মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সউদী আরবের অ্যাক্টিভিস্ট লুজেইন আল-হাথলুল ২০২১ সালে তার আইফোনে একটি সন্দেহজনক ফাইল দেখতে পান৷ সেটা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে বিশ্বব্যাপী হ্যাকিংয়ের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে৷
সউদী আরবে নারীদের গাড়ি চালানোর উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ার পক্ষে সোচ্চার ছিলেন লুজেইন আল-হাথলুল৷ ২০১৯ সালে রয়টার্সের এক অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর নজর রাখার একটি প্রকল্পের আওতায় আল-হাথলুলের আইফোন হ্যাক করা হয়েছিল৷ পরে ফোনে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাকে ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি’ বলে আখ্যা দেয়া হয় এবং গ্রেপ্তার করে সউদী আরবে জেলে পাঠানো হয়৷
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আল-হাথলুলকে গুগল জানায় যে, রাষ্ট্র সমর্থিত হ্যাকাররা তার জিমেইল অ্যাকাউন্টে ঢোকার চেষ্টা করেছিল৷ এই ঘটনায় তিনি তার আইফোন হয়ত আবারও হ্যাক হয়ে থাকতে পারে, বলে আশঙ্কা করেন৷ তাই বিষয়টি তিনি ক্যানাডার ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা ‘সিটিজেন ল্যাব’কে জানান৷
সিটিজেন ল্যাবের গবেষকরা আল-হাথলুলের আইফোন নিয়ে প্রায় ছয় মাস গবেষণা করেন৷ এই সময় তারা আইফোনে একটি স্পাইওয়্যার দেখতে পান, যা ‘জিরো ক্লিক’ নামে পরিচিত৷ এমন নামকরণের কারণ, এই স্পাইওয়্যার দিয়ে ফোন হ্যাক করতে ব্যবহারকারীকে কোনো লিংক পাঠাতে হয় না৷ অতীত অভিজ্ঞতা থেকে সিটিজেন ল্যাবের গবেষকরা নিশ্চিত হন যে, স্পাইওয়্যারটি ইসরাইলি কোম্পানি এনএসও গ্রুপের তৈরি৷
বিল মার্সজাক-সহ (ছবি) সিটিজেন ল্যাবের গবেষকরা দেখতে পান, অদৃশ্য টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে আল-হাথলুলের আইফোনে ইমেজ ফাইল পাঠিয়ে স্পাইওয়্যার ঢোকানো হয়েছিল৷ এই ফাইলগুলো আইফোনের সিস্টেমকে বোকা বানিয়ে ফোনের পুরো মেমোরিতে ঢুকে পড়েছিল৷ কিন্তু তথ্য চুরির পর একটি ইমেজ ফাইল আল-হাথলুলের আইফোনে থেকে যায়৷ আর সেটাই হচ্ছে প্রমাণ৷
আল-হাথলুলের আইফোন থেকে পাওয়া এই তথ্যপ্রমাণ অ্যাপলকে দিয়েছিল সিটিজেন ল্যাব৷ অ্যাপল তখন বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ব্যবহারকারীদের বার্তা দিয়ে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিল৷ এই ব্যবহারকারীদের মধ্যে উগান্ডায় মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত অন্তত নয়জন কর্মকর্তাও আছেন৷ এছাড়া এনএসওর বিরুদ্ধে গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আদালতে মামলা করে অ্যাপল৷
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত নভেম্বরে এনএসওকে কালো তালিকাভুক্ত করে৷ ফলে মার্কিন কোম্পানিগুলো এনএসওর সফটওয়্যার বিক্রি করতে পারবে না৷ তাদের এমন সিদ্ধান্তের কারণ জানাতে গিয়ে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, অ্যাক্টিভিস্ট, অ্যাকাডেমিক ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের’ উপর নজরদারি করতে এনএসওর স্পাইওয়্যার ব্যবহৃত হয়েছে৷
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ফোন হ্যাক করার সফটওয়্যার কিনেছে৷ কারণ এর মাধ্যমে অনলাইনে এমন সব নজরদারি করা যাচ্ছে, যা আগে শুধু এলিট কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষে সম্ভব ছিল৷ ফলে স্পাইওয়্যার তৈরির কোম্পানিগুলো রমরমা ব্যবসা করছে৷ তবে গত কয়েক বছরে সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্টরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে এসব কোম্পানির সংশ্লিষ্টতার বিভিন্ন প্রমাণ সামনে নিয়ে এসেছেন৷
সরকারি কর্মকর্তা ও ভিন্নমতাবলম্বীদের উপর নজরদারির অভিযোগ প্রসঙ্গে এনএসওর এক মুখপাত্র বলেন, তারা হ্যাকিং টুল বিক্রি করেন, ব্যবহার করেন না - ‘সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা এই কাজ করে’৷ এনএসও দাবি করছে, তাদের টুল নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করে এবং ‘হাজার হাজার প্রাণ বাঁচিয়েছে’৷ সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।