Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম

| প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৯ এএম

প্রশ্ন : কবরে লাশ দাফনের পর, আমার এলাকার আলেমগণ ওয়ারিশ সহকারে সওয়াল জওয়াব করেন। এতে নাকি মুর্দারের উত্তর দিতে সুবিধা হয়। এটা কি ঠিক?
উত্তর : না। এমন কোনো নিয়ম শরিয়তে স্বীকৃত নয়। মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পর লোকজন কিছুটা দূরে সরে গেলেই ফেরেশতাদের প্রশ্নোত্তর শুরু হয়। কবরের বাইরে থেকে ওয়ারিশান বা হুজুররা কোনো নির্দেশনা দিলেও কবরে শায়িত ব্যক্তির এতে কোনো উপকার হয় না। এটি নির্ভর করে প্রথমত আল্লাহর রহমত ও পরে মৃত ব্যক্তির ঈমান আমলের ওপর। এক হাদিসে পাওয়া যায়, স্বয়ং নবী করিম সা. জনৈক মৃতের কবর পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘আসসাবাত, আসসাবাত’ অর্থাৎ প্রশ্নোত্তরের সময় দৃঢ় থাক। এ ঘটনা জীবনে আর কখনো ঘটেনি। সাহাবায়ে কেরাম এটিকে সুন্নত বা শরিয়ত হিসেবে গণ্য করেননি। অতএব, ঢালাওভাবে এমন কোনো আমল করা ঠিক হবে না। অবশ্য মৃত্যু শয্যায় কোনো ব্যক্তিকে কালেমার কথা স্মরণ করানো বা তার সামনে কালেমা পাঠ করে তার দৃষ্টি আকর্ষণ সুন্নতে পাওয়া যায়। শরিয়ত যাকে ‘তালকীন’ বলে। এটিও খুব সহৃদয়ভাবে দু’য়েকবার মৃত্যুপথযাত্রী ব্যক্তির সামনে উচ্চারণই যথেষ্ঠ। তার মুখ থেকে উচ্চারণ শোনা জরুরি নয়। হাদিসে তাকে বিরক্ত করতেও মানা করা হয়েছে। এমন যেন না হয়, মৃত্যু যন্ত্রণার অস্থিরতায় তার মুখ থেকে যেন ‘পড়ব না, তোমরা সরে যাও’ এ ধরনের কোনো বিরক্তি সূচক উক্তি না বের হয়। কালেমা তার অন্তরে থাকায় যথেষ্ঠ।
প্রশ্ন : আমি দাড়িতে কালো/ব্রাউন কালার কলপ দিতে পারব কি না ? দয়া করে জানাবেন ?
উত্তর : দাঁড়িতে কলপ দেয়া জায়েজ। কড়া কালো রঙ না দেয়া ভালো। কেননা, এটি মাকরূহ। উত্তম হলো মেহেন্দি দেয়া। এ ছাড়া হারবাল কালার দেয়া যায়। ব্রাউন/অ্যাশ/ব্লু বা মিশ্র রঙ দেয়া যায়। শর্ত হলো, রঙ যেন চুল-দাঁড়ির সাথে নিঃশেষে মিশে যায়। আলাদা আবরণ হয়ে লেগে না থাকে। চামড়া বা চুলে রঙয়ের আবরণ লেগে থাকলে অজু-গোসলে সমস্যা হতে পারে। তখন অবস্থাভেদে এটি মাকরূহে তাহরিমি থেকে নাজায়েজ পর্যন্ত হতে পারে। তাই নিখুঁত ও নির্দোষ খেজাব ব্যবহার করতে না পারলে চুল-দাড়ি সাদা রেখে দেয়াই ভালো। এ সম্পর্কিত যত হাদিস আছে-সে সবের সারসংক্ষেপ এই, নবী সা. বলেছেন, বার্ধক্য ও সাদা চুল-দাড়ি ঈমানদারের জন্য আল্লাহর নূরের মতো। এসবের বিকৃত করা চাই না। সৈনিক ও বিখ্যাত ব্যক্তিদের জন্য বলা হয়েছে, তোমরা চুল-দাড়িতে খেজাব (মেহেন্দি বা নির্দোষ কলপ) ব্যবহার কর। অমুসলিমদের বিপরীত সংস্কৃতি পালন কর। এটা দুষমনদের মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্য। যেন তারা মুসলিম হিরোদের বার্ধক্যে আনন্দ না পায়। কুচকুচে কালো খেজাব দিওনা। এতে আল্লাহর দেয়া বার্ধক্যকে অপছন্দ করা এবং তারুণ্যকে অধিক পছন্দ করার আলামত দেখা যায়। যা আখেরাতপন্থী চিন্তার সাথে সাংঘর্ষিক। এ জন্য হাদিসে এসেছে, অকারণে কুচকুচে কালো খেজাব ব্যবহারকারীর চেহারা কালো হোক। শরিয়তে তাই এটি মাকরূহ। সাহাবিদের অনেকেই খেজাব ব্যবহার করেছেন। আল্লাহর রাসূল সা. স্বীকৃতি দিয়েছেন। এ জন্য এটি সুন্নত। শরিয়তসম্মত কিছু কারণে খেজাব ব্যবহার করা অনুমোদিত। মাকরূহ পদ্ধতি বেছে চলতে হবে। কোনো কারণ না থাকলে সাদা রঙকে বরণ করাই উত্তম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ