Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সিরিয়ায় অভিযান চালিয়ে আইএস নেতাকে ধরলো মার্কিন সেনা

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২২, ১:১৪ পিএম

মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী উত্তর সিরিয়ায় বুধবার রাতে এক অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) এক সিনিয়র নেতাকে ধরে এনেছে। জোট বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তির বোমা তৈরিতে বেশ অভিজ্ঞতা আছে এবং ইসলামিক স্টেটের বিভিন্ন হামলার কাজে তিনি সহযোগিতা করে থাকেন।

কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যমে এই ব্যক্তির নাম হানি আহমেদ আল-কুর্দি বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। একটি মনিটরিং গ্রুপ বলছে, দুটি হেলিকপ্টারে করে সৈন্যদেরকে আল-হামাইরা গ্রামে নামানো হয়, যেটি সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পো প্রদেশের তুর্কি সীমান্তের কাছে। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংগঠন 'সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস' জানায়, সৈন্যদের সেখানে নামানোর পর গ্রামবাসীদের সঙ্গে তাদের সাত মিনিট ধরে সংঘর্ষ হয়।

এই সেনাদল পরে পূর্ব আলেপ্পোর কোবানি অঞ্চলে একটি ঘাঁটিতে গিয়ে নামে। এই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে তুরস্কের সমর্থনপুষ্ট একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। সিরিয়ার আল-হামাইরা নামের এই গ্রামের একজন বাসিন্দা মোহাম্মদ ইউসেফ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, সৈন্যরা গ্রামের একপ্রান্তে একটি বাড়িতে হানা দেয়, যেখানে তাদের ধারণা আলেপ্পোর কিছু মানুষ থাকতো। "হেলিকপ্টার চলে যাওয়ার পর আমরা বাড়িটার দিকে এগিয়ে যাই, এবং দেখতে পাই সেখানে মহিলাদেরকে বেঁধে রাখা হয়েছে এবং শিশুরা খোলা মাঠে।"

"ওরা এক পুরুষকে তাদের সাথে নিয়ে গেছে, তবে অন্য পুরুষরা কোথায়, সেটা আমরা জানি না। আমরা যখন মহিলাদের বাঁধন খুলে দেই, তারা বলেছে, ফওয়াজ নামের এক ব্যক্তিকে ওরা নিয়ে গেছে।" জোট বাহিনীর এক বিবৃতিতে অবশ্য বলা হয়েছে, এই অভিযানের খুঁটিনাটি খুবই সতর্কতার সাথে পরিকল্পনা করা হয় যাতে করে কোন বেসামরিক মানুষের ক্ষতি না হয়, কোন ধরনের অপ্রয়োজনীয় প্রাণহানি এড়ানো যায়।

"এই অভিযান সফল হয়েছে। কোন বেসামরিক মানুষের কোন ক্ষতি হয়নি, কোয়ালিশন বাহিনীরও কেউ আহত হয়নি। আমাদের এয়ারক্রাফট বা সম্পদেরও কোন ক্ষতি হয়নি।" ওয়াশিংটন পোস্ট মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে জানায়, ধরা পড়া ইসলামিক স্টেট নেতার নাম আহমেদ কুর্দি এবং তিনি ওয়ালি নামেও পরিচিত। তাকে রাকার গভর্নরও বলা হয়।

ইসলামিক স্টেট যখন ২০১৪ সালে ইরাক এবং সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে তাদের খেলাফত ঘোষণা করে, তখন আলেপ্পোর পূর্বদিকের শহর রাকা ছিল কার্যত তাদের খেলাফতের রাজধানী। ইসলামিক স্টেটকে ২০১৯ সালে তাদের সমস্ত এলাকা হতে তাড়িয়ে দেয় জোট বাহিনী এবং কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার ডেমোক্রেটিক এ্যালায়েন্স মিলিশিয়া বাহিনী। তবে জাতিসংঘের অনুমান, ইসলামিক স্টেটের ৬ হাজার হতে ১০ হাজার যোদ্ধা এখনো সিরিয়া এবং ইরাকে রয়ে গেছে। এরা এখনো চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে, রাস্তার ধারে বোমা পেতে রাখছে।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন বিশেষ বাহিনী একই ধরনের এক অভিযান চালিয়েছিল বিরোধী নিয়ন্ত্রিত ইদলিব প্রদেশে। ঐ অভিযানের সময় ইসলামিক স্টেটের তৎকালীন সর্বময় নেতা আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল-কুরাইশি নিহত হন। কুরাইশির আসল নাম ছিল আমির আল-মাওলা। অভিযানের সময় তিনি নিজের গুপ্ত আস্তানায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে এবং পরিবারের সবাইকে হত্যা করেন। ইসলামিক স্টেট এরপর তাদের নতুন নেতা ঘোষণা করে আবু আল-হাসান আল-হাশেমি আল-কুরাইশিকে। তবে তার পরিচয় সম্পর্কে কোন বিস্তারিত তথ্য দেয়া হয়নি। সূত্র: বিবিসি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিরিয়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ