পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
দু’দিনের সফরে মস্কোয় অবস্থানরত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গতকাল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে একটি বৈঠক করেছেন যেখানে তিনি দুই দেশের মধ্যে একটি ফ্ল্যাগশিপ অর্থনৈতিক প্রকল্প হিসাবে পাকিস্তান স্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মস্কো এবং কিয়েভের মধ্যে সা¤প্রতিক পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ক্রেমলিন এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতি জারি করে বলেছে যে, দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার প্রধান দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়নসহ বর্তমান আঞ্চলিক বিষয়ে মত বিনিময় করেছেন।
প্রায় তিন ঘন্টা দীর্ঘ বৈঠকের পরে এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও) বলেছে যে, দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাশাপাশি পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার বিলম্বে জারি করা হ্যান্ডআউটে বলা হয়েছে, ‘দুই নেতার মধ্যে সা¤প্রতিক মাসগুলোতে টেলিফোন কথোপকথনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আত্মবিশ্বাস ব্যক্ত করেছেন যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক গতিপথ ভবিষ্যতেও এগিয়ে যেতে থাকবে’।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান একটি উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে ২৩-২৪ ফেব্রæয়ারি রাশিয়ান ফেডারেশনে দুই দিনের সফরে রয়েছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রধানমন্ত্রী যোগ করেছেন যে, সম্পর্ককে চিহ্নিত করে আস্থা ও সৌহার্দ্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও গভীর ও প্রসারিত করবে।
প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তান ও রাশিয়ার মধ্যে একটি ফ্ল্যাগশিপ অর্থনৈতিক প্রকল্প হিসাবে পাকিস্তান-স্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং সম্ভাব্য জ্বালানি-সম্পর্কিত প্রকল্পগুলোতে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী [ইমরান খান] রাশিয়ার সাথে একটি দীর্ঘমেয়াদী, বহুমাত্রিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য পাকিস্তানের প্রতিশ্রæতির ওপর জোর দিয়েছেন’।
আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে, প্রধানমন্ত্রী মানবিক সঙ্কট মোকাবেলা এবং আফগানিস্তানে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দা রোধে প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, পাকিস্তান একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ এবং সংযুক্ত আফগানিস্তানের জন্য আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সাথে কাজ চালিয়ে যাবে। এ বিষয়ে তিনি সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও)সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামে পাকিস্তান ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ওপর জোর দেন।
দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী ইমরান ভারতের অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের (আইআইওজেকে) গুরুতর মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং কাশ্মীর বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের অপরিহার্যতার ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর বিষয়গুলোও তুলে ধরেন এবং আঞ্চলিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে এমন ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে সা¤প্রতিক পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে, পাকিস্তান আশা করেছিল ক‚টনীতি একটি সামরিক সঙ্ঘাত এড়াতে পারে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, সঙ্ঘাত কারো স্বার্থে নয় এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো সর্বদা সঙ্ঘাতের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ‘তিনি পাকিস্তানের বিশ্বাস থেকে জোর দিয়ে বলেন যে, বিরোধগুলো আলোচনা এবং ক‚টনীতির মাধ্যমে সমাধান করা উচিত’।
বিশ্বে চরমপন্থা ও ইসলামোফোবিয়ার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী আন্তঃধর্মীয় স¤প্রীতি ও সহাবস্থানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। মুসলমানরা মহানবী (সা.)-এর প্রতি শ্রদ্ধা ও সংবেদনশীলতার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট পুতিনের উপলব্ধির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তঃধর্মীয় স¤প্রীতি ও সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা সমাজের অভ্যন্তরে ও মধ্যে শান্তি ও স¤প্রীতির জন্য অপরিহার্য।
এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে দু’দিনের সরকারি সফরে গত বুধবার মস্কোয় পৌঁছালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে লাল গালিচায় স্বাগত জানানো হয়। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী ও তার প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইগর মরগুলভ এবং পাকিস্তান দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনারও দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফেডারেল মন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি, ফাওয়াদ চৌধুরী, আসাদ উমর, হাম্মাদ আজহার, বাণিজ্য উপদেষ্টা রাজ্জাক দাউদ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুইদ ইউসুফ এবং জাতীয় পরিষদের সদস্য আমির মাহমুদ কিয়ানিসহ একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল রয়েছেন। সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন ও ডন অনলাইন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।