মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইরাকের ফেডারেল নির্বাচনে পরাজিতেরা ফল বদলের প্রয়াসে একের পর এক সহিংসতার আশ্রয় নিচ্ছে৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রথমবার প্রকৃত বিরোধী কণ্ঠস্বরের উত্থান ঘটছে ইরাকে৷
ফেডারেল নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পরে বেশ কয়েক মাস ধরে সহিংসতা চলছে ইরাকে৷ মার্কিন দূতাবাসগুলিতে একাধিক হামলার ঘটনাকে বাদ রাখলে সুন্নি মুসলিমদের একটি কার্যালয়ে এবং বাগদাদে ইরাকি কুর্দিশ রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে গত সপ্তাহে গ্রেনেড হামলা হয়েছে ৷
বাগদাদে দুটি কুর্দিশ ব্যাঙ্কে গ্রেনেড হামলা হয়েছে রোববারে৷ সোমবারে শিয়া মুসলিম এক ধর্মগুরুর বাড়িতে বন্দুক হামলা হয়েছে৷ জানুয়ারির শুরুতে দক্ষিণ পূর্বের মায়সান প্রদেশে শিয়া পার্লামেন্টারি গোষ্ঠীর এক প্রবীণ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে৷ একাধিক হামলার ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে গত অক্টোবরের সাধারণ নির্বাচনের ফলপ্রকাশ ঘিরে এসব হচ্ছে৷
পরাজিত হওয়ার পরও ক্ষমতার জন্য হামলা চালাচ্ছে দলগুলো৷ কেউ কোনো হামলার দায় স্বীকার না করলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরাজিত দলগুলি নির্বাচনের ফলকে অস্বীকার করতে চাইছে৷ পরবর্তী সরকার গঠনের সময় এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনার পারদ চড়ছে৷ সাধারণ নির্বাচনের পর প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা ঠিক করতে একাধিক দলের মধ্যে মাসের পর মাস দর কষাকষি চলছে৷
ইরাকের ফেডারেল নির্বাচনে জয়ী হয়েছে সাইরুন৷ শিয়া ধর্মীয় নেতা মুকতাদা আল-সাদরের রাজনৈতিক সহযোগী সাইরুন অন্যদের তুলনায় বেশি আসনে জিতেছে৷ যদিও নির্দিষ্ট কোনও দল নির্বাচনে জয়ী হয়নি৷ ৩২৯টির মধ্যে ৭৩টি আসন পেয়েছে তারা৷
অন্যদিকে ফাতাহ ও তার শরিকেরা পরাজিত হয়েছেন৷ এটি শিয়া মুসলিম দল হলেও ইরাকের আধাসামরিক বাহিনী পপুলার মবিলাইজেশন ফোর্সের (পিএমএফ) সঙ্গে যুক্ত৷ মাত্র ১৭টি আসন পেয়েছে ফাতাহ৷ যেখানে আগের বার ৪৮টি আসন পেয়েছিল এই দল৷ প্রথমদিকে পিএমএফ সাধারণের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেলেও পরে তা হারিয়ে ফেলে৷
নিজের দেশের বদলে ইরানের দিকে বেশি ঝুঁকেছিল পিএমএফের একাংশ৷ কারণ ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরান সবরকম সাহায্য করেছিল৷ কিন্তু নির্বাচনে দেখা গেল এই সব কারণে ফাতাহ ও তার শরিকদের সাধারণ মানুষ পছন্দ করেননি৷
কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরাক-রাজনীতি বিশেষজ্ঞ ফানার হাদাদ ডয়চে ভেলেকে জানান, এই গোষ্ঠীর মধ্যে রেষারেষি শিয়া-অধ্যুষিত, জাতিগত-সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক ব্যবস্থার অন্যতম আশঙ্কার কারণ৷ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আবেদন এবং 'আইডেন্টিটি পলিটিক্স'-এর মাধ্যমে আর ইরাকবাসীকে ভোলানো যাবে না৷ রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হচ্ছে৷ ,সাইরুনের সহযোগী আল সাদর বারবার বলেন, সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ইরানপন্থী পিএমএফের সঙ্গে যুক্ত শিয়া গোষ্ঠীর থেকে দূরে থাকবেন তারা৷ টুইটারে আল-সাদর লেখেন, একটি জাতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠিত হবে৷
পিএমএফ নেতাদের উপর আক্রমণ, পাশাপাশি সুন্নি এবং কুর্দি রাজনীতিবিদ, দল এবং ব্যাংক-এসবই, পরবর্তী সরকার থেকে ফাতাহের বাদ পড়ার সম্ভাবনা এবং ক্ষোভের ফলাফল বলে মনে করা হচ্ছে৷ সুন্নি মুসলিম রাজনীতিবিদকে চিঠিতে আল-সাদরের সঙ্গে সমঝোতা বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে৷ তার বাগদাদের অফিসে গ্রেনেড হামলা হয়েছে৷
একটি নতুন নির্বাচনী আইনের অর্থ এই যে প্রথমবার ইরাকের সংসদে একটি প্রকৃত, স্বাধীন বিরোধী দল থাকতে পারে৷ এখন প্রশ্ন হলো ইরান কোন দিকে যাবে? আরও সহিংসতা এবং সশস্ত্র শিয়া গোষ্ঠীর মধ্যে সম্ভাব্য গৃহযুদ্ধের দিকে, নাকি প্রকৃত গণতন্ত্রের দিকে?
রাজনীতি বিশেষজ্ঞ ফানার হাদাদের মত, রাজনৈতিক হিংসা অব্যাহত থাকবে৷ তবে গৃহযুদ্ধে নামার চেয়ে একটি চুক্তির সম্ভাবনা বেশি৷ পরবর্তী সরকার থেকে প্রধান হোতাদের বাদ দেওয়া খুব মুশকিল৷ তবে ব্যক্তিগত প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য অনেক কিছু হারাতে হতে পারে৷
হাদাদ ডয়চে ভেলেকে জানান, সাইরুন কুর্দি এবং সুন্নি দলগুলির সঙ্গে জোট করলে তাদের এমপিদের সংখ্যা কুর্দি এবং সুন্নি এমপিদের চেয়ে বেশি হবে৷ শিয়া অংশীদারদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত কি নেবে তারা? সূত্র: ডয়চে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।