Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হিজাব বিতর্কে কর্নাটকে নিষিদ্ধ ‘আইন বিঘ্নকারী পোশাক’

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:১১ পিএম

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কর্নাটক রাজ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরা নিয়ে বিতর্কের জেরে রাজ্য সরকার ‘আইন বিঘ্নকারী’ সব পোশাক নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করেছে।

শনিবার এক সরকারি অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই আদেশ জারি করা হয়।

অধ্যাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘সমতা, অখণ্ডতা ও আইনকে বিঘ্নকারী’ যেকোনো পোশাককেই নিষিদ্ধ করা হয়।

এতে বলা হয়, ‘কর্নাটক এডুকেশন অ্যাক্ট-১৯৮৩-এর ১৩৩ (২) ধারা অনুসারে বাধ্যতামূলকভাবে যে কোনো একপ্রকার ইউনিফর্ম পরতে হবে। প্রাইভেট স্কুলের প্রশাসন তাদের পছন্দমতো ইউনিফর্ম বেছে নেবেন।’

এতে আরো বলা হয়, ‘যদি প্রশাসন কোনো ইউনিফর্ম ঠিক করে না দেয়, তবে এমন পোশাক পরা উচিত হবে না যা সমতা, অখণ্ডতা ও আইনশৃঙ্খলাকে বিঘ্ন করে।’

অধ্যাদেশে আরো বলা হয়, ‘শিক্ষা বিভাগ লক্ষ্য করেছে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেলে-মেয়েরা তাদের ধর্ম অনুসারে আচরণ শুরু করেছে, যা সমতা ও ঐক্যকে বিঘ্ন করে।’

কর্নাটকে সম্প্রতি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এই জেরে পুরো কর্নাটকেই মুসলিম শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন।

অপরদিকে মুসলিম শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের জেরে একদল হিন্দু শিক্ষার্থী গেরুয়া শাল পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস করতে যাচ্ছেন।

শনিবার কর্নাটকের উদুপি জেলার কুনদাপুরে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের হিন্দু শিক্ষার্থীদের তাদের ইউনিফর্মের উপরে গেরুয়া শাল জড়িয়ে ‘জয় শ্রি রাম’ স্লোগান দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দিকে যেতে দেখা যায়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরা নিয়ে বিতর্কের জেরে কর্নাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধীদল ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতা সিদ্দারামাইয়া ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকে (আরএসএস) সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর জন্য অভিযুক্ত করেন।

তিনি বলেন, ‘সংবিধানে যেকোনো ধর্মের অনুশীলনের সুযোগ দেয়া হয়েছে যার অর্থ ধর্মীয় বিধান অনুসারে যেকেউ যেকোনো পোশাক পরতে পারবে। হিজাব পরা ছাত্রীদের স্কুলে প্রবেশে বাধা তাদের মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন।’

অপরদিকে বিজেপির কর্নাটক রাজ্য প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট সদস্য নলিন কুমার কাতিল জানান, সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবের অনুমোদন করবে না এবং স্কুলের নির্দেশনা বাস্তবায়ন নিশ্চিতে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, ‘রাজ্যে বিজেপি সরকার রয়েছে, হিজাব বা এই সংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়েরই স্থান নেই। স্কুল মা সরস্বতীর মন্দির, সেখানের আইন ও নিয়ম সবারই পালন করতে হবে। ধর্মকে সেখানে নিয়ে যাওয়া সঠিক নয়, শিক্ষার্থীদের সেখানে প্রয়োজন শিক্ষা। যদি কেউ নিয়ম মানতে না পারে, তারা যেনো তাদের পথ দেখে।’

এর আগে চলতি বছর জানুয়ারিতে প্রথম উদুপির সরকারি পিউ গার্লস কলেজে প্রথম হিজাব পরে ছয় মুসলিম ছাত্রীকে ক্লাস করতে বাধা দেয়া হয়। পরে বুধবার নতুন করে কুনদাপুর সরকারি জুনিয়র কলেজে মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরে ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেয়ার মাধ্যমে কর্নাটকের দ্বিতীয় এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার কারণে বাধার ঘটনা ঘটে। পরে আরো বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরে মুসলিম ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়।

সূত্র : এনডিটিভি



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ