Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রাজধানী কিয়েভের চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে লাশ আর আর্তনাদ, ভাঙা ঘরবাড়ি

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৮:৪০ এএম

সূর্যের আলো তখন ফোটেনি। মায়ের গোঁঙানি শুনে উঠে বসি। চারপাশ দেখে থতমত খেয়ে গিয়েছিলাম। ঘরজুড়ে ধুলার চাদর। বাইরে আর্তনাদ। প্রাণভয়ে ছোটাছুটি করছেন পড়শিরা। শুক্রবারের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে শিউরে উঠছিলেন ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বাসিন্দা উইরি জেহানভ। বৃহস্পতিবার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে রাশিয়া। দ্বিতীয় দিন ভোরেই রাজধানী শহরে পৌঁছে গেছে রুশবাহিনী। চলেছে এলোপাথাড়ি গোলাগুলি। তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। জেহানাভের পরিবারের মতো অনেকেই বাক্স-প্যাটরা গুটিয়ে প্রাণ বাঁচাতে সুরক্ষিত জায়গায় ছুটে গিয়েছেন।

ইউক্রেন অভিযানের সময় রাশিয়া জানিয়েছিল, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামলা হবে না। তাদের টার্গেট শুধু সামরিক ও বিমানঘাঁটি। যদিও একথা মানতে চাননি জেহানাভরা। রুশ হামলার ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাড়ির দিকে তাকিয়ে তার বক্তব্য, ‘সেনার সঙ্গে লড়াই করতে হলে তাদের উপর হামলা করুক। দেখুন এখানে কী হচ্ছে?’ কিয়েভের এই বাসিন্দার গলায় একরাশ হতাশার সুর। প্রাণ বাঁচাতে ইউক্রেনবাসী বম্ব শেল্টার, বেসমেন্টে, সাবওয়েতে আশ্রয় নিয়েছে। শহর থেকে একটু দূরে যারা রয়েছেন, তারাও সম্ভাব্য বিপদের প্রহর গুনছেন। মাঝেমধ্যেই বেজে ওঠা বিপদঘণ্টিতে ভয়ে কেঁপে উঠছেন।

ইউক্রেনের রাজধানী শহর কিয়েভের আনাচে-কানাচে ধ্বংসের চিহ্ন। আন্ডারপাশের সামনে চোখে পড়েছে সেনাসদস্যের নিথর লাশ। বিভিন্ন জায়গায় গুলি করে নামানো চপার থেকে কালো ধোঁয়া বেরুতে দেখা গিয়েছে। বোমা-শেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু বাড়ি। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে সেখান থেকে শেষ সম্বল খুঁজছেন স্থানীয়রা। শহরের রাস্তায় টহল দিচ্ছে সামরিক বাহিনীর গাড়ি।

সিনেমায় বহু যুদ্ধ দেখেছে বন্দর শহর মারিউপলের কিশোরী ভ্লাদা। এই প্রথম তা চাক্ষুসও করল এই খুদে। ভাঙাচোড়া বাড়ি, রক্তপাত, বাবা-মায়ের উৎকণ্ঠা দেখে তার কাতর আর্জি, ‘বন্ধ হোক যুদ্ধ। আমি মরতে চাই না। যতদ্রুত সম্ভব মারামারি বন্ধ হোক।’

অন্যদিকে, মাকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন হরলিভকার এক বাসিন্দা। রুশ শেলে মৃত্যু হয়েছে ওই নারীর। কম্বল দিয়ে মুড়ে বাড়ির বাইরেই রাখা হয়েছে লাশ। কান্না ভেজা চোখে ছেলের প্রতিক্রিয়া, ‘মা আর নেই।’

রুশ হামলার ভয়ে অনেকেই পোলান্ডে আশ্রয় নিতে চাইছেন। সংখ্যাটাও কম নয়। সীমান্তের কাছে প্রায় শ' দু’য়ের লোক ঘাঁটি গেড়ে রয়েছেন। সন্তান-সন্ততি নিয়ে সীমান্ত পার হয়েই বেঁচে থাকার ঠিকানা খুঁজছেন তারা।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Jahan ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৫ পিএম says : 0
    bujo ebar Palestine a ki hoe, Yemen a ki hoe.
    Total Reply(0) Reply
  • Ashraf Hossain ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:০৩ পিএম says : 0
    ফিলিস্থিন ,ইরাক, সিরিয়ায় লাশের সারি বছরের পর বছর ধরে চলছে। নির্মম নির্যাতন .। কর্মের ফল ঘুরে ফিরে আসবে । অসংখ্য আফগানিস্তানী, আর অসংখ্য নিরপরাধ মুসলিমের আর্তনাদ । এসব কান্না আর কোনো অর্থ বহন করেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Mostafa Mojumder ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:০৪ পিএম says : 0
    হে আল্লাহ তুমি হেফাজতকারী
    Total Reply(0) Reply
  • Rahmat Ullah ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:০৫ পিএম says : 0
    আমি ইউক্রেন জনসাধারণ কান্না দেখে মোটিও বিচলিত নই,কারন আমি ফিলিস্তিন ইরাক আফগানিস্তান সিরিয়া লিবিয়ান বৃদ্ধ নারী শিশুদের বিবস্ত্র আহাজারি দেখে দেখেই বড় হয়েছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Didarul Hossain Didar ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:০৫ পিএম says : 0
    এই সময় ইউক্রেনের উচিত রাশিয়াকে হামলা না করে ন্যাটো কে হামলা করা উচিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ