Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধার খুবই জরুরি : জাতিসংঘ

‘রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচার না করায় মিয়ানমারের এই পরিণতি’

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

মিয়ানমারের জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়ন বন্ধ করে অবিলম্বে বেসামরিক শাসন পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। জান্তা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি জোরালো দাবি জানান সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট। এক বছর হতে চলছে অং সান সু চি’র সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা বসেছে সামরিক সরকার। সেই থেকে সামরিক বাহিনীর হাতে বন্দি আছেন সু চি। এ প্রসঙ্গে মিশেল বলেন, স্বাধীনতা হারানোর জন্য মিয়ানমারের জনগণকে ইতোমধ্যে চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের মানবাধিকার লংঘনের জন্য অপরাধীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। এখন এর সময়ও এসেছে। সেই সঙ্গে দেশটির গণতন্ত্র দ্রুত ফেরাতে বিশ্ব নেতাদের যথাযথ উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেন মিয়ানমারের বেসামরিক জনগণকে ত্যাগ না করে সেজন্য আহ্বান জানিয়েছেন তারা। এদের মধ্যে কিছু মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারের প্রধানের। জাতিসংঘের মানবাধিকারের হাইকমিশনার মিশেল আরও বলেন, আমি এই অঞ্চলের এবং এর বাইরের রাষ্ট্র প্রধানদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদেরকেও মিয়ানমারের বেসামরিক নাগরিকদের এই আবেদনটি শোনার অনুরোধ জানাচ্ছি। চলমান সমস্যা দ্রুত সমাধানের প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গত ১ ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর এ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর হাতে প্রাণ গেছে কমপক্ষে দেড় হাজার বেসামরিক মানুষের। বন্দির সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে ১১ হাজার। খবরে বলা হয়, চার বছর আগে রাখাইনে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো সেনাদের বিচার না করার কারণেই মিয়ানমারে আজ এমন সংকট তৈরি হয়েছে। এ ধরনের ঘটনায় দায়মুক্তি দিতে থাকলে দেশটিতে কোনোদিনই স্থিতিশীলতা আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। তিনি বলেন, মিয়ানমারে যতদিন দায়মুক্তি রয়েছে, ততদিন স্থিতিশীলতা শুধু কল্পকাহিনী হয়েই থাকবে। সামরিক বাহিনীর জবাবদিহিতা যেকোনো সমাধানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ এটি জোরালোভাবে দাবি করে আসছে। ব্যাচেলেট বলেন, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে প্রায় এক বছর হতে চললো। দেশটির মানুষ প্রাণ ও স্বাধীনতা হারানোর ক্ষেত্রে চরম মূল্য দিচ্ছে। মিয়ানমারের সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টায় ‘ঘাটতি’ রয়েছে এবং যেটুকু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা ‘অকার্যকর’ বলে কড়া সমালোচনা করেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান। দেশটিতে দ্রুত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও জনগণের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধে জান্তা সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে বিশ্বনেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান ও এর পরবর্তী সহিংসতার নিন্দা প্রায় সার্বজনীন হলেও এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গৃহীত পদক্ষেপ একেবারেই ‘অকার্যকর’। সংকটের মাত্রার সঙ্গে এর সামঞ্জস্য নেই। তিনি বলেন, মিয়ানমারে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জরুরি ভিত্তিতে নতুন প্রচেষ্টা এবং পদ্ধতিগত মানবাধিকার লংঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহার করা অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার সময় এসেছে। মিয়ানমার সংকটের সমাধান না হওয়ায় এদিন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও দক্ষিণপূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানেরও সমালোচনা করেন চিলির সাবেক এ প্রেসিডেন্ট। তার মতে, মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা চালুর জন্য জান্তা নেতাদের বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছে সংস্থা দুটি। ব্যাচেলেট জানান, তার সঙ্গে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থিদের কথা হয়েছে। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সঙ্গ না ছাড়ার অনুরোধ জানিয়েছে। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। কিন্তু তা মেনে নেয়নি দেশটির সাধারণ মানুষ। এপি, এএফপি, আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ