পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
সম্পূর্ণ নিজেদের কারিগরি দক্ষতা দিয়ে হুরজেট নামে একটি হালকা যুদ্ধবিমান তৈরি করছে তুরস্ক। আগামী দুই মাসের মধ্যে সকলের সামনে উন্মোচন করা হবে এ বিমানটির অত্যাধুনিক সংস্করণটি। তুরস্কের যুদ্ধ বিমানটি বানিয়েছে টার্কিস অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ। বিমানটি প্রশিক্ষণ ও ছোট সামরিক মিশনে ব্যবহার করা যাবে। সোমবার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান তেমেল কোতিল জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের পর প্রতিমাসে দুটি করে হুরজেট যুদ্ধবিমান তৈরি করবেন তারা। ২০২৪ সাল থেকে বৃহৎ পরিসরে বিমানটি উৎপাদন করা হবে। এ ব্যপারে তেমেল কোতিল বলেন, প্রথম বছর আমরা বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনের অংশ হিসেবে বছরে ৬-৭টি বিমান তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছি। এরপরের বছর প্রতিমাসে দুইটি ও প্রতি বছর ২৪টি বিমান তৈরি করব। তিনি আরো বলেন, ২০২৫ সালের পর প্রতি মাসে হ্যাঙ্গার থেকে দুইটি হুরজেট বের হবে ও সেগুলো গ্রাহকদের কাছে পৌছে দেয়া হবে। রপ্তানি করার আগে নিজেদের চাহিদা মেটাবে তুরস্ক। হুরজেটের অত্যাধুনিক এই বিমানগুলো বর্তমানে তুরষ্কের বিমানবাহিনীতে থাকা টি-৩৮ প্রশিক্ষণ বিমানের জায়গায় ব্যবহার করা হবে। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বাইরের দেশগুলোতেও রপ্তানি করবে দেশটি। অপরদিকে, সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজেক হারজগ শিগগিরই তুরস্ক সফরে আসছেন বলে জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান এ কথা বলেন। খবর ডেইলি সাবাহর। তিনি বলেন, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটও চান তুরস্কের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং তুরস্কের সঙ্গে জ্বালানি নিয়ে বিষয়ে আলোচনার জন্যই ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আঙ্কারা সফরে আসছেন। খবরে বলা হয়, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান। ইসরাইল যুক্ত ভূমধ্যসাগরে এমন একটি বিতর্কিত গ্যাস পাইপলাইনে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন না দেয়ার কথা জানিয়ে দিয়েছে। এরপর মঙ্গলবার এরদোগান এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন সম্পর্ক জোড়া দেয়ার জন্য তিনি উন্মুক্ত। বার্তা সংস্থা এএফপিকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। তুরস্কের অর্থনীতির বর্তমান খুব খারাপ অবস্থা। মারাত্মকভাবে কমে গেছে স্থানীয় মুদ্রার মান। এমন অবস্থায় আঞ্চলিক বিরোধী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটি। তার প্রায় এক বছরের মাথায় ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন এরদোগান। ২০২০ সালে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার জন্য তুরস্কের একটি নৌযান যাচ্ছিল সহায়তা নিয়ে। কিন্তু তা ঘেরাও করে ইসরাইল। এ সময় তারা হত্যা করে ১০ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে। এরপর থেকে ইসরাইলের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক গভীর হিমশীতলতায় প্রবেশ করে। এরপর তুরস্কের ঐতিহাসিক প্রতিপক্ষ গ্রিসসহ কিছু দেশের একটি গ্রুপ ও ইসরাইল পূর্ব ভূমধ্যসাগরের গ্যাস ইউরোপ পর্যন্ত নেয়ার জন্য একটি যৌথ পাইপলাইন নির্মাণকাজ শুরু করে। এর কড়া বিরোধিতা করে তুরস্ক। এই অঞ্চলে জ্বালানি বিষয়ক সম্পদের ওপর নিজেদের অংশীদারিত্ব দাবি করে। ওদিকে ওই পাইপলাইন প্রকল্পে সমর্থন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের। কিন্তু ইসরাইল ও অন্য মিডিয়াগুলো রিপোর্ট করেছে যে, গত সপ্তাহে প্রাইভেটভাবে গ্রিসকে ওয়াশিংটন একটি বার্তা দিয়েছে। তা হলো, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের টিম এই পাইপলাইন প্রকল্প আর সমর্থন করে না। কারণ, এই প্রকল্প নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে আঞ্চলিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তুরস্ক সফরে গিয়েছিলেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্দার ভুসিচ। তার সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান বলেছেন, পাইপলাইন বিষয়ক ওই প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়টি বিবেচনা করেই যুক্তরাষ্ট্র এতে সমর্থন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমার মনে হয়। তিনি আরো বলেন, তুরস্ক হয়ে ইউরোপের ক্রেতাদের কাছে ভূমধ্যসাগরের গ্যাস পৌঁছে দেয়ার পুরনো ধারণা নিয়ে তিনি ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে চান। ডেইলি সাবাহ, আনাদোলু।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।