Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে পানিতে ডুবে যাওয়া দুই ভাই বোনের লাশ ফেরত দিল বিএসএফ

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০২২, ৯:৫১ এএম

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফ এর ধাওয়ায় নদীতে ডুবে মৃত দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধারের দুইদিন পরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাত ৮টার দিকে কাশীপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্তে আন্তর্জাতিক পিলার ৯৪২ এর সাব পিলার ৮ এস এর পাশে বিএসএফ-বিজিবি পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

এর আগে গত রোববার দুপুর দেড়টায় ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ধর্মপুর সীমান্তের আন্তর্জাতিক মেইন পিলার ৯৪৩ এর মাত্র ৫০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে নীলকমল নদীতে শিশু দুইটির ভাসমান লাশ উদ্ধার করে ১৯২ ব্যাটালিয়ন সেওটি-১ ক্যাম্পের বিএসএফ ও সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশ।
এর আগে ১ জুলাই শুক্রবার রাতে ভারতীয় কয়েকজন দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে ভারত থেকে নীলকমল নদী সাতরিয়ে বাবা-মার সাথে বাংলাদেশে ফেরার সময় স্রোতের টানে মা ছামিনা বেগম (৩০) এর হাত ফসকে হারিয়ে যায় শিশু পারভীনা খাতুন (৮) ও শাকিবুল হাসান (৪)। তাদের বাবা রহিজ উদ্দিন (৩৫) এর বাড়ী পাশ্ববর্তী নাগেশ্বরী উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের মধ্য সুখাতী গ্রাম।

নিহত শিশুর চাচা নেওয়াশী ইউনিয়ন ওয়ার্ড সদস্য আজিজুল জানান, তার ভাই রহিজ উদ্দিন ১৫ বছর আগে কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে যান। কাজ করেন একটি ইটভাটায়। সেদেশেই ওই দুই শিশুর জন্ম ও বেড়ে ওঠা।

রহিজ উদ্দিন জানান, সর্বশেষ হরিয়ানা রাজ্যের সুলতানপুরের হাসিহেসা ইট ভাটায় কাজ শেষে তারা গত শুক্রবার বাড়ী ফিরছিলেন। তাদের কাছে বৈধ কোন কাগজপত্র না থাকায় নির্বিঘ্নে ফিরতে তারা দালালদের সাথে ২২ হাজার রুপী চুক্তি করেন। কিন্তু দালালরা তাদের কাছে ৪০ হাজার রুপী নেন। গত শুক্রবার রাতে ভারতীয় দালাল সিরাজুল ইসলাম, নয়ন, ময়না মিয়াসহ আরও কয়েকজন তাদেরকে কোচবিহার জেলার সাহেবগঞ্জ থানার সেউটি-১ সীমান্তে এনে অন্য আরও ২০/২৫ জন নারী,পুরুষ ও শিশুর সাথে একটি বাড়ীতে রাখে। রাত সাড়ে ৯ টায় পাচারকারী দালালরা কাঁটাতারের বেড়া কেটে তাদেরকে নীলকমল নদীর পাড়ে এনে নোম্যান্স ল্যান্ডে দাঁড় করিয়ে রাখে। নদী সাতরিয়ে দেশে ফিরতে বলেন তাদের। এ সময় তাদের কথাবার্তার শব্দ শুনে ভারতীয় সেউটি-১ ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ সদস্যরা টর্চ লাইট জ্বালিয়ে ধাওয়া করে। অবস্থা বেগতিক দেখে দুই সন্তনকে নিয়ে নদীতে লাফিয়ে পড়েন তারা। ভয়ে অন্ধকারে তীব্র স্রোতের টানে ঠিকমত সাতরাতে পারছিলেন না। ভেসে যাচ্ছিলেন ভাটিতে। একসময় স্ত্রী ছামিনার হাত ফসকে স্রোতের টানে পানিতে ডুবে যায় তাদের নাড়ি ছেড়া ধন। সে সময় অনেক খুজেও তাদের উদ্ধার করতে পারেননি তারা।

রোববার নদীতে ভেসে উঠে মরদেহ। নদীতে শিশু দুইটির ভাসমান লাশ উদ্ধার করে বিএসএফ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লাশ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ