Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউক্রেনের সমর্থন নিয়ে আলোচনা করতে পশ্চিমা নেতাদের বৈঠক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২২, ৬:৪০ পিএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার ব্রাসেলসে পশ্চিমা নেতাদের সাথে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান নিয়ে তিনটি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। আক্রমণ শুরু হওয়ার এক মাস পর এ বৈঠকগুলো অনুষ্ঠিত হয়।

ন্যাটো, জি ৭ এবং ইইউ সকলেই সম্মেলন করছে, এমন একতা প্রদর্শনে যা পশ্চিমারা খুব কমই দেখেছে। বাইডেন তিনটিতেই অংশ নিয়েছেন, ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে এটিই হচ্ছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রথম সফর। তবে তার ব্রাসেলস সফর শুধু প্রতীকী নয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন পশ্চিমা প্রতিরক্ষামূলক জোট ন্যাটোকে নতুন করে উদ্দেশ্যের অনুভূতি দিয়েছে। এবং যেহেতু ইইউ রাশিয়ার সাথে শক্তির সম্পর্ক ছিন্ন করার চেষ্টা করছে, এটিকে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অন্যান্য সম্পর্ক তৈরি এবং শক্তিশালী করতে হবে।

ইইউ, জি-সেভেন ও ন্যাটোর মতো রাষ্ট্রজোটের প্রাসঙ্গিকতা ও ঐক্যের অভাব নিয়ে কিছুদিন আগে পর্যন্তও নানা সংশয় দেখা যেত, ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার পর নিন্দুকেরা পিছু হঠতে বাধ্য হচ্ছে৷ তিন রাষ্ট্রজোটই অভূতপূর্ব ঐক্য দেখিয়ে দ্রুত একের পর এক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং আরও খারাপ পরিস্থিতির আশঙ্কায় প্রস্তুতি চালাচ্ছে৷ অ্যাটলান্টিকের দুই প্রান্তের মধ্যে ঐক্যও ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলের অনিশ্চয়তা দূর করতে পেরেছে৷ এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার ইইউ, জি-সেভেন ও ন্যাটোর জরুরি শীর্ষ সম্মেলন ও সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপস্থিতি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কিও ভিডিও লিংকের মাধ্যমে ন্যাটো ও ইইউ-র শীর্ষ নেতাদের কাছে বক্তব্য দিয়েছেন।

আলোচনায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আরও কড়া শাস্তি, ইউক্রেনের জন্য আরও সহায়তা এবং ইউরোপের দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা আরও জোরালো করার মতো বিষয়গুলিই প্রাধান্য পাচ্ছে৷ বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপে ন্যাটোর স্থায়ী সামরিক তৎপরতার প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে৷ এর ফলে রাশিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া লঙ্ঘন করা হলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এমন চরম পদক্ষেপের জন্য চাপ বাড়ছে৷ বৃহস্পতিবার রাতে বাইডেন এক সংবাদ সম্মেলনে সম্মিলিত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে পারেন৷

আপাতত রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে ন্যাটোর মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি, রুমেনিয়া ও স্লোভাকিয়ায় চারটি নতুন ‘ব্যাটল গ্রুপ’ মোতায়েনের ঘোষণা করেছেন৷ তবে ইউক্রেনের দাবি মেনে সে দেশের উপর ‘নো ফ্লাই জোন’ কার্যকর করতে এখনো নারাজ এই রাষ্ট্রজোট৷ সরাসরি রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সংঘাত এখনো এড়িয়ে চলতে চায় ন্যাটো৷ তবে বাইডেনের আশঙ্কা, রাশিয়া রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করতে পারে৷ এমনকি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না মস্কো৷ ফলে ন্যাটোকে শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার মোকাবিলা করতেই হবে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক মুখপাত্র৷

রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞার প্রশ্নে ঐকমত্যের অভাব রয়েছে৷ বিশেষ করে গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামের মতো জ্বালানি আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করার প্রশ্নে জার্মানির মতো দেশ এখনো এমন চরম পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুতি নয়৷ রাতারাতি এমন সিদ্ধান্ত নিলে জার্মানি তথা ইউরোপের অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা করছে ওলাফ শলৎসের সরকার৷ ধাপে ধাপে সেই দিশায় অগ্রসর হতে চায় জার্মানি৷

অন্যদিকে ইউক্রেন, আমেরিকা ও মূলত পূর্ব ইউরোপের দেশগুলি পুতিনের আয়ের গুরুত্বপূর্ণ এই উৎস বন্ধ করে দেবার জন্য চাপ দিচ্ছে৷ একমাত্র এভাবেই রাশিয়ার অর্থনীতিকে পুরোপুরি বিপর্যস্ত করে পুতিনের ক্ষমতা খর্ব করা সম্ভব বলে তারা মনে করে৷ স্পেন, পর্তুগাল, ইটালি ও গ্রিস জ্বালানির ক্ষেত্রে রাশিয়ার উপর নির্ভরতাকমাতে জরুরি ভিত্তিতে ইউরোপীয় স্তরে সমন্বয়ের মাধ্যমে পদক্ষেপ নেবার জন্য চাপ দিচ্ছে৷ এ ক্ষেত্রে মার্কিন সহায়তারও আশা করছে ইইউ৷ সূত্র: বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ