মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাঁচদিনে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে মিয়ানমারের ৯০ সেনা নিহত হয়েছে। এসময় উভয়পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ গেছে ৪ প্রতিরোধ যোদ্ধার। মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতী স্থানীয় কয়েকটি প্রতিরোধ গোষ্ঠীর বরাতে হতাহতের খবর দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, গত কয়েকদিনে সাগাইং ও ম্যাগওয়ে অঞ্চলে জান্তাবিরোধী বাহিনী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ) এর সঙ্গে তীব্র লড়াই হয়েছে। সাগাইং অঞ্চলের মাইনমুর একটি গ্রামের কাছে গত বৃহস্পতিবার মেশিনগানে সজ্জিত দুটি সামরিক যানবাহনে অতর্কিত হামলা চালাতে চারটি মাইন ব্যবহার করেছে জান্তা প্রতিরোধ যোদ্ধারা। মাইনমুতে পিপল’স গেরিলা কমান্ডো (পিজিসি) এর তথ্যমতে, সেনাবাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা করলে ছিটকে পড়ে তারা। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। তবে ইরাবতি স্বাধানীভাবে এর সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি। সামরিক বহরে অন্য একটি হামলায় ২০ সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পিজিসি। মাইন ব্যবহার করে বহরে হামলা করা হয়েছে। এতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেনাবাহিনীর। এদিকে গত বুধবার সকালে মনিওয়া-আয়ারদাউ হাইওয়েতে পিডিএফের অতর্কিত হামলায় সাত সেনা নিহত হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিরোধ যোদ্ধা কো দাউং হমান বলেন, ‘আমরা আমাদের জীবন রক্ষা, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে এবং আমাদের জনগণের জন্য লড়াই করছি। গত এক ফেব্রুয়ারি সু চি সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা বসে সামরিক সরকার। এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে দেশটির লাখ লাখ বেসামরিক নাগরিক। সরকারবিরোধী আন্দোলনে কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। ছোট ছোট সশস্ত্র গোষ্ঠী লড়াই করছে সেনাদের বিরুদ্ধে। এদিকে মিয়ানমারে ফাঁসির অপেক্ষায় থাকা গণতন্ত্রপন্থি নেতাদের বাঁচানোর আকুতি জানানো হয়েছে। মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জেনারেলদের আদেশে ফাঁসি হতে যাওয়া সুপরিচিত গণতন্ত্রপন্থি কেয়াও মিন উ-র স্ত্রী বলেছেন, তার স্বামী স্বৈরাচারবিরোধী লড়াইয়ে জীবনভর যে বিশ্বাসগুলোকে আগলে রেখেছেন, নিজের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সে বিশ্বাসগুলোও নিয়ে যাবেন তিনি। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জিমি নামে পরিচিত কেয়াও মিন উ এবং সাবেক আইনপ্রণেতা ও হিপ-হপ শিল্পী ফিও জেয়া থ-র ফাঁসি হলে, তারাই হবেন ১৯৮৮ সালের পর দেশটিতে বিচারের মাধ্যমে প্রাণদÐ পাওয়া প্রথম কেউ। সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত মিলিশিয়াদের সহায়তায় অভিযুক্ত এ দুজনকে রাষ্ট্রদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদের দায়ে জানুয়ারিতে সামরিক আদালতে এক রুদ্ধদ্বার বিচারে মৃত্যুদÐ দেওয়া হয়েছিল। গত বছর ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর বিরোধীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালানো সেনাবাহিনীর সঙ্গে এখন দেশটির সশস্ত্র অনেক গোষ্ঠীর লড়াই চলছে। তাদের কখন ফাঁসিতে ঝোলানো হবে সামরিক বাহিনী তা না জানালেও এই মৃত্যুদÐ দ্রæত কার্যকর হতে যাচ্ছে বলে মিয়ানমারজুড়ে ব্যাপক গুঞ্জন চলছে। বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে কেয়াও মিন উ এবং ফিও জেয়া থ’কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদÐ কার্যকরের পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘের দুই বিশেষজ্ঞ একে ‘মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করার অপচেষ্টা’বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। কেয়াও মিন উ’র স্ত্রী নিলার থেইন বলছেন, সামরিক কর্তৃপক্ষকে সহায়তায় করতে অস্বীকৃতি জানালে কী পরিণতি হতে পারে তার স্বামীকে সেটার উদাহরণ বানানো হচ্ছে। মিয়ানমারের আগের সামরিক শাসনামলেও কেয়াও মিন উ ১৮ বছর রাজবন্দি ছিলেন। “তিনি কোনোকিছুর সঙ্গেই তার রাজনৈতিক বিশ্বাসকে বদলাবেন না। তিনি তার বিশ্বাসের পক্ষেই থাকবেন। কো জিমি (কেয়াও মিন উ) আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন,” লুকিয়ে থাকা স্থান থেকে ফোনে রয়টার্সকে বলেন নিলার থেইন। ৫৩ বছর বয়সী কেয়াও মিন উ এবং মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির ঘনিষ্ঠ মিত্র ৪১ বছর বয়সী ফিও জেয়া থ তাদের মৃত্যুদÐের বিরুদ্ধে আপিল করলেও চলতি মাসের শুরুতে সেগুলো খারিজ হয় যায়। বিচারে তারা তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করেছিলেন না করেন নি, তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি। ‘গণপ্রতিরোধ যুদ্ধ’ নামে পরিচিত জান্তাবিরোধী প্রতিরোধে আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ততার মাত্রা কেমন ছিল তাও জানা যায়নি। কেয়াও মিন উ এই সশস্ত্র প্রতিরোধে সম্পৃক্ত ছিলেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তার স্ত্রী বলেন, সামরিক বাহিনী তার স্বামীকে যেভাবে চিত্রায়িত করছে, তা মেনে নিচ্ছেন না তিনি। কিন্তু সমগ্র দেশিই এখন জেনারেলদের ‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপের’ বিরুদ্ধে বিদ্রোহে সম্পৃক্ত, বলেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সসহ একাধিক দেশের সরকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো কেয়াও মিন উ এবং ফিও জেয়া থ’র মৃত্যুদÐ কার্যকরের পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করেছে। নিউ ইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মিয়ানমারে ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পর এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১১৪ জনকে মৃত্যুদÐ দেওয়ার তথ্য নথিভুক্ত করেছে তারা। ভিন্নমত দমনের লক্ষ্যেই গোপন বিচারের মাধ্যমে ‘বজ্রগতিতে দÐ’ দেওয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছে তারা। দক্ষিণপূর্ব এশিয়র দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সভাপতি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন প্রতিবেশীদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে মিয়ানমারের জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইকে চিঠি দিয়ে ওই দুইজনের ফাঁসি কার্যকর না করার অনুরোধও জানিয়েছেন। ইরাবতী, রয়টার্স, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।