Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউক্রেনে জয়ী হবে রাশিয়া, মস্কোতে বিশাল সমাবেশ ঘোষণা পুতিনের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০২২, ৩:১৯ পিএম | আপডেট : ৮:১১ পিএম, ১৯ মার্চ, ২০২২

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার মস্কোর একটি স্টেডিয়ামে একটি বিশাল পতাকা সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং ইউক্রেনে যুদ্ধরত তার সৈন্যদের প্রশংসা করেছিলেন। এই যুদ্ধে মস্কো বিজয়ী হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

ক্রাইমিয়া এবং সেভাস্তোপলের রাষ্ট্রীয় মর্যাদার গণভোটের অষ্টম বার্ষিকী এবং রাশিয়ার সাথে এর পুনর্মিলন উপলক্ষে শুক্রবার মস্কোর লুঝিনি স্টেডিয়ামে হাজার হাজার সমর্থক সমবেত হয়। রাশিয়ার পতাকা উড়িয়ে ‘রাশিয়া, রাশিয়া, রাশিয়া’ স্লোগান দিয়ে তারা দাবি করে, ক্রেমলিনের সব লক্ষ্যই অর্জিত হবে।‘নাৎসিমুক্ত পৃথিবীর জন্য’, ‘আমাদের প্রেসিডেন্টের জন্য’ নানা স্লোগান লেখা মঞ্চ থেকে ৬৯ বছরের পুতিন বলেন, ‘আমরা জানি আমাদের কী করা প্রয়োজন, কিভাবে তা করতে হয় এবং এর মূল্য কী। আর আমরা অবশ্যই আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবো।’

ইউক্রেনে রুশ বাহিনী মোটিফ হিসেবে ব্যবহার করা ‘জেড’ প্রতীক যুক্ত করেও স্লোগান দেয় বহু পুতিন সমর্থক। কোট পরিহিত পুতিন বলেন, বিশেষ সামরিক অভিযানে অংশ নেওয়া রুশ সেনারা ইউক্রেনে রাশিয়ার ঐক্য দেখিয়ে দিয়েছে। পুতিন বলেন, ‘কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, তারা পরস্পরকে সাহায্য করছে, পরস্পরের পাশে দাঁড়াচ্ছে আর যখন প্রয়োজন পড়ছে তখন ভাইয়ের মতো বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়ে অন্যকে রক্ষা করছে। এই ধরনের ঐক্য আমাদের দীর্ঘকাল ছিল না।’

পুতিন বলেন ইউক্রেনে অভিযানের দরকার ছিল কারণ যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে হুমকি দিতে দেশটিকে ব্যবহার করছিল। আর ইউক্রেনের রুশ-ভাষী মানুষদের ‘গণহত্যা’ থেকে রক্ষার দায়িত্ব রাশিয়ার। ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর থেকে এই প্রথম কোন সমাবেশে দেখা গেল পুতিনকে। তিনি রাশিয়ান সৈন্যদের প্রশংসা করেছিলেন, ‘কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, তারা একে অপরকে সাহায্য করে এবং সমর্থন করে,’ তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এই জাতীয় ঐক্য ছিল না।’

পুতিনের ভাষণের আগে মঞ্চে বেজে ওঠে রাশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত। যুদ্ধ, আত্মত্যাগ এবং রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধরতদের সম্মান জানিয়ে গান পরিবেশন করে পুতিনের প্রিয় ব্যান্ড লিউবি। পড়া হয় কবিতা। মস্কো পুলিশ জানিয়েছে, স্টেডিয়ামের আশেপাশে ২ লাখেরও বেশি লোক উপস্থিত ছিল। ইভেন্টে দেশাত্মবোধক গানও অন্তর্ভুক্ত ছিল। যুদ্ধটিকে ন্যায়সঙ্গত হিসাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করে, পুতিন রাশিয়ার সৈন্যদের সম্পর্কে বাইবেলের ব্যাখ্যা করেছিলেন, ‘বন্ধুদের জন্য নিজের আত্মাকে বিসর্জন দেওয়ার চেয়ে বড় ভালবাসা আর কিছু নেই।’

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা স্পুতনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী পুতিন বলেন, ইউক্রেনকে নিরস্ত্র ও নাৎজিমুক্ত করতেই রুশ সেনারা সেখানে অভিযান চালাচ্ছেন। দনবাসের দুই স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে ব্যাপক গোলাবর্ষণের পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর নির্দেশ দেন পুতিন। লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ভাষণে পুতিন বলেন, দনবাসের জনগণকে ‘গণহত্যা’ থেকে বাঁচানো ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ অভিযানের মূল লক্ষ্য।

পুতিন বলেন, ‘দনবাসের বাসিন্দারা ২০১৪ সালে কিয়েভে অভ্যুত্থানের সঙ্গে দ্বিমত জানানোর পরপরই শাস্তিস্বরূপ তাদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করেন ইউক্রেনের সেনারা। তাৎক্ষণিক এসব মানুষকে অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়। পদ্ধতিগতভাবে তাদের ওপর গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালাতে থাকে। এটাই গণহত্যা।’

দনবাসে রক্তপাতের জন্য দায়ী সব যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা হবে জানিয়ে পুতিন বলেন, ‘সেখানে গণহত্যা বন্ধ করার এটাই (সামরিক অভিযান) একমাত্র উপায়।’পুতিন আরও দাবি করেছেন, ইউক্রেনকে নিরস্ত্র ও নাৎজিমুক্ত করার জন্য রাশিয়ার সামরিক বাহিনী শুধু ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর কয়েক দিন আগে স্বঘোষিত দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রকে স্বাধীন দুটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন পুতিন। স্পুতনিক আরও বলছে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ও দেশটির কট্টর জাতীয়তাবাদী সশস্ত্র ব্যাটালিয়নের হামলা থেকে রক্ষা পেতে দোনেৎস পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক রাশিয়ার কাছে সাহায্যের আবেদন জানানোর পর প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন। সূত্র: এপি, স্পুতনিক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ