চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
তিনি আরও বলেন : হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না। তারা এক অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যারাই তাদেরকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ (এসব)। জালিম সম্প্রদায়কে সুপথে পরিচালিত করেন না। বস্তুতঃ যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে, তাদেরকে আপনি দেখতে পাবেন যে, দৌড়ে গিয়ে তাদেরই মধ্যে প্রবেশ করে এবং তারা বলে, আমরা আশংকা করি যে, আমাদেরকে কোন বিপদ এসে আক্রমন করে নাকি। অতএব সেদিন বেশী দুরে নয়, যেদিন আল্লাহ বিজয় প্রকাশ করবেন অথবা নিজের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ দিবেন, ফলে সেদিন তারা স্বীয় মনোভাবের জন্য অনুতপ্ত হবে। মুমীনগণ বলবে- এরা কি সেই সব লোক, যারা আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা করে বলত যে আমরা তোমাদের সাথে আছি! তাদের কর্মফল বিফল হয়ে গেছে, ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্থ। (সূরা মায়েদা : ৫১-৫৩)।
রসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বন্ধু নির্বাচনে মুমিনগণকে সতর্ক করেছেন। যেমন- হযরত আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু)। থেকে বর্ণিত। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : কোন ব্যক্তি তার বন্ধুর দ্বীনের অনুসারী হয়ে থাকে। কাজেই খেয়াল রাখা উচিত সে কেমন বন্ধু নির্বাচন করছে। (আবু দাউদ ও তিরমিযী)।
মুসলিম নামধারী হয়েও যারা কুরআনের বিধান ও রসূলের আদর্শকে অপছন্দ করে, নায়েবে রসূল ওলামায়ে কেরামদের সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আল্লাহর বিধান ও রসুলের আদর্শ পরিত্যাগ করে মুসলিম জাতির উপর তাদের মনগড়া আদর্শ, মানব রচিত মতবাদ, বিধি-বিধান, আইন-কানুন ও জাহেলী রসম-রেওয়াজ চাপিয়ে দিয়ে মুসলমানদেরকে দ্বীন থেকে বিচ্যুত করতে চায়- তাদের সাথে প্রকৃত মুমীনদের কোন অর্থনৈতিক সম্পর্কও থাকতে পারেনা। তাদের কোন প্রকার হাদিয়া-তোহফা, অনুদান বা সাহায্য গ্রহণ করা সমীচীন নয়। কারন এরা মাসজিদ, মাদ্রাসা, লিল্লাহ বোডিং-এ সাহায্যের অন্তরালে দ্বীনদার মুসলমানদের উপর তাদের মনগড়া আদর্শ, মানব রচিত মতবাদ, বিধি-বিধান, আইন-কানুন ও জাহেলী রসম-রেওয়াজ চাপিয়ে দিয়ে তাদেরকে দ্বীন থেকে বিচ্যুত করতে চায়। এ প্রসংগে আল্লাহ তায়ালা বলেন : আপনি বলুন! ‘তোমরা আল্লাহর পথে স্বেচ্ছায় ব্যয় কর অথবা অনিচ্ছায় বাধ্য হয়ে ব্যয় কর, তোমাদের দান কখনোই কবূল করা হবে না। নিশ্চয়ই তোমরা হলে পাপাচারী জাতি। (আল্লাহর পথে)। মুনাফিকদের অর্থসাহায্য গ্রহণ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এ কারণে যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করে, অবহেলার সাথে সালাতে উপস্থিত হয় এবং অনিচ্ছায় বাধ্য হয়ে অর্থ সাহায্য করে। কাজেই তাদের অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন আপনাকে বিস্মিত ও বিমুগ্ধ না করে। নিশ্চয় আল্লাহ অর্থ-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়েই তাদেরকে পৃথিবীতে শাস্তি দিতে চান এবং কাফির অবস্থাতেই তাদের মৃত্যু হবে। (সূরা তওবা : ৫৩-৫৫)।
কাফির, মুশরিক, মুনাফিক, ইহুদী, নাছারা এবং যারা কুরআনের বিধান ও রসূলের আদর্শকে অপছন্দ করে, নায়েবে রসূল ওলামায়ে কেরামদের সাথে শত্রুতা পোষণ করে- ঐ সব নামধারী মুসলিমদের কোনরূপ বিশ্বাস বা আস্থা রাখা প্রকৃত মুমিনদের জন্য সমীচীন নয়। এ প্রসংগে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন : আর তোমরা তোমাদের দ্বীনের অনুসরণকারী ছাড়া অন্য কাউকে বিশ্বাস করবে না। বলুন (হে রাসূল!), আল্লাহর হিদায়াতই একমাত্র হিদায়াত। তোমরা যা পেয়েছিলে অন্য কেউ তেমন কেন পাবে অথবা তারা কেন তোমাদের প্রতিপালকের সামনে বিতর্কে তোমাদেরকে পরাজিত করবে? বলুন! নিশ্চয়ই যাবতীয় অনুগ্রহ আল্লাহরই হাতে। তিনি যাকে ইচ্ছা তা দান করেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যবান, মহাজ্ঞানী। (সূরা আলে ইমরান : ৭৩)।
তিনি আরও বলেন : যাদের কলবের মধ্যে ব্যাধি রয়েছে, আপনি দেখবেন, তারা অতি দ্রুত ইহুদি, খৃষ্টান ও মুশরিকদের সাথে মিলিত হবে। তারা বলবে : আমরা আমাদের উপর যে কোন রকমের বিপদ আপতিত হওয়ার আশংকা করি। অচিরেই আল্লাহ বিজয় দান করবেন কিংবা তাঁর নিজের পক্ষ থেকে এমন কিছু দেবেন যাতে তারা অন্তরে যা লুকিয়ে রেখেছিল সে জন্য লজ্জিত হবে। (সূরা মায়িদা : ৫২)।
মুসলিম নামধারী হয়েও যারা কুরআনের বিধান ও রসূলের আদর্শকে অপছন্দ করে নায়েবে রসূল ওলামায়ে কেরামদের সাথে শত্রুতা পোষণ করে, মাসজিদের ঈমামগণের জুমার খুতবা নিজেদের পছন্দমত নিয়ন্ত্রণ করে, কুরআন ও ছুন্নাহর সঠিক বয়ান করলে ঈমামগণকে হয়রানী, নির্যাতন ও চাকুরীচ্যুত করে- তাদের প্রতিষ্ঠিত বা পরিচালিত কোন মাসজিদে সালাত আদায় করা প্রকৃত মুমিনদের জন্য সমীচীন নয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন : যারা মাসজিদ তৈরি করেছে দ্বীন ইসলামের ক্ষতি করার জন্য, কুফরি করার জন্য, মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য এবং ইতিপূর্বে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যে ব্যক্তি যুদ্ধ করেছে তার ষড়যন্ত্রের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে আর তারা আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে, আমরা ভাল উদ্দেশ্য নিয়েই এ মসজিদ নির্মাণ করেছি আর আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, তারা অবশ্যই মিথ্যাবাদী; (সুতরাং হে রাসূল!)। আপনি সালাত আদায়ের উদ্দেশ্যে তাদের নির্মিত ঐ মসজিদে কখনই দাঁড়াবেন না, বরং প্রথম থেকেই যে মসজিদের ভিত্তি তাকওয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত সে মসজিদই আপনার সালাত আদায়ের জন্য অধিকতর যোগ্য। সে মসজিদে এমন লোক আছে যারা পবিত্রতা অর্জন করতে ভালবাসে। আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালবাসেন। (সূরা তওবা : ১০৭-১০৮)।
তিনি আরও বলেন : মুশরিকরা আল্লাহর ঘর মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে না যখন তারা নিজেরাই নিজেদের কুফরির সাক্ষ্য দান করে। তারা সেই সব লোক, যাদের সমস্ত আমল নিস্ফল হয়ে গেছে। তারা জাহান্নামে বসবাস করবে চিরস্থায়ীভাবে।
যারা আল্লাহর প্রতি ও আখিরাতের প্রতি ঈমান আনে, সালাত কায়িম করে এবং যাকাত আদায় করে তারাই মসজিদের রক্ষণাবেণ করবে। তারা আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না। কাজেই তাদের ব্যাপারে আশা করা যায় যে, তারা সৎপথে পরিচালিত লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (সূরা তওবা: ১৭-১৮)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।