Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

নতুন আইএস প্রধান নিজেকে উড়িয়ে দিয়েছেন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

মার্কিন সেনা হামলার মুখে সপরিবারে নিজেকে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দিয়েছেন আইএস প্রধান আবু ইব্রাহিম আল-হাশেমি আল-কুরেশি। বৃহস্পতিবার এই দাবি করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর এক রাতভর অভিযানে ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠীর নেতা কুরেশি নিহত হয়েছেন।’
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, তুরস্ক সীমান্তের কাছে সিরিয়ার একটি শহরে একটি বাড়ির উপর উড়ছিল মার্কিন সামরিক হেলিকপ্টারগুলি। বাড়ির চারপাশের এলাকা মার্কিন সেনা ঘিরে রেখেছিল। অনেক দূরে হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে বসে অপারেশনের উপর নজর রাখছিলেন জো বাইডেন। ওই বাড়িতেই সপরিবারে ছিলেন আইএস প্রধান আল-কুরেশি। কিন্তু মার্কিন বাহিনী কিছু করার আগেই আল-কুরেশি একটি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ করেন। বাড়ির বেশ কিছুটা অংশ উড়ে যায়। আল-কুরেশি সহ মোট ১৩জন মারা যান। এর মধ্যে ছয়জন নারী ও চারজন শিশু।
তবে পেন্টাগনের মিডিয়া সচিব জন কিরবির দাবি, ‘আমেরিকার সেনাবাহিনী বুধবার মাঝরাতে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়েছিল। জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়দার বিরুদ্ধে মূলত এই অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানে আইএস প্রধান মারা গেছেন।’ ২০১৯ সালে সিরিয়াতে আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি মার্কিন হামলার মুখে এই কাজই করেছিলেন। জো বাইডেন বলেছেন, আল-কুরেশি কাপরুষোচিত কাজ করেছেন।
তবে শহরের বাসিন্দাদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছে। মার্কিন সেনা হেলিকপ্টারে করে চূড়ান্ত আঘাত হানার আগে বাসিন্দাদের চলে যেতে বলে। লাউডস্পিকার ব্যবহার করে বলা হয়, বাসিন্দারা যেন দ্রুত ঘর ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যান। এক নারী রয়টার্সকে বলেছেন, ‘ঘোষণা হচ্ছিল, মার্কিন জোট চারপাশের এলাকা ঘিরে রেখেছে। পুরুষ, নারী, বাচ্চারা হাত তুলুন। আপনারা নিরাপদ থাকবেন।’
জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি এই অপারেশনের খবর বাইডেনকে জানাচ্ছিলেন। তিনি বলেছেন, যে বিস্ফোরণ হয়েছে, তা আত্মঘাতী বিস্ফোরণের থেকে অনেক বেশি জোরালো। বাড়ির তিনতলা ভেঙে পড়েছে। আল-কুরেশি ও অন্যদের দেহ ছিটকে বাইরে এসে পড়েছে। ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, দুইতলায় মার্কিন বাহিনী যখন পৌঁছায়, তখন আল-কুরেশির এক সহযোগী ও তার স্ত্রী গুলি চালাতে থাকে। তারা মার্কিন সেনার গুলিতে মারা যায়। সেখানে একটি বাচ্চার লাশ মেলে।
মার্কিন সেনার টার্গেট ছিল তিনতলায় থাকা আল-কুরেশি। এই অপারেশন গত ডিসেম্বর থেকে পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। তখন আমেরিকা নিশ্চিত হয়ে যায়, ওখানে আল-কুরেশি আছেন। গত মঙ্গলবার বাইডেন এই অভিযানের সবুজ সংকেত দেন। ওভাল অফিসে প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন এবং জেনারেল ম্যাকেঞ্জি জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি অভিযানে সবুজ সংকেত দেন। অভিযান যখন চলছে, তখন বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে সর্বশেষ তথ্য জানাতে থাকেন অস্টিন ও ম্যাকেঞ্জি।
স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, মার্কিন সৈন্যরা অপ্রত্যাশিতভাবে শক্ত প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল এবং আমেরিকান হেলিকপ্টারগুলো সাঁজোয়া যান থেকে ছোঁড়া বিমান বিধ্বংসী অস্ত্রের মুখে পড়ে। হেলিকপ্টারগুলো স্থান ত্যাগের আগ পর্যন্ত দুঘণ্টা ধরে বন্দুকের গুলি ও গোলাবর্ষণের আওয়াজ শোনা গেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমস খবর দিচ্ছে যে, যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেবার পর একটি হেলিকপ্টার সেখানে ফেলে রেখে যায় মার্কিন সৈন্যরা। পরে সেটি মার্কিন বিমান হামলায় বিধ্বস্ত হয়। অনলাইনে ওই বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারের ছবি পোস্ট করা হয়।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলছেন অভিযানের সাথে যুক্ত সব আমেরিকান সৈন্য নিরাপদে ফেরত গেছে। তিনি ঘোষণা করেছেন, এই অভিযান ‘মার্কিন জনগণ এবং আমাদের মিত্রদের সুরক্ষা দেবে এবং পৃথিবী নিরাপদ বোধ করবে।’ ইসলামিক স্টেট প্রতিষ্ঠাতা আবুবকর আল-বাগদাদি নিহত হবার পর এটাকেই সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে সবচেয়ে বড় সাফল্য বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। সূত্র: রয়টার্স, এপি, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মার্কিন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ