পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র। হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী সেখানে আড্ডা দেন। পবিত্র রমজান মাসে সেখানে ছাত্রদের জন্য নামাজের যায়গা নির্ধারণ করা হলেও ছাত্রীদের জন্য পৃথক নামাজের যায়গা বরাদ্দ করা হয়নি। কিন্তু রমজান মাসে রোজাদার ছাত্রীরা নামাজের জন্য যায়গা চেয়ে ৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দেন। কিন্তু প্রশাসন তাদের দাবি প্রত্যাখ্যান করেন।
গতকাল রোজাদার কয়েকজন ছাত্রী সেখানে নামাজ আদায় করতে গেলে বাধা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু রোজাদার ছাত্রীরা প্রশাসনের বাধা মানেননি। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে অবস্থিত ছেলেদের নামাজের জায়গার সামনে পর্দা টানিয়ে আরেকটি নামাজের জায়গা করেন। এ সময় টিএসসি কর্তৃপক্ষের বাধা উপেক্ষা করে যোহরের নামাজ আদায় করেন রোজাদার ছাত্রীরা।
ছাত্রীদের দাবি, টিএসসিতে ছেলেদের জন্য নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকলেও মেয়েদের জন্য কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ বিভিন্ন কর্মসূচিসহ নানাবিধ কারণে ছাত্রীরাও টিএসসিতে অবস্থান করেন। এছাড়াও রমজান মাসে টিএসসিভিত্তিক সংগঠনসমূহ এবং বিভিন্ন জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি ইফতার কর্মসূচি দিয়ে থাকে। কিন্তু ইফতারের পরে নামাজের ব্যবস্থা না থাকায় অনেক রোজাদার ছাত্রী এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করলে মাগরিবের নামাজ আদায় করতে পারেন না।
জানা যায়, গতকাল ছাত্রীরা নামাজ আদায় করতে গেলে বাধা দেয়া হয়। ঘটনাস্থলে টিএসসির উপদেষ্টা ড. সিকদার মনোয়ার মুর্শেদের নেতৃত্বে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর, উপ-পরিচালক ফারজানা বাসারসহ কয়েকজন কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের সাথে দীর্ঘ দুই ঘন্টা বিতর্ক করেন। ছাত্রীদের নামাজের জায়গা করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ দিনের সময় চাওয়া হলে তা মেনে নিতে আপত্তি জানায় ছাত্রীরা। এ সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে একজন সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়। একইসাথে তার বিভাগীয় আইডি কার্ডও নিয়ে নেন। পরে সাংবাদিকদের চাপে ফেরত দেন।
বাধা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে টিএসসির উপদেষ্টা ড. সিকদার মনোয়ার ইনকিলাবকে বলেন, ছাত্রীরা একটা আবেদন জমা দিয়েছে এবং আমরা সে অনুযায়ী কাজ করছি। আমরা একটা মিটিং করেছি যে কীভাবে কি করা যায়। আমরা তো তাদের জন্য একটা সমাধানে আসতে চাচ্ছিলাম। কিন্তু তারা আইন না মেনে নিজেদের ইচ্ছায় যা ইচ্ছে করছে। আমি তাদের কাছে দশ দিনের সময় চেয়েছি কিন্তু তারা কোনো কথাই শুনেনি।
তিনি বলেন, এখানে বাধা দেওয়ার কোনো বিষয় নেই। তারা নিজ দায়িত্বে বিষয়টা করতেছে; এখানে টিএসসি কর্তৃপক্ষের কোনো দায় নেই। এখানে তো নামাজের জায়গা ছিল না। আমাদের স্টাফদের জন্য ছোট একটা জায়গা করা হয় এবং সেই ধারাবাহিকতায় সবাই এখানে এসে নামাজ আদায় করছে। এটার একদিকে অডিটোরিয়াম আছে, চারপাশে সাউন্ড, ওজুর ব্যবস্থা করতে হবে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই তো আমাদেরকে কাজ করতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী স্মৃতি আফরোজ সুমি বলেন, মেয়েদের নামাজের সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা গত সপ্তাহে ভিসি স্যার বরাবর স্মারকলিপি দেই। ভিসি স্যারের মৌখিক সম্মতি পেলেও প্রশাসনের দিক থেকে পজিটিভ কোনো স্টেপ না নেয়ায় আমরা আজ সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছেলেদের নামাজের পশ্চিমে যে জায়গাটা ফাঁকা পড়ে থাকে সেখানে পার্টিশন , পর্দা দিয়ে ঘিরে নামাজের ব্যবস্থা করেছি এবং যোহরের সালাত আদায় করেছি। প্রশাসনের দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী ১০ দিন অর্থাৎ ২২ তারিখের মধ্যে নামাজের স্থায়ী স্থান দেয়া হবে এই প্রত্যাশা রাখি।
বিষয়টি নিয়ে ছাত্রীদের নামাজের স্থানের ব্যবস্থা করতে সহযোগিতা করা ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ সভাপতি আসিফ মাহমুদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে টিএসসিতে নামাজের সমস্যায় ভুগছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি ছাত্র সংগঠন হিসেবে আমরা মেয়েদের সাথে থেকে স্মারকলিপি প্রদান থেকে টিএসসিতে নামাজের স্থান স্থাপন পর্যন্ত সহযোগিতা করি। মেয়েরা জোহরের নামাজের মাধ্যমে টিএসসির নামাজের স্থানে নামাজ শুরু করেন। এখন থেকে মেয়েদেরকে আর নামাজের জন্য হয়রানির শিকার হতে হবে না। নামাজের সময় টিএসসিতে ছেলেদের মতোই নামাজ পড়ে ফেলতে পারবেন মেয়েরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।