Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাইলেই যেন বন্দুকের মালিক হতে না পারে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২২, ১২:০৭ এএম

যুক্তরাষ্ট্রে এমন আইন করা উচিত যেন যে কেউ চাইলেই বন্দুকের মালিক হতে না পারে। প্রতিটি বন্দুক লাইসেন্সপ্রাপ্ত এবং নিবন্ধিত হওয়া উচিত। বন্দুক কেনার অনুমতি পেতে গেলে লোকজনের সব ধরনের তথ্য যাচাই বাছাই করতে হবে। আর এই প্রক্রিয়া খুব ধীর হওয়া উচিত যেন রাগের মাথায় কেউ চাইলেই বন্দুক কিনতে সক্ষম না হন। তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, বেসামরিক লোকজনের জন্য বন্দুক সহজলভ্য হওয়া একেবারেই উচিত নয়। আমেরিকায় বন্দুক নিয়ন্ত্রণের কঠোর আইন কল্পনাও করা যায় না। বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইনের দ্বিতীয় সংশোধনী অস্ত্র বহন করার অধিকারের নিশ্চয়তা দিয়েছে এবং ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন এটি ফলাও করে প্রচারও করেছে। যে রাজনীতিবিদরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তারা আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়ার বিষয়টি কিছুটা কঠিন করে তুলতে পারেন। এই ইস্যুর কারণে আবার তাদের জনপ্রিয়তাও কমে গেছে। তবে বেশিরভাগ মার্কিনিই বন্দুক সহজলভ্য হোক সেটা চায় না। বেশিরভাগই সাধারণ কিছু বিধিনিষেধের পক্ষে। যেমন- মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিদের কাছে অস্ত্র বিক্রির অনুমতি না দেওয়া, বন্দুক বিক্রির সব তথ্য সংরক্ষণ করা। ভোটারদের এমন রাজনীতিবিদদের পুরস্কৃত করা উচিত যারা মনে করেন একটি বন্দুকের লাইসেন্স পাওয়ার বিষয়টি ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতোই কঠিন হওয়া উচিত। বন্দুক হামলায় সব মৃত্যু হয়তো প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় তবে সচেতন হলে এই সংখ্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। গণহত্যার উদ্দেশ্য সব সময় এক রকম হয় না। বাফেলোতে যে কিশোরটি গত ১৪ মে ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করেছিল, তাদের বেশিরভাগই ছিল কৃষ্ণাঙ্গ। তাই ধারণা করা যায়, ওই কিশোর বর্ণবাদী ছিল। অপরদিকে ৬৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি গত ১৬ মে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি গির্জায় একজনকে হত্যা করেন। সে সময় পাঁচজন আহত হয়। পরে জানা যায়, ওই ব্যক্তি তাইওয়ানের লোকজনকে ঘৃণা করতেন। টেক্সাসের একটি স্কুলে এবং তার আশেপাশে গত ২৪ মে কমপক্ষে ২১ জনকে হত্যা করেন সালভাদর রামোস। কিন্তু কী কারণে তিনি এই কাজে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন তা স্পষ্ট নয়। আর এ বিষয়ে সদুত্তর দেওয়ার জন্য রামোস এখন বেঁচেও নেই। প্রতিটি ঘটনা আলাদা হলেও এই ভয়াবহতায় একটি বিষয়ে মিল আছে। আর তা হলো হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র। খুন বা হত্যার জন্য সহজ এবং নির্ভরযোগ্য হাতিয়ার হচ্ছে বন্দুক। একটি বন্দুক ও প্রচুর গোলাবারুদসহ একজন ব্যক্তির পক্ষে ছুরি, একটি ভোঁতা বস্তু বা খালি হাতে যতটা সম্ভব তার চেয়ে দ্রুত এবং অনেক কম শারীরিক পরিশ্রমে অনেক বেশি লোককে হত্যা করা সম্ভব। রামোস যে অস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন তা উচ্চ ক্ষমতার ম্যাগাজিনসহ একটি মিলিটারি স্টাইলের অ্যাসল্ট রাইফেল। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি গুলিবিদ্ধ না হয়েছেন ততক্ষণ তিনি গুলি চালিয়ে গেছেন। ওই হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই ছিল শিশু। ফলে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা যেন সবাইকে আরও বেশি ভাবিয়ে তুলছে। যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের সহজলভ্যতা পরিস্থিতিকে আরও মারাত্মক করে তুলতে পারে এমনটাই এখন আশঙ্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধারণা করা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই কারও না কারও কাছে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বন্দুক রয়েছে। ২০২০ সালে আমেরিকায় ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষ আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কিত আঘাতের কারণে মারা গেছে। গাড়ির দুর্ঘটনায় যত তরুণ মারা যায় তার চেয়ে বেশি নিহত হচ্ছে বন্দুক হামলায়। দ্য ইকোনমিস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ