মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বাদশাহ ফয়সালের যে ফর্মূলাটি ১৯৭৯-পরবর্তী হুমকি মোকাবেলার ভিত্তি হয়ে ওঠেছিল, তা ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের পরে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। এবং প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াটি সউদী আরবের নিরাপত্তা এবং কর্তৃত্বমূলক ব্যবস্থার সাথে জড়িত ছিল। সেসময় সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করার পক্ষে ওয়াহাবি সরকারী ফতোয়া সউদী ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইসলামী আন্দোলনকর্মীরা প্রকাশ্যে অস্বীকার করে। এর পরিপেক্ষিতে, সউদী কর্তৃপক্ষ গণমতামত নিয়ন্ত্রণ এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয়। প্রত্যুত্তরে, ইসলামপন্থীরা প্রবাসে একটি রাজনৈতিক বিরোধী দল গঠন করে, মৌলবাদীরা সহিংসতার আশ্রয় নেয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
তবুও, এই সময়টিতে স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এবং পরে ইন্টারনেটের উত্থানের সাথে একটি প্রগতিশীল স্রোতেরও উত্থানও ঘটে। তারপর ৯/১১-এর ঘটনাটি সংঘটিত হয়। অন্য কথায়, ফয়সাল ফর্মুলার টুইন পিলার টুইন টাওয়ারের সাথেই ভেঙে পড়ে। আলমের যেমন বলেছেন, ‘ঠিক গ্রীক বীরদের মতো, যাদের মহিমা ততক্ষণ সম্পূর্ণ হয় না, যতক্ষণ না তারা তাদের মহৎ কাজগুলি সম্পন্ন করে মারা যায়, এই জোয়ারটিও ফয়সাল ফর্মুলাটি চূর্ণ হওয়ার মূহুর্তে ধ্বংস হয়ে যায়।
আরব বসন্ত সউদী আরবের জন্য আরও সংশয় তৈরি করে। প্রগতিশীলতার জোয়ার এটিকে মানবাধিকার, সংখ্যালঘু এবং সামাজিক স্বাধীনতার পরিপ্রেক্ষিতে কট্টর ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করার পাশাপাশি, গণতান্ত্রিক আদর্শ এবং সাংবিধানিক পরিবর্তন সংক্রান্ত আলোচনার জন্যও জোর দিয়েছে। এই অঞ্চলে ইসলামী কট্টরতার বিরুদ্ধে পরিবর্তন গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের দাবিতে জনপ্রিয় আন্দোলনগুলির আগেই শুরু হয়েছিল, যা স্বাভাবিকভাবেই সউদীদের এই স্রোতের প্রতি বৈরী অবস্থান নিতে পরিচালিত করেছিল।
যদিও সেসময়ে লক্ষ্যবস্তু ছিল রাজনৈতিক ইসলাম, বিজয়ী এবং পরাজিতরা লড়াইয়ের দুটি প্রধান পক্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। সউদী আরবে প্রগতিশীলরা দুর্বল হয়ে থাকতে পারে, কিন্তু নতুন আন্দোলনের জন্য ধারণাগত এবং আদর্শিকভাবে গত দুই দশকে দেশটিতে যে সংস্কারগুলি প্রবর্তিত হয়েছে, তা তাদের সহায়তায় বা তাদের উত্থানের ফলে ঘটেছে। আরব অঞ্চলের প্রগতিশীল আন্দোলন কট্টর ইসলাম বিরোধী এবং গণতন্ত্রপন্থী। বোধগম্যভাবে, এই ধরনের যেকোনো পদক্ষেপ বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশের অধীনে সাবধানে নস্যাৎ করা হবে, কিন্তু এই আন্দোলনের শিকড় ইতিমধ্যেই ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করেছে।
যখন প্রগতিশীলতার ধারণার মধ্যে এমনভাবে ব্যক্তি স্বাধীনতার সুযোগ এবং একটি ভবিষ্যত রয়েছে যা, রাজনৈতিক ইসলাম এবং ওয়াহাবিবাদের মধ্যে নেই। ফলে উভয়ই দুর্বল হয়ে পড়েছে। সহিংস ওয়াহাবিবাদ ইসলামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় যুদ্ধের সরাসরি লক্ষ্য ছিল না, তবে এটি সউদী আরবের গৃহীত কিছু নীতির বাইরে পড়ে যাওয়ার কারণে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ওয়াহাবিজমের গ্রহনযোগ্যতা কমে যায়। কিন্তু আন্দোলনটি তখনও একটি অস্পষ্ট পরিস্থিতি থেকে উপকৃত হয়েছিল। কারণ ইরাক এবং আফগানিস্তানে ওয়াহাবিবাদ এবং সালাফি-জিহাদিবাদ, যা ইসলামের বিপ্লবী ধারণাগুলিকে সালাফিবাদ এবং ওয়াহাবিবাদের মৌলবাদী শিক্ষার সাথে একীভূত করেছিল, এগুলির মধ্যে পার্থক্য এবং মতানৈক্য সংক্রান্ত জ্ঞানের বিস্তার জনসাধারণের মধ্যে ঘটতে এবং তাদের অনুধাবন করতে কিছুটা সময় লেগেছে।
সালাফি-জিহাদিরা ওয়াহাবিবাদ এবং কট্টর ইসলামপন্থীদের স্থাপিত আদর্শিক অবকাঠামো বা ভিত্তি থেকে লাভবান হয়ে তাদের নিজস্ব স্বতন্ত্র স্থান তৈরি করেছিল, বিশেষ করে ৯/১১ এবং এর পরবর্তী আঞ্চলিক যুদ্ধগুলির পর। আরব বসন্তের সাথে সাথে ওহাবিবাদের আবেদন আরও সঙ্কুচিত হয়ে যায়। কারণ তাদের উদারপন্থী এবং চরম প্রতিদ্বন্দ্বীরা তাদের আধিপত্যের বিরুদ্ধে সঙ্ঘাতে যোগ দেয়। সূত্র : নিউজ লাইন্স ম্যাগাজিন। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।