নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মাঠের লড়াইয়ে দেরী থাকলেও মেগা খেলোয়াড় নিলাম দিয়ে আজ থেকেই বলতে গেলে গোড়াগত্তন গতে যাচ্ছে আসন্ন আইপিএলের। আগামী দুই দিন ব্যাঙ্গালুরুর অভিজাত হোটেল আইটিসি গার্ডেনিয়ায় বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১১টায় শুরু হতে যাচ্ছে এবারের খেলোয়াড় নিলাম। এবার বেশ বড়সড় কলেবরেই হতে যাচ্ছে এই নিলাম। কারণ মূলত দুটি। বাজারে গুঞ্জন, এবারই শেষবারের মতো মেগা নিলাম আয়োজন করতে যাচ্ছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। দলগুলো যেন শক্তি বাড়ানোর জন্য নিলামের জন্য বসে না থেকে নিজ নিজ অ্যাকাডেমির মাধ্যমে নতুন খেলোয়াড়দের তুলে আনে, এ কারণে নিলাম-সংস্কৃতি থেকে আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসছে বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এই টুর্নামেন্ট, এমন কথাই শোনা যাচ্ছে।
আরেকটা কারণ, ২০১১ সালের পর এই প্রথম আইপিএলে আটটার জায়গায় খেলবে দশ দল। বেশি দল মানে বেশি খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ, আর বেশি খেলোয়াড়ের অংশগ্রহণ মানেই নিলামের টেবিলে বেশি উত্তেজনা। সেই উত্তেজনার পারদ ছড়াবে বাংলাদেশেও। কেননা এদেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসানসহ কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান, মারকাটারি ওপেনার লিটন দাস ও দুই তরুন পেসার তাসকিন আহমেদ আর শরিফুল ইসলাম যে আছেন এবারের নিলামে।
শুরুতে ভারত ও অন্যান্য দেশ মিলিয়ে মোট ১ হাজার ২১৪ জন ক্রিকেটার নাম তুলেছিলেন নিলামে। ১০টি দলের আগ্রহের ভিত্তিতে সে তালিকা নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে- ৫৯০ জনে। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর অনুরোধের ভিত্তিতে নতুন করে ৪৪টি নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নিলাম শেষে স্কোয়াডে সর্বনিম্ন ১৮ জন থেকে সর্বোচ্চ ২৫ জন খেলোয়াড় থাকতে হবে। সর্বোচ্চ আটজন বিদেশি খেলোয়াড় রাখা যাবে স্কোয়াডে। এই তালিকায় অবধারিতভাবে বাংলাদেশের আগ্রেহের কেন্দ্রে থাকবেন সাকিব। কেননা কলকাতা নাইট রাইডার্স সাকিবকে ধরে না রাখায় এবার নিলামে তাঁকে কেনার সুযোগ থাকছে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর।
টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় সেরা এই অলরাউন্ডারকে গত বছর নিলামে ৩.২ কোটি রুপিতে কিনে নিয়েছিল কলকাতা। গত বছর আইপিএলে সাকিবের পারফরম্যান্স তেমন সন্তোষজনক ছিল না। ৮ ম্যাচে ৪৭ রান এবং ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। অলরাউন্ডারদের মধ্যে এক দশকের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিক সাকিবকে এবার কিনতে পারে কোন দল?
কলকাতার হয়ে ২০১১ সালে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে আইপিএলে অভিষেক সাকিবের। ভারতের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে ৭১ ম্যাচে ৭৯৩ রান ও ৬৩ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। কলকাতা ছাড়াও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেন তিনি। এবার নিলামে সাকিবের ভিত্তিমূল্য ২ কোটি রুপি। সবচেয়ে দামি ক্রিকেটারের শ্রেণিতে আছেন বাংলাদেশের সাকিব ও মুস্তাফিজ। নিলামে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর যে সাকিবের ওপর চোখ থাকবে, তা বলাই বাহুল্য। তবে সাকিবকে সবচাইতে বেশি প্রয়োজন তার সাবেক দল কলকাতা, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের।
অনেকেই বলে থাকেন, আইপিএলে সাকিবের ‘ঘর’ কলকাতা নাইট রাইডার্স। কলকাতার মানুষ যেমন সাকিবকে পছন্দ করেন, তেমনি ফ্র্যাঞ্চাইজিটির সঙ্গেও নিবিড় সম্পর্ক আছে বাংলাদেশ তারকার। দুবার বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের মালিকানাধীন এই দলটির হয়ে আইপিএলে শিরোপার (২০১২ ও ২০১৪) দেখা পেয়েছেন সাকিব। সম্প্রতি বিপিএল দিয়ে ফর্মে ফেরায় তাঁকে দলে ফেরাতে পারে কলকাতা। বিপিএলে টানা চার ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন সাকিব।
টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটে-বলে সমান দক্ষ খেলোয়াড়ের কদর বেশি। সাকিব নিজের দিনে ব্যাটিং কিংবা বোলিংয়ে একা ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য রাখেন। তা ছাড়া কলকাতার হয়ে সাকিবের পারফরম্যান্সও বেশ ভালো। এবার কলকাতা তাঁকে নিলে অভিজ্ঞতা বিচারে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির নেতৃস্থানীয় খেলোয়াড়দের কাতারে তুলে আনা হতে পারে। বাংলাদেশ দলে সাকিব টপ অর্ডারে ব্যাট করে থাকলেও ছয়ে ও সাতে নেমেও এর আগে জিতিয়েছেন কলকাতাকে। যেহেতু যেকোনো পজিশনে ব্যাট করতে পারেন, কলকাতা বিষয়টি মাথায় রেখে সাকিবকে ফেরাতে পারে। এর পাশাপাশি তার স্পিন বোলিংয়ের বিষ যে কেউই ব্যবহার করতে চাইবে।
কলকাতা যেমন সাকিবের আরেক ‘ঘর’, তেমনি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর অবস্থানও এবি ডি ভিলিয়ার্সের হৃদয়ের খুব কাছাকাছি। গত নভেম্বরে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার আগপর্যন্ত ব্যাঙ্গালুরুতে আলো ছড়িয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স।
মিডল অর্ডারে ডি ভিলিয়ার্সের শূন্যতা এবার পূরণ করতে চাইবে ব্যাঙ্গালুরু। এত দিন তো তার ওপরই সওয়ার ছিল দলটির মিডল অর্ডার। এখন শূন্যতা পূরণে দলটি এমন খেলোয়াড় চাইবে, যিনি একই সঙ্গে অভিজ্ঞ এবং চাপ নিতে পারেন। খেলাতে পারেন ব্যাটিংয়ে নামা অন্য প্রান্তের সতীর্থদের। ব্যাঙ্গালুরুর এই সমস্যার সমাধান হতে পারেন সাকিব। টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে ব্যাঙ্গালুরুর মিডল অর্ডার একাই টেনে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি।
বিরাট কোহলি ও এবি ডি ভিলিয়ার্স এত দিন ব্যাঙ্গালুরুর ব্যাটিং সামলেছেন। বাকিরা এখনো ধারাবাহিক হয়ে উঠতে পারেননি। ডি ভিলিয়ার্স চলে যাওয়ায় তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই সাকিবের মতো অভিজ্ঞ কাউকে খুঁজবে ব্যাঙ্গালুরু। তাঁকে নিলে মাঠে নেমে অন্তত ৬ নম্বর বোলারের অভাব বোধ করতে হবে না ব্যাঙ্গালুরুকে। এর পাশাপাশি ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিংয়ের দক্ষতা তো আছেই।
২০১৮ সালে সাকিবকে কিনেছিল সানরাইজার্স। ফ্র্যাঞ্চাইজিটির হয়ে একবার ফাইনালও খেলেন। এমনিতেই মিডল অর্ডার নিয়ে যথেষ্ট দুশ্চিন্তা আছে সানরাইজার্সের। নিলামে তাই সবার আগে দলের মিডল অর্ডার ঠিক করার কথা ভাববে দলটি। এবার কেইন উইলিয়ামসনের পাশাপাশি আবদুল সামাদ ও উমরান মালিককে ধরে রেখে বেশ চমকেও গেছে সানরাইজার্স। উইলিয়ামসন ওপেনিং কিংবা তিনে খেলতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ব্যাটিং অর্ডারে নিচের দিকে অভিজ্ঞ ও ভালো ব্যাটসম্যান প্রয়োজন সানরাইজার্সের। সাকিবকে নিয়ে সমস্যাটা কাটিয়ে উঠতে পারে দলটি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।