মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্য কর্ণাটকে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো প্রশাসনের কাছে দাবী তুলেছে যে মসজিদ থেকে মাইক বাজিয়ে আজান দেওয়া বন্ধ করতে হবে। শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি ভেঙ্গে বিনা অনুমতিতে মাইক বাজিয়ে আজান দেওয়া হচ্ছে বলে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর অভিযোগ।
এর আগে হিজাব, হালাল ইত্যাদির মতো মুসলমানদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক ইস্যুতে সরব হয়েছে এই সংগঠনগুলো। এসবই করা হচ্ছে আগামী বিধানসভা ভোটের আগে ধর্মীয় মেরুকরণের জন্য, মত বিশ্লেষকদের। কর্নাটকে উগ্র হিন্দুত্ববাদ প্রচারের জন্য পরিচিত সংগঠন শ্রীরাম সেনে বলছে মসজিদগুলি থেকে মাইক বাজিয়ে যে আজান দেওয়া হয়, তাতে রাজ্যের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ করা হচ্ছে।
আজানের সময় মাইক যাতে ব্যবহার না করা হয়, সেটা পুলিশ প্রশাসনকে সুনিশ্চিত করার দাবীও তোলা হয়েছে। কর্ণাটকে সক্রিয় অন্যতম হিন্দু সংগঠন হিন্দু জনজাগৃতি সমিতির রাজ্য মুখপাত্র মোহন গৌডা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন যে তারা আজানের বিরুদ্ধে নন, কিন্তু মানুষের অসুবিধা করে মাইকে কেন আজান দেওয়া হবে? গৌডার কথায়, বেঙ্গালুরু শহরের বিভিন্ন থানায় তথ্যের অধিকার আইন অনুযায়ী আমরা জানতে চেয়েছিলাম যে কোন মসজিদে কতগুলি মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। থানাগুলি থেকে জানানো হয়েছে যে এধরণের কোনও অনুমতি তারা দেয় নি।
"এর আগে কর্ণাটক হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল বেআইনী মাইক বাজেয়াপ্ত করতে হবে। সেই নির্দেশও পুলিশ মানে নি। এদিকে রাজ্য স্তরের বিভিন্ন পরীক্ষা চলছে আর মাইকে আজান দেওয়া হলে অসুবিধা হচ্ছে - এই মর্মে বেঙ্গালুরু শহরেই ১২৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে," জানাচ্ছিলেন গৌডা। এর আগে কন্নড নববর্ষের সময়ে গৌডার সংগঠনই দাবী তুলেছিল যে হালাল মাংস বিক্রি বন্ধ করতে হবে রাজ্যে। তারও আগে বড়সড় বিতর্ক বেধেছিল মুসলমান ছাত্রীদের হিজাব পরে ক্লাস করা নিয়ে। সেই মামলা এখন সুপ্রীম কোর্টে পৌঁছিয়েছে। তারই মধ্যে হিন্দুত্ববাদীদের নতুন দাবী মাইকে আজান দেওয়া বন্ধ হোক।
শুধু মসজিদে নয়, মন্দির বা চার্চেও তো মাইক থাকে: কংগ্রেস
সর্বশেষ দাবী নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, সিদ্দারামাইয়া মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে জানাচ্ছিলেন মাইক তো শুধু মসজিদে থাকে না, মন্দির বা চার্চেও থাকে। কিন্তু এতে কাদের অসুবিধা হচ্ছে? প্রশ্ন সিদ্দারামাইয়ার। তার সিদ্দারামাইয়ার কথায়, "এ ধরণের ক্যাম্পেনগুলো চলতে পারছে কারণ সরকারটা দুর্বল। মুখ্যমন্ত্রী সবই জানেন। আর এস এসের সংগঠনগুলো কী কী করছে তিনি কি জানেন না?" "সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার যে কোনও প্রচেষ্টা অবিলম্বে থামাতে হবে, না হলে গোটা রাজ্যের ক্ষতি হবে", আশঙ্কা সিদ্দারামাইয়ার।
কেন মুসলমানদের নানা ইস্যু নিয়ে সরব হিন্দুত্ববাদীরা?
কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনের বাকি আছে এক বছরেরও কম সময়। এর আগের ভোটে বিজেপি পরাজিত হলেও কংগ্রেস আর জেডি এস বিধায়কদের দল বদল করিয়ে তাদের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়েছিল বিজেপি। ওই ঘটনাটি অপারেশন কমল নামে পরিচিত। কিন্তু এবার কংগ্রেস আর বিজেপির মধ্যে সমানে সমানে টক্কর হতে পারে, তাই সতর্কতা হিসাবে ধর্মীয় মেরুকরণ করিয়ে কিছু বাড়তি সিট নিশ্চিত করতে চাইছে বিজেপি, এমনটাই মনে করেন বেঙ্গালুরুতে বিবিসির জন্য কাজ করেন এমন একজন সাংবাদিক ইমরান কুরেশি।
"কর্ণাটকের যা রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে মূল লড়াইটা হবে বিজেপি আর কংগ্রেসের মধ্যে। যদিও জে ডি এসের কিছু জনসমর্থন আছে, তবে তা সীমিত। বিজেপি আর কংগ্রেস দুই দলেরই ৯০ থেকে ১০০র কাছাকাছি আসন পাওয়ার একটা সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। "কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যে সংখ্যাটা দরকার, সেই ১১২টি আসন কে পাবে, তা নিশ্চিত নয়। তাই বিজেপি এই ধর্মীয় মেরুকরণের কৌশলটা নিয়েছে যাতে নিজেদের আসনসংখ্যাটা যতটা সম্ভব বাড়িয়ে নেওয়া যায়," বলছিলেন ইমরান কুরেশি।
হিন্দুত্ববাদের নতুন পরীক্ষাগার হয়ে উঠছে কর্ণাটক?
হিজাব, হালাল আর আজানের পর মঙ্গলবার হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো নতুন দাবী তুলেছে যে আগামী আমের মরসুমে মুসলমান ফল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে যাতে কেউ আম না কেনেন। আবার হিজাব পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে কোনও শিক্ষিকা গার্ড দিতে পারবেন না, এমন নিয়ম আনার কথাও সরকারের চিন্তায় রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে কর্নাটক যেন হয় উঠছে হিন্দুত্ববাদের এক নতুন পরীক্ষাগার। সূত্র: বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।