পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যৌন হয়রানি, অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. আকরাম হোসেন হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সিনেট সদস্য নির্বাচনে প্রার্থী। গণমাধ্যমে যৌন হয়রানি ও নানা অনিয়মের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলেও এখন পর্যন্ত তার প্রার্থিতা বাতিল করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসনের এমন গাফেলতির পেছনে কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একটি সূত্র বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের প্রত্যক্ষ সমর্থন রয়েছে প্রফেসর আকরামের প্রতি। তাই নানা অনিয়ম করেও বিশ্ববিদ্যালয়ে বীরদর্পে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রফেসর ড. মো. আকরাম হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ট্রেজারার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও শিক্ষক সমিতির ট্রেজারার হওয়ার অনেক আগ থেকেই নানা অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ ছাপিয়ে ঠিকই বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় বড় পদে পদায়ন পাচ্ছেন প্রফেসর আকরাম। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সূত্রে জানা যায়, তার এই ধারাবাহিক উন্নতির পেছনে জ্বালানি হিসেবে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমর্থন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৯ সালে বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেন প্রফেসর আকরাম। যার একটি অডিও রেকর্ড রয়েছে ইনকিলাবের হাতে। ওই ঘটনায় অনুষদের ডিন বরাবর অভিযোগও জমা দেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। তবে তাঁর ক্ষমতার প্রভাবে বিষয়টি আমলে নেননি ডিন অফিস। একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৬ এপ্রিল বিভাগের দু’জন অ্যাসিসট্যান্ট প্রফেসর ও দু’জন লেকচারার পদে নিয়োগ পরীক্ষায় বাদ পড়ে পূর্বের ইতিহাস টেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর আরেকটি অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। তবে এসব বিষয় উপেক্ষা করে সিনেট নির্বাচনে তাঁকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ সমর্থিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল।
যৌন হয়রানির অভিযোগ ছাড়াও প্রফেসর আকরামের বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য আর্থিক কেলেঙ্কারীর অভিযোগ। জানা যায়, ২০১৯ সালে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিয়োগ পরীক্ষায় ভাইভা বোর্ডে ছিলেন প্রফেসর আকরাম। সেখানে এক প্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় চার লাখ টাকা ঘুষ নেন তিনি। লেনদেন সংক্রান্ত কয়েকটি অডিও রেকর্ডও রয়েছে ইনকিলাবের হাতে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এমনকি বাংলাদেশ বেতারের একটি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন না করেই ৯৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রফেসর আকরাম। যা বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তদন্তাধীন রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। কাজ না করেই আত্মসাত করা ৯৮ লাখ টাকার ওই চেকের কপি রয়েছে ইনকিলাবের হাতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলছেন, এত এত অপকর্ম করেও বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন পাচ্ছেন প্রফেসর আকরাম। যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সত্যিই দুর্ভাগ্য।
এ বিষয়ে একাধিকবার প্রফেসর ড. মো. আকরাম হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর আখতারুজ্জামান-এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যাযনি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট নির্বাচনে ড. মো. আকরাম হোসেনের নীল দলের সদস্য সচিব প্রফেসর আব্দুর রহিম ইনকিলাবকে বলেন, দলের প্রতি ওনার প্রতিশ্রুতি ও আনুগত্য বিবেচনায় সর্বসম্মতিক্রমেই তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তবে ড. মো. আকরাম হোসেনের নামে বিভিন্ন অভিযোগ আমরা জানি। কিন্তু বিষয়গুলো তদন্তাধীন তাই অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।