস্থাভাজন বলে পরিচিত। অন্য জন বিধানসভায় কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা। দিগম্বর কামাত ও মাইকেল লোবো- গোয়ার এই দুই শীর্ষ কংগ্রেস নেতা মিলে দলের বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেয়ার ‘ষড়যন্ত্র’ করছিলেন। এক একজন কংগ্রেস বিধায়ককে ক্ষমতাসীন বিজেপি ৪০ কোটি টাকা (ভারতীয় রুপি) করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কংগ্রেস নেতৃত্বই দলের দুই নেতার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ জানিয়েছেন।
গোয়ায় এখন বিজেপিরই সরকার। তা সত্ত্বেও বিজেপি গোয়ায় কংগ্রেসের ১১ জন বিধায়কের সিংহভাগকে ভাঙিয়ে নেয়ার ছক কষেছিল বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ। এআইসিসি-তে গোয়ার ভারপ্রাপ্ত নেতা দীনেশ গুন্ডু রাও নিজেই দলের দুই নেতার ‘ষড়যন্ত্র’-র কথা জানিয়ে মাইকেল লোবোকে বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। তার দাবি, বিজেপির হয়ে কামাত ও লোবোর কংগ্রেস ভাঙানোর চেষ্টা আটকানো গিয়েছে। ১১ জনের মধ্যে ছয়জন বিধায়ক কংগ্রেসের সাথেই রয়েছেন। কিন্তু কংগ্রেস সূত্রের খবর, বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাবন্তের সঙ্গে দেখা করে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন। সন্ধ্যায় লোবো ও তার স্ত্রী সাবন্তের সাথে দেখা করেন। কংগ্রেস সূত্রের মতে, পাঁচজন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। রাতে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল জানান, গোয়ার পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে এমপি মুকুল ওয়াসনিককে পাঠাচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী।
শনিবার রাতে কংগ্রসের পরিষদীয় দলের বৈঠকে দিগম্বর কামাত গরহাজির ছিলেন। রবিবার পরিষদীয় দলের বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে ১১ জনের মধ্যে মাত্র পাঁচজন ছিলেন। ফলে বৈঠক বাতিল করতে হয়। এর পরে পাঁচ জন বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক করেন এআইসিসি-র নেতা রাও।
গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস প্রার্থীরা কেউ গির্জায় গিয়ে, কেউ মন্দিরে বা দরগায় গিয়ে শপথ করেছিলেন, বিধায়ক হয়ে জিতে এলে তারা অন্য দলে যাবেন না। তার পরও গোয়ার শীর্ষ কংগ্রেস নেতারাই বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছেন। গোয়ার কংগ্রেস নেতা গিরিশ চোড়াণকরের অভিযোগ, কংগ্রেস বিধায়কদের দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়ার জন্য ৪০ কোটি টাকা করে দেয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিধায়কেরাই এ কথা জানিয়েছেন। বিজেপির হয়ে গোয়ার শিল্পপতি, কয়লা মাফিয়ারা কংগ্রেস বিধায়কদের ফোন করে এই প্রস্তাব দেন। গোয়ার বিজেপি রাজ্য সভাপতি সদানন্দ তানাভড়ে অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কিন্তু এআইসিসি নেতা রাওয়ের বক্তব্য, ‘দিগম্বর কামাত ও মাইকেল লোবো, বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করেই কাজ করছিলেন। কামাতের বিরুদ্ধে বিজেপি সরকার এত মামলা করেছে যে তিনি নিজেকে বাঁচাতে চাইছেন। অন্য দিকে লোবো ক্ষমতা ও পদের জন্য দল ভাঙাচ্ছিলেন।’
সম্প্রতি শিবসেনার বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সাথে জোট করে বিজেপি মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করেছে। পাশের রাজ্য গোয়াতেও বিজেপি কংগ্রেসের বিধায়কদের ভাঙানোর চেষ্টা করছে বলে গত দু’দিন ধরেই জল্পনা চলছিল। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছিল, মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেসের সরকার ফেলতে বিজেপি বিক্ষুব্ধ শিবসেনা বিধায়কদের সাথে হাত মিলিয়েছে। কিন্তু গোয়াতে তো বিজেপিরই সরকার চলছে। চলতি বছরেই গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনে ৪০টির মধ্যে ২০টি আসনে জিতে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। বিরোধী দল কংগ্রেসের বিধায়ক মাত্র ১১ জন। সেই কংগ্রেসের বিধায়ক ভাঙিয়ে বিজেপির কী লাভ?
কংগ্রেস নেতারাও শনিবার থেকে রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত দলের মধ্যে ভাঙনের কথা অস্বীকার করেছিলেন। খোদ লোবো বলেছিলেন, ‘এ সব বিজেপির রটনা। কেউ কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যাচ্ছেন না।’ কংগ্রেসের দাবি ছিল, কামাত-লোবোর পরিকল্পনা ছিল কংগ্রেসের বিধায়ক দলের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেয়া। যাতে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর না হয়। কোনো বিধায়ককেই পদত্যাগ করতে না হয়। গোয়াকে বিরোধী শূন্য করে দিয়ে ২০১৯-এর ভোটে গোয়ার দুটি লোকসভা আসনে জয় নিশ্চিত করতে চায় বিজেপি। এআইসিসি-র নেতার দাবি, যারা কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যাবেন, তাদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে বিধায়ক পদ খারিজের দাবি জানানো হবে।
চলতি বছরের গোড়ায় গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলও লড়াই করেছিল। তৃণমূল নিজে কিছু করতে না পারলেও কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, কংগ্রেসের ভোট কেটে তৃণমূল বিজেপির সুবিধে করে দিয়েছে। গোয়ার কংগ্রেস বিধায়কেরা বিজেপির দিকে পা বাড়ানোর সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেছেন, ‘বিজেপি ও কংগ্রেস সমান সমান। গোয়ার মানুষ, আপনারা কয়েক মাস আগে গোয়ার ভোটের আগে তৃণমূলের এই সাবধানবাণীতে কান দেননি। যা-ই হোক, আমরা গোয়ার মানুষের পাশে থাকব।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।