মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, এই বাজেট গরিবের জন্য। আর বিরোধীরা বলছে, বাজেটে দেশের ১০ শতাংশ ধনীর স্বার্থ দেখা হয়েছে।
তার চতুর্থ বাজেট পেশ করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দাবি করেছেন, আর পঁচিশ বছর পর স্বাধীনতার একশ বছরে ভারতের চেহারা কী হবে, তা এই বাজেটে বলা হয়েছে। তার ব্যাখ্যা, ভারতের পরিচয় হবে গতি ও শক্তি। উচ্চাকাঙ্খী ও দূরদর্শী বাজেট করতে গিয়ে করোনাকালে বর্তমান সমস্যার দিকে কি দৃষ্টি দিতে পেরেছেন সীতারামন?
অন্যদিকে বিরোধীরা দাবি করছেন, বর্তমানে চাপে থাকা অর্থনীতির হাল ফেরাবার জন্য কোনো সুস্পষ্ট পদক্ষেপ সীতারামন নিতে পারেননি। কিছু চমক দিয়ে বাজেট তৈরি করেছেন। কিন্তু সেই চমকে বর্তমানের সমস্যা মিটবে না।
নির্মলা সীতারামন অবশ্য দাবি করেছেন, তার এই বাজেটের ফলে কৃষক, যুবক, শিক্ষার্থী, দলিত, আদিবাসী, গরিবরা বিশেষ করে উপকৃত হবেন। কাজের সুযোগ অনেকটাই বাড়বে। আর আগামী বছর আর্থিক বৃদ্ধির হার হবে নয় দশমিক দুই শতাংশ। কিন্তু বিরোধীদের দবি, এ নেহাতই কথার কথা। আসলে সেই বড়লোকেদের স্বার্থ দেখেছেন নির্মলা। গরিবদের জন্য কিছুই করেননি।
বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাগুলো হচ্ছে-
কৃষকদের কাছে ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যে ফসল কেনার জন্য দুই লাখ ৩৭ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে।
২০২২-২৩ সালে ৫জি চালু হবে।
কর্পোরেট কর ১৮ শতাংশ থেকে কমে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়া হবে।
ডিজিটাল মুদ্রা চালু হবে।
২০২২-২৩-এ ই পাসপোর্ট চালু করা হবে।
বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজেড) জন্য নতুন আইন।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কর্মীদের আয়কর ছাড়ের পরিমাণ ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৪ শতাংশ করা হলো। পেনশন প্রাপকদের করছাড়।
সাধারণ মানুষের জন্য আয়করে কোনো পরিবর্তন নয়।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৮০ লাখ পরিবারের জন্য বাড়ি।
৭৫ জেলায় ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং ইউনিট।
দেশে ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি।
মোবাইল ফোন, চার্জার সস্তা।
২৩ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হবে।
বাজেট পেশের পর রাহুল গান্ধী টুইট করে বলেছেন, মোদির বাজেটে চাকরিজীবী, মধ্যবিত্ত, গরিব, যুবক, কৃষক, ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য কিছুই নেই। একইরকম প্রতিক্রিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনিও বলেছেন, বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য কিছুই নেই। বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সরকার শুধু বড় বড় কথা বলেছে। এটা হলো পেগাসাস স্পিন বাজেট।
বিজেপি-র তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, বাজেটে কৃষকদের স্বার্থরক্ষা করা হয়েছে। তাদের ফসল কেনার জন্য প্রচুর বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সিপিএমের সাধাণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি টুইট করে বলেছেন, ২০২০-২১ সালে দুই হাজার ৪৭৮ কোটি রুপি ফসল কেনার জন্য রাখা ছিল। সেই তুলনায় বরাদ্দ এবার কমানো হয়েছে।
ইয়েচুরির প্রশ্ন, এই বাজেট কার জন্য করা হয়েছে? ১০ শতাংশ ধনী ভারতীয়ের জন্য, যারা ৭৫ শতাংশ দেশের সম্পদের অধিকারী। আর ৬০ শতাংশ মানুষের জন্য পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেছেন, বাজেটে একশ দিনের কাজের জন্য বরাদ্দ ৯৮ হাজার কোটি রুপি থেকে কমিয়ে ৭৩ হাজার কোটি রুপি করা হয়ছে।
বাজেট পেশের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সব ক্ষেত্র বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যাতে আধুনিকতা আসে তার চেষ্টা করা হয়েছে। যুবক, মধ্যবিত্ত, দলিত, গরিব সকলেই এর সুবিধা পাবেন। এই বাজেটের উদ্দেশ্য গরিবের কল্যাণ। পাইপের জল, বাড়ি, শৌচাগার, আধুনিক নেট সংযোগে জোর দেয়া হয়েছে।
হিমালয়ের মানুষদের জীবন যাতে সুগম হয় তার জন্য বিশেষ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রথমবার পর্বতমালা যোজনা শুরু হচ্ছে। গঙ্গাতীরে প্রাকৃতিক চাষকে উৎসাহ দেয়া হবে। গঙ্গাকে কেমিক্যাল মুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। মোদির দাবি, কৃষকদের আয় বাড়বে। এমএসপি-তে ফসল কেনা হবে। সেই রুপি সোজা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে।
এবারের বাজেটে গতবারের মতো বাংলাদেশের জন্য তিনশ কোটি রুপি বরাদ্দ করা আছে। আফগানিস্তানের জন্য বরাদ্দ করা আছে দুইশ কোটি রুপি। সূত্র: পিটিআই, এএনআই, এনডিটিভি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।