মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া এমন আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা মিত্র রাষ্ট্রগুলো৷ তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট মনে করছেন বাড়াবাড়ি রকমের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দেশগুলো, যা উলটো ইউক্রেনকেই ঠেলে দিচ্ছে অর্থনৈতিক সংকটে৷
ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার উপর অব্যাহত চাপ তৈরি করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত ইউরোপীয় দেশগুলো৷ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা, অর্থনৈতিক অবরোধের হুমকি, সেই সঙ্গে ইউক্রেনে হামলা করলে তার পাল্টা জবাব দেয়ার কথাও বলছে বাইডেন প্রশাসন৷ তবে রাশিয়া বরাবরের মতোই দাবি করে আসছে যুদ্ধের কোনো পরিকল্পনাই তাদের নেই৷ প্রথমবারের মতো রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিন নিজেও সেই আশ্বাস দিয়েছেন৷
তারপরও ওয়াশিংটনের কঠোর অবস্থানে সংকটে পড়ছে ইউক্রেন৷ সাবেক এই সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা গণমাধ্যম বাড়াবাড়ি রকমের ভীতি ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট৷ বাইডেন শুক্রবার পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সেনা পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘পূর্ব ইউরোপ ও ন্যাটো দেশগুলোতে সামনের দিনে সৈন্য পাঠাবো আমি৷ খুব বেশি নয়৷’’
চলতি সপ্তাহে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবিও এমন আভাস দেন৷ তিনি জানান, ন্যাটো বাহিনীকে সহায়তার জন্য সাড়ে আট হাজার সেনাকে ‘উচ্চ সতর্ক’ অবস্থায় রাখা হয়েছে৷ ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা চালালে যাতে প্রতিবেশী ন্যাটো দেশগুলো থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায় তার প্রস্তুতিই আগেভাগে সেরে নিতে চাইছে ওয়াশিংটন৷ এজন্য এই অঞ্চলে সৈন্য বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা গত সপ্তাহেও জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ বাইডেন বলেন, ‘‘আমরা প্রকৃতপক্ষে পোল্যান্ড, রোমানিয়া ইত্যাদি দেশে সৈন্য উপস্থিতি বাড়াতে যাচ্ছি, তারা ন্যাটোর সদস্য৷’’
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন দাবি করেছেন, ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া এমন পর্যায়ে সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে তাতে পুটিন চাইলেই দেশটিতে সামরিক অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন৷ পেন্টাগনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদিও বিশ্বাস করি যে প্রেসিডেন্ট পুটিন এখনও এই বাহিনীকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেননি, কিন্তু পরিস্কারভাবেই এখন সেই সক্ষমতা তার রয়েছে৷’’
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি অনুযায়ী, গত অক্টোবর থেকে রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তের আশেপাশে এবং প্রতিবেশী বেলারুশে এক লাখের বেশি সৈন্য ও সমর সরঞ্জাম জড়ো করেছে৷ ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যপদ দেয়া হবে না, যুক্তরাষ্ট্রসহ জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে এমন নিশ্চয়তা চায় রাশিয়া৷ তবে সাম্প্রতিক আলোচনায় এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন৷ এমন বাস্তবতায় রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো৷ তবে যুদ্ধের পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া৷
রুশ প্রেসিডেন্ট পুটিন এই বিষয়ে প্রথমবারের মতো দেয়া প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো এখনও রাশিয়ার নিরাপত্তা সংক্রান্ত মূল দাবির বিষয়টির কোনো সুরাহা দেয়নি৷ তবে এই বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে চান তিনি৷ ইউক্রেনে হামলার পরিকল্পনা নেই বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁকে ফোনালাপে তিনি জানিয়েছেন৷ ক্রেমলিনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, পুটিন মাক্রোঁকে বলেছেন, নতুন কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে তিনি এই সপ্তাহে পশ্চিমা দেশগুলো ও ন্যাটোর প্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখবেন৷
এদিকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি খারাপ হোক এমনটা চান না বলে পুটিন মাক্রোঁকে আশ্বস্ত করেছেন৷ রাশিয়া ইউক্রেনে অচিরে হামলা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র এমন আশঙ্কা প্রকাশ করলেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট তেমনটা মনে করেন না৷ বরং যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো অতিমাত্রায় ভীতি ছড়ানোর কারণে চার কোটি জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত ইউক্রেনের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন ভলোদিমির জেলেনস্কি।
বিদেশি গণমাধ্যমের জন্য আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেনের সড়কে কোনো ট্যাংক নেই৷ কিন্তু গণমাধ্যম এমন ধারণা দিচ্ছে যাতে ইউক্রেনের বাইরে থাকা মানুষের কাছে মনে হবে আমরা যুদ্ধাবস্থায় আছি, এখানে রাস্তায় সেনাবাহিনী আছে...৷ কিন্তু পরিস্থিতি তেমন নয়৷ এই আতঙ্কের প্রয়োজন নেই আমাদের৷''
খারাপ কিছু ঘটার আশঙ্কা উড়িয়ে না দিলেও বর্তমান পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ এমনটা মনে করেন না ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট৷ তিনি বলেন, হোয়াইট হাউস ব্যাপকভাবে যুদ্ধের আশঙ্কাকে সামনে এনে ‘ভুল’ করছে, যা তিনি এরইমধ্যে বাইডেনকে ফোনেও বলেছেন৷ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য দেশটি থেকে তাদের কূটনীতিকদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে৷ এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে জেলেনস্কি বলেন, ‘‘আমরা টাইটানিক নই৷ ইউক্রেন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷''
তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে তা যে শুধু ইউক্রেন নয় বরং গোটা অঞ্চলকেই বিপদে ফেলবে সেই বিষয়ে সতর্ক করেন তিনি৷ রাশিয়ার সঙ্গে নর্ড স্ট্রিম টু গ্যাস পাইপলাইন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা নিয়ে জার্মানির সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশটি ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার চেয়েও রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে৷ সূত্র: ডিপিএ, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।