Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে বিশাল সংযোগ সেতু নির্মাণ করছে তুরস্ক

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০২২, ২:৪১ পিএম

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা শুক্রবার দারদানেলেস প্রণালীর উপর একটি বিশাল ঝুলন্ত সেতু উদ্বোধন করেছেন যা মূল জলপথের ইউরোপীয় এবং এশীয় উপকূলকে সংযুক্ত করে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান বলেছেন, এর টাওয়ারগুলোর মধ্যে ২ হাজার ২৩ মিটার (৬ হাজার ৬৩৭ ফুট) স্প্যানের কারণে, ‘১৯১৫ কানাক্কাল ব্রিজ’ নামের এই সেতু বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু হয়ে উঠেছে।

এটি তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কানাক্কাল প্রদেশের ইউরোপীয় প্রান্তে অবস্থিত জেলিবলু শহরকে এশিয়ার দিকের লাপসেকি শহরের সাথে সংযুক্ত করেছে। প্রেসিডেন্ট বলেন, সেতুটি ভ্রমণকারীদের দারদানেলেস পার হতে দেয় - যা এজিয়ান সাগরকে মারমারা সাগরের সাথে সংযুক্ত করে। আগে এই পথ ফেরির মাধ্যমে অতিক্রম করতে সময় লাগত দেড় ঘন্টা। এখন সেতুর মাধ্যমে সেই পথ অতিক্রম করা যাবে মাত্র ছয় মিনিটে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এরদোগান বলেন, ‘তুরস্ক জাপানকে ছাড়িয়ে গেছে, যেখানে বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতু ছিল। উদ্বোধনের পরে এখন তুরস্কের এ সেতুটি প্রথম স্থান অধিকার করেছে।’ উদ্বোধনটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে দারদানেলেস আক্রমণকারী যৌথ ব্রিটিশ এবং ফরাসি নৌবহরের বিরুদ্ধে তুরস্কের নৌবাহিনীর বিজয়ের ১০৭ তম বার্ষিকীর দিনে করা হয়েছে। নৌ অভিযানের ব্যর্থতার ফলে ১৯১৫ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের সৈন্যদের সাথে ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের নেতৃত্বে মিত্রদের গ্যালিপোলি উপদ্বীপে অবতরণ করতে হয়।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী কিম বু-কিউম অনুষ্ঠানে বলেন, ‘১৯১৫ কানাক্কাল সেতু সংঘর্ষ ও সংঘাতের ইতিহাসকে পিছনে ফেলে দেবে এবং পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে একটি সেতু হবে, শান্তি ও সমৃদ্ধির এক নতুন যুগের সূচনা করবে।’ তুর্কি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানির একটি কনসোর্টিয়াম দ্বারা নির্মিত সেতুটি তুরস্ক এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করবে, কিম বলেছেন।

এরদোগান বলেন, ‘1915 ক্যানাক্কাল ব্রিজ’ নির্মাণে ২৫০ কোটি ইউরো (২৭০ কোটি ডলার) খরচ হয়েছে কিন্তু তুরস্ক জ্বালানি খরচ এবং কার্বন নিঃসরণ হ্রাস থেকে প্রতি বছর ৪১ কোটি ৫০ লাখ ইউরো (৪৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার) সাশ্রয় করবে।

সেতুটির স্থাপত্য প্রতীকীতায় ভরপুর। ২,০২৩ মিটারের কেন্দ্রীয় স্প্যানটি ২০২৩ সালের স্বীকৃতিস্বরূপ, যখন তুরস্ক অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর তুর্কি প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপন করবে, এরদোগান বলেছেন। সেতুর টাওয়ারের উচ্চতা ৩১৮ মিটার (১ হাজার ৪৩ ফুট)। এটি ১৮ মার্চ (৩/১৮) বোঝায়, যখন তুরস্ক গ্যালিপোলি সমুদ্র এবং স্থল যুদ্ধের সময় নিহত সৈন্যদের স্মরণ করে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে গ্যালিপলি অভিযানের লক্ষ্য ছিল ভূমধ্যসাগর থেকে ইস্তাম্বুলে দারদানেলিস হয়ে একটি নৌ পথ নিরাপদ করা এবং অটোমান সাম্রাজ্যকে যুদ্ধ থেকে বের করে আনা। ২৫ এপ্রিল, ১৯১৫ সালে গ্যালিপোলি অবতরণ একটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধের সূচনা করেছিল যা আট মাস ধরে চলেছিল। প্রায় ৪৪ হাজার মিত্র সৈন্য এবং ৮৬ হাজার অটোমান সৈন্য যুদ্ধে মারা যায়। সূত্র: দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুরস্ক

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ