Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সবচেয়ে বড় যুদ্ধের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া : বরিস জনসন

উসকানির জবাব দেবে না ইউক্রেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তথ্যপ্রমাণ বলছে, রাশিয়া ১৯৪৫ সালের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় যুদ্ধের পরিকল্পনা করছে। এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তার দেশ উসকানির জবাব দেবে না।
গতকাল বিবিসির সোফি রাওয়ার্থকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বরিস জনসন। তিনি জার্মানির মিউনিখ শহরে বসে এ সাক্ষাৎকার দেন। একটি বার্ষিক নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে বিশ্বনেতারা এখন মিউনিখে জড়ো হচ্ছেন। বরিস জনসনও এ সম্মেলনে যোগ দিতে মিউনিখে গেছেন। সাক্ষাৎকারে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব লক্ষণ বলছে যে পরিকল্পনার (যুদ্ধের) বাস্তবায়ন ইতিমধ্যে এক অর্থে শুরু হয়ে গেছে। বরিস জনসন বলেন, গোয়েন্দা তথ্য বলছে, রাশিয়া এমনভাবে আগ্রাসন শুরু করতে চায়, যা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভকে ঘিরে ফেলবে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধে যে শুধু জীবনেরই ক্ষয় হবে, তা মানুষকে বুঝতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ইউক্রেন সীমান্তে ১ লাখ ৬৯ হাজার থেকে ১ লাখ ৯০ হাজারের মতো রুশ সেনা মোতায়েন রয়েছে। এ সংখ্যার মধ্যে পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও আছে। পশ্চিমা দেশগুলোর কর্মকর্তারা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সতর্ক করে বলছেন, রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে। তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে পশ্চিমাদের এমন দাবি অস্বীকার করা হচ্ছে। মস্কোর ভাষ্য, সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে তারা সীমান্তে সেনা সমাবেশ ঘটিয়েছে। যুদ্ধ বাধানোর কোনো ইচ্ছা মস্কোর নেই।

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন এখনো আসন্ন বলে মনে করেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বরিস জনসন বলেন, তথ্যপ্রমাণ তেমনটাই ইঙ্গিত করছে বলে তিনি ভয় পাচ্ছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, সত্যি হলো, সব লক্ষণ বলছে, পরিকল্পনাটির বাস্তবায়ন ইতিমধ্যে এক অর্থে শুরু হয়ে গেছে। বরিস জনসন বলেন, ‘আমি বলতে ভয় পাচ্ছি যে আমরা যে পরিকল্পনাটি দেখছি, তা এমন কিছুর জন্য, যা সত্যিই মাত্রাগতভাবে ১৯৪৫ সালের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ হতে পারে।’

এদিকে, গতকাল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বিশ্বনেতাদের বলেছেন, রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষা করবে ইউক্রেন। তবে তারা কোন উসকানির জবাব দেবে না। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে দেশটির সরকারি সেনাদের রক্তক্ষয়ী সংঘাত মারাত্মকভাবে বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এমন কথা বললেন জেলেনস্কি।

ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে দেশটির সরকারি সেনাদের টানা তিন দিন ধরে গোলাগুলি চলছে। এ ঘটনায় ইউক্রেনের দুই সেনা নিহত হয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন দাবি অস্বীকার করেছে মস্কো। পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, ইউক্রেন আক্রমণের অজুহাত হিসেবে ইউরোপের পূর্বাঞ্চলে একটি ভুয়া সঙ্কট সৃষ্টির চেষ্টা করছে রাশিয়া।
জার্মানির মিউনিখে একটি নিরাপত্তা সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেনীয়রা আতঙ্কিত নয়। আমরা আমাদের মতো করে বাঁচতে চাই।’ মার্কিন কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির জন্য এখন দেশের বাইরে যাওয়া নিরাপদ নয়, তা সত্ত্বেও তিনি মিউনিখ সফরে যান। ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে ইউক্রেনের সরকারি সেনাদের সংঘাত নাটকীয় মোড় নিয়েছে। ইতিমধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ইউক্রেন সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধপ্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছে।

পূর্ব ইউক্রেনের স্বঘোষিত প্রজাতন্ত্র দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর)। দোনেৎস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা দেনিশ পুশিলিন। তিনি যুদ্ধ করতে সক্ষম, এমন বয়সী পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুশাঙ্কস অঞ্চলের সব নাগরিককে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ (ডিক্রি) জারি করেছেন। সূত্র : বিবিসি নিউজ, রয়টার্স। (আরো খবর পৃষ্ঠা ৬)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইউক্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ