Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রুম নিয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া

ঢাবির কবি জসীম উদ্দীন হল

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০২২, ১২:০২ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি জসীম উদ্দীন হলে রুম দখলকে কেন্দ্র করে ওই হল শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এক পর্যায়ে দু’গ্রুপের মাঝে ব্যাপক হাতাহাতি হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হলজুড়ে। গত রোববার রাত এগারোটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। চলে রাত একটা পর্যন্ত। হলের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালিউল সুমন ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের গ্রুপের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। ওয়ালিউল সুমন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও লুৎফর রহমান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী।
জানা যায়, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের অনুসারীদের মধ্যে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আশিকুর রহমান আশিক ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ইসমাইল এবং ২০১৬-১৭ শিক্ষা বর্ষের সংস্কৃত বিভাগের মহিত ও উর্দু বিভাগের রাসেলের নেতৃত্বে প্রথমে তারা (লুৎফরের অনুসারীরা) হলের ২১৪ নম্বর কক্ষ দখল করতে আক্রমণ চালায় যেখানে হল ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়ালিউল সুমনের অনুসারীরা অবস্থান করছিল।
এছাড়াও সাধারণ সম্পাদকের গ্রুপের জুনিয়ররা হামলায় অংশ নিতে না চাইলে আশিকুর রহমান আশিক (লুৎফরের অনুসারী) জোড়পূর্বক তাদের হামলায় অংশ নিতে বাধ্য করেন বলেও জানা যায়। এই হামলায় ২টি ল্যাপটপ, ২৫ হাজার টাকা, জামা-কাপড় ও বেশ কিছু মুঠোফোনসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে জানা যায়।
এ ঘটনার পাল্টা জবাবে সভাপতি ওয়ালিউলের অনুসারীদের মধ্যে ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সোহান, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শাহারিয়ার সাগর, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী হেদায়েতুল ইসলাম, আরবি বিভাগের নাঈমের নেতৃত্বে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় উভয় পক্ষ হাতে স্ট্যাম্প, রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে দেখা যায়।
এদিকে হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে হল প্রশাসনের ভূমিকাও ছিল এক্ষেত্রে হতাশাজনক।
এ বিষয়ে হল ছাত্রলীগ সভাপতি ওয়ালিউল সুমন ইনকিলাবকে বলেন, আমার গ্রুপের একটা রুমে সাধারণ সম্পাদকের কিছু ছেলে আক্রমণ করে। এতে ল্যাপটপ, ২৫ হাজার টাকা ও কয়েকটি মোবাইল হারায় আমার গ্রুপের শিক্ষার্থীরা। এখন সবাই তো হলের বৈধ শিক্ষার্থী; তাই বিষয়টা আমার গ্রুপের ছেলেরাও মানতে পারেনি। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে আমি ও সাধারণ সম্পাদক মিলে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতে চাই। দীর্ঘ সময় ধরে বাক-বিতন্ডার পর অবশেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমানের কাছে রুম দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে রুম দখলের কোন ঘটনা ঘটেনি। একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে আমরা বিষয়টি সমাধান করে দেই এবং যে যার যার রুমে চলে যায়।
তবে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুর রশীদ। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, এরকম ঘটনা গতকাল রাতে ঘটেছে। এ বিষয়ে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে তাদেরকে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কি বিষয়ে তদন্ত করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টা কেন ঘটেছে এবং কারা করেছে সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা ও সমস্যা নিরসনে কী ব্যবস্থা নেয়া যায় তার জন্য সুপারিশ করবে তদন্ত কমিটি। পরবর্তীতে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাবি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ