বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হলের প্রভোস্টের পদত্যাগের সূত্র ধরে উপাচার্যের পতনের আন্দোলনে সৃষ্ঠ অচলাবস্থা ও যাবতীয় সংকট সমাধানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গতকাল সিলেটে গিয়ে আন্দোলরত শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা করেছেন। আলোচনা শেষে উপাচার্যকে সরানোর বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আচার্যকে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল সকাল ৮ টা ৫০ মিনিটে সিলেটে পৌঁছে বেলা ৩ টা থেকে শুরু করে ৩ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা শেষে সন্ধ্যা ৬ টা ৪০ মিনিটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোকে অত্যন্তই যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমরা মনে করি শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দলের সাথে আমাদের খুবই ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তাদের দাবিগুলোর কয়েকটি ইতোমধ্যেই আমরা মেনে নিয়েছি এবং কয়েকটি নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি আর কিছু দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা উদ্যোগ নেব কারণ আমরা দেখলাম তাদের দাবির অধিকাংশই সার্বিকভাবে শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়ন, শিক্ষকদের মানোন্নয়ন সম্পর্কিত। আমাদের সবার লক্ষ্যও তাই। আমরাও চাই শিক্ষার মান উন্নয়ন হোক। আমরা চাই খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসুক।
উপাচার্যকে অপসারণের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, উপাচার্যকে অপসারণে তাদের একটি দাবি ছিল সে বিষয়ে আমরা আগেও তাদের সাথে কথা বলেছি। তারা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেছে। আমরা তাদের কথা অত্যন্ত মনোযোগ সহকারে শুনেছি। তাদের যে বক্তব্য তা সম্পর্কে আমরা মহামান্য আচার্যকে অবহিত করবো, যেহেতু আচার্যই একজন উপাচার্যকে নিয়োগ দেন কিংবা অপসারণ করেন। বাকি সিদ্ধান্ত মহামান্য আচার্য গ্রহণ করবেন।
এদিকে গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলার পর থেকে দীর্ঘ ২৫ দিন নিজ বাসভবন থেকে বের হননি উপাচার্য। তবে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে শিক্ষক প্রতিনিধিদের বৈঠকে অংশ নিতে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গোয়েন্দা সংস্থার কড়া নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে উপাচার্যের কার্যালয়ে প্রবেশ করেছেন তিনি। শিক্ষকদের সাথে বৈঠক শেষে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম শিক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে বলেন, কার নির্দেশে হামলা হয়েছে সেটি তদন্ত সাপেক্ষ ব্যাপার। এ বিষয়ে আচার্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগ পর্যন্ত বর্তমান উপাচার্যকে স্বাভাবিক নিয়মে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। উপাচার্য হিসেবে তিনি তার দায় এড়াতে পারেন না। শিক্ষামন্ত্রী উপাচার্যকে এ বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং সব পক্ষের সহায়তায় আসন্ন বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পূর্বের মতো জৌলুস নিয়ে পালন করতে বলেছেন।
শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনার পূর্বে শিক্ষার্থীরা জানায়, শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনায় উপাচার্যকে সরিয়ে নিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা চালু, দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার, বন্ধ করে দেয়া সকল একাউন্ট চালু, আহত সজল কুন্ডুকে এককালীন আর্থিক সহযোগিতা প্রদান ও যোগ্যতা অনুযায়ী ৯ম গ্রেডের চাকরী প্রদান, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বাজেট বৃদ্ধি, পরীক্ষায় কোডিং পদ্ধতি কার্যকর, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পিএইচডি ও ডেমো ক্লাসের বিধি অনুসরণ, বছরে ৩৬৫ দিন আবাসিক হল খোলা রাখা এবং অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল দম্পতিকে এমিরেটাস অধ্যাপক ঘোষণার বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন তারা। এ উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মুহাইমিনুল বাশার রাজ, ইয়াসির সরকার, নাফিসা আনজুম, সাব্বির আহমেদ, আশিক হোসাইন মারুফ, সাবরিনা শাহরিন রশীদ, সুদীপ্ত ভাস্কর, শাহরিয়ার আবেদিন, আমেনা বেগম, মীর রানা ও জাহিদুল ইসলাম অপূর্বকে প্রতিনিধি করে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনার জন্য পাঠানো হয়। এর আগে থেকেই ধীরে ধীরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে জড়ো হতে থাকে তারা। এরপর সন্ধ্যা ৬ টা ১০ মিনিটে সেখান থেকে প্ল্যাকার্ড হাতে উপাচার্য বিরোধী নানান স্লোগান সহকারে এক বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে তারা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করতে শিক্ষামন্ত্রী সিলেটে আসবেন বলে জানিয়ে প্রেস ব্রিফিংকালে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সংকট সমাধানের লক্ষ্যে অনলাইন বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরাসরি ক্লাস-পরীক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সরাসরি সম্পৃক্ততা কামনা করেন
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।