Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

হাসপাতালে আহাজারি রক্তের জন্য হাহাকার

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ জুন, ২০২২, ৮:৪৩ এএম

একসাথে এত দগ্ধ রোগী আগে কখনো দেখেনি চমেক হাসপাতাল। শত শত রোগীর চাপে দিশেহারা চিকিৎসক ও নার্সরা। শনিবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া রোগীর ঢল রোববার সকালেও অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারিতে ব্যক্তি মালিকানাধীন আইসিডি বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুনে দগ্ধ এবং আহত শত শত রোগী আসছে। হাসপাতালে বার্ন ইউনিট রোগীতে ঠাসা। জরুরি বিভাগেও ঠাঁই নেই। মেঝেতে বারান্দায় সবখানে রোগী। তাদের বেশির ভাগই দগ্ধ। অনেকের হাত পা ভাঙা। আগুন নেভাতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ৩০ জন কর্মী আহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন পুলিশ, ডিপো কর্মী ও স্থানীয়রা। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ আগুনের ঘটনা ঘটে। সবশেষ তথ্য বলছে, ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট এখনো আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। রোববার সকালের দিকে আগুনের ভয়াবহতা কিছু টা কমলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যায় নি। চট্টগ্রাম এবং ফেনী, কুমিল্লা ও নোয়াখালী থেকেও ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েক টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সব মিলিয়ে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের ২৫ টি ইউনিট রয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। তারা জানান, আগুন লাগার কিছু সময় পরে রাসায়নিক পদার্থ ভর্তি কনটেইনারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করা ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, পুলিশ, ডিপো কর্মী ও স্থানীয়রা আহত হয়েছেন। অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। অনেকে প্রচণ্ড বিস্ফোরণে ছিটকে পড়ে মারাত্মক আহত হন। তখন সেখানে এক ভয়াল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বিস্ফোরণে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা কেঁপে উঠে। একের পর এক বিস্ফোরণে আগুন আরো ভয়াবহ রূপ নেয়। আহতদের পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন হাসপাতালে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শতাধিক আহতকে ভর্তি করা হয়েছে । নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় পার্ক ভিউ হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালেও অনেকে ভর্তি হয়েছেন। ঘটনার পর এ পর্যন্ত ১৬ জন মারা গেছেন। এরপর মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে রোগী ও তাদের স্বজনদের আহাজারি চলছে। আহতদের চিকিৎসা দিতে রাতেই চট্টগ্রামের সকল চিকিৎসক ও নার্সদের হাসপাতালে ছুটে যেতে নির্দেশনা দেয়া হয়। এতে সাড়া দিয়ে অনেকে হাসপাতালে যান। চিকিৎসকদের আহ্বানে আহতদের জন্য রক্ত দিতে ভিড় করেন অনেকে।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শামীম আহসান বলেন, দগ্ধ অবস্থায় এ পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও রয়েছেন।
হাসপাতালে রক্তের জন্য হাহাকার চলছে। হাসপাতালের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে
রক্ত দিতে হাসপাতালে আসার আহ্বান জানানো হয়। রাত থেকেই বিভিন্ন রক্ত দাতা সংস্থার কর্মীরা সেখানে রক্ত দিতে শুরু করে। চমেক হাসপাতালের পাশাপাশি চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে শতাধিক আহত ও দগ্ধকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অগ্নিকাণ্ড

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ