মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ওয়াহাবিবাদের প্রচারকদের আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া এমনকি ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে লোকদের ধর্মান্তরিত করার অবাধ উপায় ছিল। পারস্য উপসাগরের আরব রাষ্ট্রগুলোতে কর্মরত মুসলিম প্রবাসীদের তাদের নিজ দেশে মসজিদ নির্মাণের ক্ষেত্রে ওয়াহাবিদের তহবিল পাওয়া সহজ ছিল। সউদী দূতাবাসগুলো শিয়া রীতিতে ধর্মান্তরিত করার ওপর নজরদারি করত এবং ওয়াহাবি দাতব্য সংস্থাগুলোর সরবরাহকৃত সব রকমের আর্থিক শক্তি দিয়ে এটিকে প্রতিহত করত।
যেসব পরিবর্তন সাধারণভাবে সউদী আরবকে ওয়াহাবিবাদ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে, সেগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সউদী অধ্যাপক সুলতান আলামের। আলামের গত নভেম্বরে প্রকাশিত তার বিস্তৃত গবেষণায় ২০১১ সালের আরব বসন্তের আগে, বিশেষ করে ১৯৯৮ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সউদী আরবে বৌদ্ধিক পরিবর্তন বা প্রগতিশীল মতাদর্শকে চিহ্নিত করেছেন। তিনি সেই পরিস্থিতিগুলোর ওপর আলোকপাত করেছেন, যা সউদীরা ‘তাইয়ার আল-তানবীর’ (আলোকিতকরণের ঢেউ) বলে থাকে।
আলামের বলেছেন যে, তানবীরিদের কোনো প্রাচীন ভিত্তি নেই। তারা আধুনিক মূল্যবোধ এবং অসাম্প্রদায়িকতা সমর্থন করার জন্য কট্টর ইসলাম এবং ওয়াহাবিবাদ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রবণতা রাখে। তাদের সংখ্যা মনসুর আল-নোগাইদান থেকে সালমান আল-ওদাহ পর্যন্ত ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। এদের মধ্যে রয়েছেন একসময়ের কট্টর ইসলামপন্থী আল-নোগাইদান এতটাই ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে গিয়েছিলেন যে, তিনি টিভিতে বলেছিলেন, মানবতাবাদ তার একমাত্র ধর্ম হয়ে উঠেছে। তারপর তিনি তার দেশ সউদী আরব ছেড়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি নতুন জাতীয়তা গ্রহণ করেন।
আল-ওদাহ ইসলামী জাগরণের একজন প্রাক্তন আদর্শ, যিনি তার প্রগতিশীল ধর্মীয় ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য পরিচিত হয়েছিলেন। তিনি ২০১৭ সালে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে কারাগারে বন্দি হয়েছিলেন। অনেকে বিশ্বাস করেন যে, তার সাথে এটি ঘটেছিল কাতারের ওপর সউদী এবং আমিরাতি নিষেধাজ্ঞা এবং সেবছর সউদী ক্রাউন প্রিন্সের অর্থনৈতিক নীতির কারণে অস্থিরতার বিষয়ে সতর্ক করার জন্য তরুণ অর্থনীতিবিদ এসাম আল-জামিলকে ২০১৭ সালে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়ার বিরোধিতা করার কারণে।
আলামের প্রগতিশীল ধারণার উত্থানের বিষয়ে দুটি সউদী অবস্থান পর্যালোচনা করেছেন। একটি পর্যালোচনা বলছে যে, ৯/১১-এর ঘটনা সমগ্র ইসলামপন্থী স্রোতকে বিচারের সম্মুখীন করেছিল, এটিকে দুর্বল এবং কম জনপ্রিয় করে তুলেছিল। ফলে একটি প্রগতিশীল শক্তিশালী স্রোতের উদ্ভবের জন্য একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছিল। অন্য পর্যালোচনাটি বলছে যে, প্রগতিশীল আন্দোলন ৯/১১-এর আগেই শুরু হয়েছিল, বিশেষত ১৯৯৮ সালে। তবে সেটির মধ্যে উত্তেজনা, নেতিবাচক প্রভাব বা প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা-ভাবনার অভাব ছিল। এটি সংস্কারবাদী ইসলামি ধারণা দ্বারা প্রভাবিত ছিল এবং ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকের কট্টরপন্থী ধারণাগুলো থেকে দূরে সরে যেতে শুরু করেছিল। সেই স্বল্পস্থায়ী আন্দোলনটি ৯/১১ মাধ্যমে ব্যাহত হয়েছিল।
আলামের যুক্তি দেন যে, ৯/১১-পরবর্তী প্রচারাভিযানের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ ছিল ‘ফয়সাল ফর্মূলা’, যার মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কের মতো রাজনৈতিক বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ ব্যাতিরেকে শিক্ষাগত, ধর্মীয় বা সামাজিক ক্ষেত্রে ইসলামপন্থীদের সর্বজনীন আধিপত্যের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে সউদী আরবের ভারসাম্যমূলক নীতিকে বুঝিয়েছেন। এই ভারসাম্যমূলক নীতি বাদশাহ ফয়সাল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যিনি সমাজতন্ত্র, উদারনীতি এবং আরববাদের মতো ব্যাপক মতাদর্শের বিস্তারের বিরুদ্ধে ইসলামপন্থীদের ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন এবং প্রতিরক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করতে চেয়েছিলেন। সূত্র : নিউজ লাইন্স ম্যাগাজিন। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।