Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ইউরোপের মন্দায় পড়ার আশঙ্কা বেশি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০২২, ১২:০৩ এএম

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা নিয়ে টেসলার ১০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছেন ইলোন মাস্ক। কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিশ্বের শীর্ষ এ ধনী মন্দার ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করে আসছিলেন। যদিও কেবল মাস্ক নন, মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীরাও বিশ্ব অর্থনীতির চলমান সংকট নিয়ে সতর্ক করেছেন। তবে সিটি গ্রুপ ইনকরপোরেটেডের সিইও মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের নয়, বরং ইউরোপের মন্দায় পড়ার আশঙ্কা বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম ব্যাংকের প্রধান জেন ফ্রেজার সম্প্রতি এশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণ করেছেন। এ বিশ্বভ্রমণে তিনি তিনটি মূল বিষয় চিহ্নিত করেছেন। বর্তমান অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়গুলো হলো সুদের হার, রাশিয়া ও মন্দা। জেন ফ্রেজার ইউরোপে বলেছেন, জ্বালানির বিষয়টি এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির উচ্চ ব্যয়ের কারণে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম বন্ধ করতেও বাধ্য হচ্ছে। এসব দিক বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ইউরোপের মন্দায় পড়ার আশঙ্কা বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে প্রধান উদ্বেগ মন্দার চেয়ে বরং সুদের হার নিয়ে। মন্দার বিষয়টি অবশ্যই মূল আশঙ্কা নয়। তবে বর্তমান পরিস্থিতির আলোকে বলা যায়, এটা এড়ানোও খুব একটা সহজ নয়। এর আগে জেপি মরগানের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী জেমি ডিমন মার্কিন অর্থনীতির মুখোমুখি চ্যালেঞ্জগুলোকে হারিকেন বা জলোচ্ছ্বাস হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যেখানে আরেক মার্কিন ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা জন ওয়ারড্রন বর্তমান অর্থনৈতিক অস্থিরতাকে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং হিসেবে অভিহিত করেছেন। এছাড়া মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে প্রচণ্ড বাজে অনুভূতির কথা উল্লেখ করেছেন টেসলার প্রধান নির্বাহীও। এমন পরিস্থিতির প্রস্তুতি হিসেবে ‘বিশ্বজুড়ে সব নিয়োগ স্থগিত’ শিরোনামে নির্বাহীদের কাছে পাঠানো ই-মেইলে তিনি টেসলার ১০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। এদিকে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অংশ ক্লিভল্যান্ড ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট লরেটা মেস্টার বলেন, আমি অর্থনীতিতে হারিকেনের মতো পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি না। তবে আমাদের বুঝতে হবে যে মন্দার ঝুঁকি বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিশ্বের অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় সুদের হার বাড়ানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। পাশাপাশি আর্থিক বাজারে কড়াকড়ি আরোপে পদক্ষেপ নিচ্ছে ব্যাংকগুলো। এসব পদক্ষেপ ঋণ নেয়ার প্রবণতা সীমাবদ্ধ করবে এবং এরই মধ্যে মন্থর হয়ে পড়া বিশ্ব অর্থনীতিতে আরো চাপ যুক্ত করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এক্ষেত্রে ইউক্রেনে চলমান রুশ আগ্রাসনের স্থায়িত্বের বিষয়টিও অনেক বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে। ভূরাজনৈতিক এ সংকট বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতিকে কয়েক দশকের সর্বোচ্চ উচ্চতায় ঠেলে দিয়েছে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে। ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (ইসিবি) কথা উল্লেখ করে জেন ফ্রেজার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইসিবিও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বাড়ানোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, নমনীয়তা ছাড়াই পদক্ষেপ গ্রহণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ে কয়েক মাস পিছিয়ে আছে। তবে মে মাসেও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থানের বাজার বেশ শক্তিশালী ছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কর্মী নিয়োগ করেছে এবং মজুরি বৃদ্ধির শক্তিশালী গতি বজায় রেখেছে। যদিও এ খবরের পরও পুঁজিবাজারে সূচকের পতন হয়েছে। কারণ বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক কয়েক দশকের সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবেলায় সুদের হার বাড়ানোর আক্রমণাত্মক নীতি অব্যাহত রাখবে। জেন ফ্রেজার বলেন, আমরা যখন ম্যাক্রো দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা বিবেচনা করি, তখন দেখতে পাই সিইও ও সিএফওদের মধ্যে এখনো শক্তিশালী আত্মবিশ্বাস। পাশাপাশি আমি আত্মবিশ্বাসী যে, মার্কিন ইক্যুইটি বাজারের চলমান অস্থিরতা প্রশমিত হবে এবং চীন সরকার আগামী মাসগুলোয় আর্থিক প্রণোদনা বিতরণ করবে। কারণ এরই মধ্যে দেশটি কভিডজনিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহার শুরু করেছে। রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ