Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধ্বংসাত্মক অভিযান যেকোনো সময়, সতর্কতা যুক্তরাষ্ট্রের

৮ দেশের নাগরিকদের ইউক্রেন ত্যাগ করার আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৮ এএম

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে ‘যেকোনও সময়’ আক্রমণ শুরু করতে পারে রাশিয়া। বিমান থেকে বোমা হামলার মধ্যে দিয়ে এই ধ্বংসাত্মক অভিযান শুরু হতে পারে। এতে বেসামরিকদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়বে। তবে অভিযোগ নাকচ করে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, পশ্চিমাদেশগুলো গুজব ছড়াচ্ছে। ইউক্রেনে সামরিক অভিযান নিয়ে রাশিয়ার সবশেষ অবস্থান কি, এ নিয়ে শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে আসেন জ্যাক সালিভান। তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট ভবিষ্যতদ্বাণী করতে পারি না, কী ঘটতে যাচ্ছে আমরা ঠিকটা জানি না। কিন্তু যা দেখা যাচ্ছে ঝুঁকি যথেষ্ট। তিনি যোগ করেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রে আক্রমণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা তা জানা নেই। সামরিক অভিযানের জন্য ক্রেমলিন শুধু একটি অজুহাত খুঁজছে। বিমান থেকে ব্যাপক বোমা হামলার মধ্যে দিয়ে তারা এই অভিযান শুরু করতে পারে। সালভিনের ব্যক্তব্যের আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থোনি ব্লিঙ্কেন বলেন, সীমান্ত রুশ সেনা বৃদ্ধি অত্যন্ত উদ্বেগজনক লক্ষণ। বেশিরভাগ পশ্চিমাদেশগুলোই আশঙ্কা করছে রুশ হামলার আর বেশি দেরি নেই। সীমান্তে দেড় লক্ষাধিক সেনার তৎপরতাই তা বলে দিচ্ছে। এরইমধ্যে চারটি দেশ তাদের নাগরিকদের ইউক্রে ছাড়ার তাগিদ দিয়েছে। যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, তাদের যে নাগরিকরা ইউক্রেনে আছেন তারা যেন বাণিজ্যিক এয়ারলাইনসের চলাচল থাকতে থাকতেই দেশটি ছেড়ে আসেন। বিবিসির খবরে বলা হয়, আট দেশ তাদের নাগরিকদের দ্রুত ইউক্রেন ছাড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। যেকোনো সময় ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা করতে পারে এমন আশঙ্কায় এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শনিবার আল-জাজিরাসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর প্রকাশিত হয়েছে। যেসব দেশ নিজেদের নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়তে বলেছে, সেসব দেশ হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ডস ও লাটভিয়া। এদিকে শুক্রবার হোয়াট হাউজ থেকে বলা হয়েছে, রুশ সামরিক বাহিনী যেকোনো দিন ইউক্রে আক্রমণ করতে পারে। আক্রমণের সূত্রপাত একটি বোমা হামলার মাধ্যমে হতে পারে। উল্লেখ্য, ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রে সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সালিভান বলেছেন, “রাশিয়ার বাহিনীগুলো এখন একটি বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার মতো অবস্থানে আছে। কী হতে যাচ্ছে তা নির্দিষ্টভাবে জানি না আমরা, কিন্তু ঝুঁকি এখন খুব বেশি এবং আসন্ন হুমকির মুখে অবিলম্বে (ইউক্রেন) ছেড়ে আসাই বিচক্ষণ হবে।” রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছেন কি না, তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন ‘জানেনা’ বলে জানিয়েছেন সালিভান কিন্তু বলেছেন, ক্রেমলিন সামরিক অভিযান চালানোর অজুহাত খুঁজছে এবং আকাশপথে ব্যাপক বোমাবর্ষণের মধ্য দিয়ে তা শুরু হতে পারে। গত সপ্তাহে ইউক্রেনের সীমান্তে রাশিয়ার আরও সেনা মোতায়েন ও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কৃষ্ণ সাগরে সামরিক মহড়া শুরু করার পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সতর্ক করার পর সালিভান এসব মন্তব্য করলেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছিলেন, ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা বাড়ানোর বিষয়টি ‘দেশটির তৎপরতা বৃদ্ধির খুবই উদ্বেগজনক লক্ষণ’। তিনি বলেছেন, “আমরা এমন একটি জানালায় আছি যখন আগ্রাসন যেকোনো সময় শুরু হতে পারে আর স্পষ্ট করে বলতে গেলে, অলিম্পিকের সময়ও হতে পারে (বেইজিংয়ে চলা শীতকালীন অলিম্পিক ২০ ফেব্রুয়ারি শেষ হবে) ।” প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, রাশিয়ার অভিযান শুরু হওয়ার পর কোনো মার্কিন নাগরিক যদি ইউক্রেনে আটকা পড়ে তবে তাকে উদ্ধার করতে সেখানে সেনা পাঠাবেন না তিনি। শুক্রবার এক ভিডিও কলে আটলান্টিকের দুই পারের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাইডেন। এই আলোচনায় তারা একমত হয়েছেন, রাশিয়া যদি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালায় তবে দেশটিকে গুরুতর অর্থনৈতিক পরিণতির মুখোমুখি করতে তারা সমন্বিত পদক্ষেপ নেবেন। এরমধ্যে পোল্যান্ডে আরও তিন হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব সেনা আগামী সপ্তাহেই পোল্যান্ডে হাজির হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা ইউক্রেনে লড়াই করবে না কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। শনিবার বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতিবেশী বেলারুশে ব্যাপক একটি সামরিক মহড়া শুরু করেছে রাশিয়া আর ইউক্রেন অভিযোগ করে বলেছে, তাদের সমুদ্রে প্রবেশের পথ বন্ধ করে রেখেছে রাশিয়া। রাশিয়া বলেছে, প্রতিবেশী সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ইউক্রেন যাতে নেটোতে যোগ না দেয়, তা নিশ্চিত করতেই ‘রেড লাইন’ প্রয়োগ করতে চায় তারা। বিবিসি, আল-জাজিরা, রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাষ্ট্র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ