মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রাশিয়া-ইউক্রেন সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতের পটভূমিতে অনেকেই নজর রাখছেন কৃষ্ণসাগরের দক্ষিণের দেশ তুরস্ক ও তাদের তৈরি করা ড্রোনের দিকে।
রাশিয়ার সাথে যেকোনো সময় যুদ্ধ বেধে যেতে পারে এ আশঙ্কায় ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিয়ে সম্ভাব্য লড়াইয়ের জন্য তৈরি করে তুলছে নানা দেশ। তার মধ্যে একটি হচ্ছে তুরস্ক। তুরস্কের তৈরি ডজন ডজন ড্রোন ইতোমধ্যেই ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে। আর শুধু তাই নয়, আংকারা আর কিয়েভের মধ্যে একটি নতুন চুক্তিও হয়েছে, যার ফলে ইউক্রেনের কারখানাতেই এখন তৈরি হবে তুরস্কের ডিজাইন করা ড্রোন। বিশ্বে যখন ড্রোন-যুদ্ধের গুরুত্ব ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে- তখন রাশিয়া-ইউক্রেন সম্ভাব্য সঙ্ঘাতও এর বাইরে থাকতে পারছে না। এই প্রেক্ষাপটে তুরস্কের এই 'ড্রোন শক্তি' সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি?
শুধু ইউক্রেন নয়, বস্তুত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নানা সংঘাতেই তুরস্কের তৈরি ড্রোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তুরস্ক এ ক্ষেত্রে কত বড় 'প্লেয়ার'?
তুরস্ক ন্যাটোর সদস্য দেশ, এবং পশ্চিমা দেশগুলোর এই সামরিক কোয়ালিশনের একমাত্র মুসলিম সদস্য হচ্ছে তুরস্ক। তুরস্কের সেনাবাহিনী হচ্ছে ন্যাটো জোটের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম- সংখ্যায় যার স্থান যুক্তরাষ্ট্রের পরই।
তার পরে তুরস্কের হাতে আছে তার ন্যাটো মিত্রদের মতোই সামরিক প্রযুক্তি।
তুরস্কে বসবাসরত স্বাধীন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক আরদা মেভলুতোগলু বলছেন, 'আংকারার সরকার গত ২০ বছরে একটা শক্তিশালী ড্রোন বাহিনী গড়ে তুলেছে।'
তিনি বলেন, 'তারা তুরস্কের ভেতরে এবং বাইরে, কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী পিকেকের বিরুদ্ধে ১৯৯০ দশকের মাঝামাঝি থেকেই- নিরাপত্তা কার্যক্রমে ড্রোন ব্যবহার করে আসছে।'
তিনি বলেন, 'দেশটির প্রতিরক্ষা শিল্পকে উন্নত করার জন্য ড্রোন প্রযুক্তিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে - উৎপাদন ক্ষমতা এবং কার্যক্রম পরিচালনা, উভয় দিক থেকেই । এ ক্ষেত্রে তুরস্ক এই অঞ্চলে এক নজিরবিহীন অবস্থানে আছে। ব্যতিক্রম শুধু ইসরাইল।'
তুরস্কের ড্রোন নির্মাতাদের সম্পর্কে আমরা কী জানি?
ইউএভি (আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকল) বা মনুষ্যবিহীন আকাশ যান যাকে চলতি কথায় বলা হচ্ছে ড্রোন- তুরস্কে তার প্রধান উৎপাদনকারী হচ্ছে দুটি।
বায়কার ডিফেন্স নামের প্রতিষ্ঠানটি তৈরি করে বায়রাক্টার টিবিটু এবং বায়রাক্টার আকিনচি নামে দুটি ড্রোন। এগুলোর ব্যাপক চাহিদা আছে।
অন্য আরেকটি বড় উৎপাদনকারী হচ্ছে টার্কিশ এ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ। এদের তৈরি ড্রোনের নাম টিএআই আংকা এবং টিএআই আকসুংগুর।
আরদা মেভুতোগলুর মতে, তুরস্কের সেনাবাহিনী এবং নিরাপত্তা এজেন্সিগুলো ১৫০টিরও বেশি এরকম ড্রোন ব্যবহার করছে। এ ছাড়াও তারা অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির পর্যবেক্ষণ এবং কামিকাজে ড্রোন ব্যবহার করছে।
ইউক্রেনের সাথে তুরস্কের সামরিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক কতটা?
তুরস্ক ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ইতোমধ্যেই ইউক্রেনের কাছে অনেকগুলো বায়রাক্টার টিবিটু অস্ত্রবাহী ড্রোন বিক্রি করেছে।
ইউক্রেনও চায় একদিন তুরস্কের মতোই ন্যাটোর সদস্য হতে। কিন্তু এখন তাদের একদিকে যেমন পূর্বাঞ্চলে রুশ-সমর্থিত বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের তৈরি হতে হচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এক সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য। কারণ রাশিয়া গত কয়েক মাস ধরে ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখেরও বেশি সৈন্য মোতায়েন করেছে এবং তারা ইউক্রেনে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ন্যাটো জোট আশঙ্কা করছে- যদি রাশিয়া এরকম কোনো পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে।
মেভলুতোগলু বলছেন, 'ড্রোন বিক্রি একদিকে যেমন সামরিক শিল্পের ক্ষেত্রে স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি করবে- তেমনি গ্রহীতা দেশগুলোতে ও তাদের আশপাশে তুরস্কের সামরিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাড়াতেও সুবিধা হবে।'
এ ক্ষেত্রে বাজার হিসেবে আফ্রিকার দিকে তুরস্ক নজর রাখছে। কারণ প্রেসিডেন্ট এরদোগান স্বচক্ষে এর চাহিদা দেখেছেন।
গত অক্টোবর মাসে এরদোগান এ্যাংগোলা, নাইজেরিয়া ও টোগো সফরে গিয়েছিলেন।
'আফ্রিকায় যেখানেই আমি গিয়েছি, সবাই আমাকে ইউএভি নিয়ে প্রশ্ন করেছে'- তখন বলেছিলেন এরদোগান।
সূত্র : বিবিসি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।