Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ফ্রান্সে আগাম নির্বাচন : কে হবেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০২২, ১২:১৫ পিএম

ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দোরগোড়ায়। চলতি এপ্রিল মাসেই ভোটাররা আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে ভোট দেবেন। এই নির্বাচন দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হতে পারে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য লড়াই করছেন। এদিকে কে হবেন দেশটির পরবর্তী রাষ্ট্রপ্রধান, তা নিয়ে চলছে শেষ মুহূর্তের হিসাব-নিকাশ।

ভোটের লড়াইয়ে মোট প্রার্থী ১২ জন। তাদের মধ্যে আটজন পুরুষ ও চারজন নারী। প্রধান ছ’জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে তিনজন ডানপন্থী এবং দু’জন বামপন্থী ফরাসি রাজনীতিক। ইমানুয়েল ম্যাক্রোকে দেখা হয় একজন মধ্যপন্থী রাজনীতিক হিসেবে। তিনি রিপাবলিক অন দ্য মুভ পার্টির প্রতিনিধিত্ব করছেন। তার প্রতি দক্ষিণ ও বাম উভয় শিবিরের ভোটারদের সমর্থন রয়েছে। মারিন লা পেন এবং এরিক জিম্যো তারা দু’জনেই অতি-ডানপন্থী। তাদের মধ্যে জিম্যোকে দেখা হয় সবচেয়ে বেশি কট্টরপন্থী হিসেবে।
ভ্যালেরি পেক্রেস দক্ষিণপন্থী রিপাবলিকানদের প্রার্থী হয়েছেন। জ্য-লুক মেলেশ নির্বাচন করছেন অতি-বামপন্থী রাজনৈতিক দল ফ্রান্স আনবাউড থেকে এবং ইয়ানিক জাদো গ্রিন পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন।
পর্যায়ক্রমে বেশ কিছু বড় ধরনের ধাক্কা খাওয়ার পর ফ্রান্সের ঐতিহ্যবাহী বাম রাজনৈতিক দলগুলো এখন আর আলোচনায় নেই। সোশালিস্ট পার্টির ফ্রাসোয়া ওলাদ ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু তার পর থেকে দলটির প্রতি সমর্থন কমে গেছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বাম শিবিরের এই বিভাজনের কারণে ইমানুয়েল ম্যাক্রো লাভবান হতে পারেন, যদিও ডানপন্থীরা অভিযোগ করছেন যে ম্যাক্রো তাদের নীতি অনুসরণ করছেন।
ইউক্রেনের যুদ্ধ নির্বাচনী প্রচারণায় বড় ধরনের জায়গা দখল করে নিয়েছে। তবে ভোটারদের কাছে প্রধান ইস্যু জীবন নির্বাহের খরচ বেড়ে যাওয়া।
জানা গেছে, দুই দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৪ দিনের ব্যবধানে। যদি কোনো একজন প্রার্থী প্রথম দফার নির্বাচনে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পান, তাহলে যে দু’জন প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পাবেন তারা পরবর্তী ধাপে অর্থাৎ দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচনে অংশ নেবেন। প্রথম দফার নির্বাচনে কেউই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রথম রাউন্ডের এই ভোট হবে ১০ এপ্রিল। আর দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোট ২৪ এপ্রিল। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে যিনি বিজয়ী হবেন তিনিই ১৩ মে ফ্রান্সের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

জনমত জরিপ কী বলছে
গত ছ’মাস ধরে যেসব সমীক্ষা চালানো হচ্ছে তাতে এগিয়ে আছেন ইমানুয়েল ম্যাক্রো। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর তিনি আরো এগিয়ে যান কিন্তু পরে অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে তার ব্যবধান কমতে থাকে। বাকি প্রার্থীদের তুলনায় বেশ ভালভাবেই এগিয়ে আছেন মারিন লা পেন। অন্যদিকে অতি-ডানপন্থী এরিক জিম্যোর প্রতি সমর্থন কমে যেতে থাকে। জিম্যো একবার বলেছিলেন যে, তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শ্রদ্ধা করেন।
উল্লেখ্য, এ বছরের জানুয়ারি মাসে ফ্রান্সের বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছায় যা দেশটির গত অর্ধ-শতাব্দীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে করোনা মহামারী থেকে তাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। ফ্রান্সের অর্থনীতি বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাওয়ায় সর্বস্তরের মানুষের ওপরেই এর প্রভাব পড়েছে।
ফ্রান্সে বেকারত্বের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৭.৪ শতাংশ। ইউরো জোনের দেশগুলোর গড় হারের তুলনায় এই হার সামান্য উপরে। তবে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো ক্ষমতা গ্রহণের সময় যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন, বর্তমান হার তার খুব কাছাকাছি।
ফ্রান্সে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে, যে কারণে অনেক ফরাসি ভোটারের কাছে নিরাপত্তার গুরুত্ব আরো বেশি জোরালো হয়ে উঠেছে। সূত্র : বিবিসি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রেসিডেন্ট

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ