মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিমুখী কৌশল, কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্ঘাতে সম্ভবত ইউক্রেনকে বিজয় এনে দিতে ব্যর্থ হবে। বরং এক্ষেত্রে একটি শান্তি চুক্তির প্রয়োজন, যা বর্তমান সঙ্কট থেকে সবাইকে উদ্ধার করতে পারে। কিন্তু, একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ন্যাটোর সাথে আপোস করতে হবে, যা ওয়াশিংটন বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে। তবে, এ প্রসঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন আলোচনার জন্য উন্মুক্ত ছিলেন এবং ইউক্রেনের সাথে সঙ্ঘাতে যাওয়ার আগে বলেছিলেন যে, আলোচনা একটি অচলাবস্থায় পৌঁছেছে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে পুতিন পশ্চিমাদের কাছে তার দাবিগুলোর একটি তালিকা উপস্থাপন করেছিলেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ন্যাটোর সম্প্রসারণ বন্ধ করা। যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টতই এ বিষয়ে ছাড় দিতে ইচ্ছুক ছিল না। তবে, সেই নীতি পুনর্বিবেচনা করার জন্য এখনই উপযুক্ত সময়। যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক অস্ত্র সরবরাহ এবং নিষেধাজ্ঞার পদ্ধতি মার্কিন জনমতের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হতে পারে, কিন্তু বিশ্বমঞ্চে এটি সত্যিই কার্যকর নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাইরে এটি সামান্যই সমর্থিত এবং শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অভ্যন্তরেও একটি নেতিবাচক রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে পারে।
রাশিয়া-ইউত্রেন সঙ্ঘাত এবং এটি বেসামরিক নাগরিকদের উপর যে ভয়াবহতা ডেকে এনেছে, তার সাথে পরিচিত যে কারোর এটা স্পষ্ট মনে হতে পারে যে, রাশিয়াকে বিশ্বব্যবস্থা থেকে ছিটকে দেয়া সহজ হবে। কিন্তু তা নয়: বিশেষত, উন্নয়নশীল দেশগুলো পশ্চিমের এ বিচ্ছিন্নতার প্রচারণায় যোগ দিতে অস্বীকার করেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে রাশিয়াকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন ভোটে এমনটাই দেখা গেছে। এটা সত্য যে, ৯৩টি দেশ এ পদক্ষেপকে সমর্থন করেছিল। কিন্তু অন্যান্য ১শ’টি দেশ তা করেনি (২৪টি এর বিরোধিতা করেছে, ৫৮টি বিরত থেকেছে এবং ১৮টি ভোট দেয়নি)। আরো উল্লেখযোগ্য যে, এ ১শ’ দেশে বিশ্বের জনসংখ্যার ৭৬ শতাংশ বাস করে।
মার্কিন উদ্যোগের বিরোধিতা করার জন্য দেশগুলোর রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য সম্পর্কসহ অ-আদর্শগত বহু কারণ থাকতে পারে। তবে সত্য এই যে, বিশ্বের বেশিরভাগ অঞ্চলই মস্কোকে বিচ্ছিন্ন করার পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে, বিশেষত ওয়াশিংটন যে মাত্রায় চায়। নিষেধাজ্ঞা মার্কিন কৌশলের একটি বড় অংশ। যদিও এভাবে রাশিয়াকে পরাজিত করার সুযোগ নেই, বরং এর ফলে বিশ্বের দেশগুলিকে চড়া মাশুল দিতে হতে পারে। তাই সর্বোত্তম হয়, যদি তারা রাশিয়াকে একটি শান্তি চুক্তির দিকে ঠেলে দিতে পারে এবং তাই একটি শান্তি আলোচনার জন্য নিবিড় চাপ তৈরি করা উচিত।
পশ্চিমা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অগণিত সমস্যা রয়েছে। প্রথমটি হল যে, নিষেধাজ্ঞাগুলো রাশিয়ার অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি করলেও এর মাধ্যমে কোনো সিদ্ধান্তমূলক উপায়ে রাশিয়ান রাজনীতি বা নীতিগুলোর পরিবর্তন ঘটানোর সম্ভাবনা কম। ভেনিজুয়েলা, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তাতে পরিষ্কার দেখা যায় যে, তারা এই অর্থনীতিগুলিকে দুর্বল করতে পেরেছে, কিন্তু নিষেধাজ্ঞাগুলো মার্কিন সরকার যেভাবে চেয়েছে, সেভাবে এসব দেশের রাজনীতি বা নীতির পরিবর্তন করতে পারেনি।
দ্বিতীয় সমস্যাটি হল যে, নিষেধাজ্ঞাগুলো অন্তত আংশিকভাবে এড়ানো সহজ এবং সময়ের সাথে সাথে আরো এর ফাঁকফোকর আবির্ভ‚ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো মার্কিন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সাথে জড়িত ডলার-ভিত্তিক লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরভাবে প্রযোজ্য। নিষেধাজ্ঞা এড়াতে চাওয়া দেশগুলো ব্যাঙ্ক বা ডলার বহিভর্‚ত উপায়ে লেনদেনের উপায় খুঁজে নেয়। ফলে, রাশিয়ার সাথে রুবল, রুপি, রেনমিনবি এবং অন্যান্য ডলার বহিভর্‚ত মুদ্রায় লেনদেনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।