Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্লাব নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হয় সোহেল চৌধুরী

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২২, ১১:২৮ এএম

দীর্ঘ ২৪ বছর পূর্বের চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। গ্রেফতারের পর বোতল চৌধুরীর বরাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে র‍্যাব। র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় র‌্যাব।

র‌্যাব জানায়, বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবে চলত নানা অনৈতিক কার্যক্রম। এর প্রতিবাদ করেছিলেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। এ নিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। প্রকাশ্যে অপমান করায় সোহেল চৌধুরীকে উচিত শিক্ষা দিতে ওই ক্লাবের স্বত্বাধিকারী আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী ও আসাদুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের পরিকল্পনায় হত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। হত্যার দায়িত্ব নেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই। তিনি তখনকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনকে দায়িত্ব দেন। ইমনসহ তার গ্যাং ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই বনানী ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে গুলি করে হত্যা করে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, বনানীর আবেদীন টাওয়ারের অষ্টম তলায় অবস্থিত ট্রাম্পস ক্লাবের পাশে ছিল সে সময়ের বনানীর সবচেয়ে বড় মসজিদ বনানী জামে মসজিদ। ট্রাম্পস ক্লাবে সন্ধ্যা থেকে শুরু করে সারারাত বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। নিহত চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী বনানী মসজিদের কমিটি নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবের এ ধরনের অশ্লীলতা বন্ধের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ নিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এরপর আজিজ মোহাম্মদ ভাই সোহেল চৌধুরীর উপর ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বান্টি ইসলাম, আশিষ রায় চৌধুরী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমনকে দিয়ে সোহেলকে হত্যার প্রস্তাব দেয়। আজিজ মোহাম্মদ ভাই ও ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলাম ও আশিষ রায় চৌধুরীর অনুরোধে ইমন তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদার করতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যার প্রস্তাবে রাজি হন এবং পরবর্তীতে ইমন এই হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে বনানীর ট্রাম্পস্ ক্লাবের নিচে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলা নম্বর-৫৯। পরে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ৯ জনের বিরুদ্ধে ডিবি পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ২০০১ সালের ৩০ নভেম্বর মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। তবে মামলাটি ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলার এক নম্বর আসামি আদনান সিদ্দিকী দুই বছর পর হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। পরে হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট পুনরায় আরেকটি রায় দেন। এ রায়ে আগের জারি করা রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয়। প্রত্যাহার করা হয় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ।

আদালত চলতি বছরের ২৮ মার্চ তাদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ফলে র‌্যাব এ ঘটনায় পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) রাতে র‌্যাব সদরদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১০-এর অভিযানে রাজধানীর গুলশান থেকে ওই মামলার চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে (৬৩) গ্রেফতার করে। এসময় উদ্ধার করা হয় ২২ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল সোডা ওয়াটার, একটি আইপ্যাড, ১৬টি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, দুটি আইফোন ও নগদ দুই লাখ টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢালিউড

১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ